৮ বছরে কয়েক হাজার নারী পাচার করেছেন আজম

আন্তর্জাতিক নারী পাচার চক্রের গডফাদার আজম ও তার সহযোগীদের গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিট।

রবিবার (১২ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানান সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিট ডিআইজি ইমতিয়াজ আহমেদ।

গ্রেফতার মো. আজমের দুই সহযোগী হলেন, আলামিন হোসেন ওরফে ডায়মন্ড এবং ময়না। গ্রেফতার হওয়া আজম দীর্ঘ আট বছর ধরে দুবাইতে কম বয়সী নারীদের পাচার করে আসছিল বলে স্বীকার করেছে।

ডিআইজি ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, দুবাইতে ড্যান্স ক্লাবে, হোটেলে উচ্চ বেতনে কাজের প্রলোভন দেখিয়ে দেশ থেকে কমবয়সী নারীদের দুবাই পাচার করতো আজম। আজমের সহযোগী আলামিন হোসেন ওরফে ডায়মন্ডসহ আরো অনেকে তরুণীদের ড্যান্স প্রশিক্ষণ দিয়ে বাংলাদেশ থেকে বিদেশে মোটা অঙ্কের বেতনের চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখাতো। এজন্য তাদের অগ্রিম ১ মাসের বেতন ২০, ৩০ অথবা ৫০ হাজার দিতো তারা।

দুবাইতে ফরচুন পার্ল হোটেল অ্যান্ড ড্যান্স, হোটেল রয়েল ফরচুন, হোটেল ফরচুন গ্রান্ড ও হোটেল সিটি টাওয়ারের মালিকদের একজন আজম। এসব ক্লাব ও হোটেলগুলোতে কাজের নামে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশ থেকে কম বয়সী সুন্দরী তরুণীদের আনা হতো। এরপর তাদের বাধ্য করা হতো নানা অপকর্মে লিপ্ত হতে।

ডিআইজি ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, গডফাদার আজম গত ৮ বছর ধরে প্রায় সহস্রাধিক বাংলাদেশি তরুণীকে দুবাই পাচার করেছে। এই কাজে সহযোগিতা করার জন্য দেশে তার অর্ধশতাধিক সহযোগী দালাল রয়েছে। নারী পাচারের জন্য নির্দিষ্ট কিছু এজেন্সি আছে এবং একটি বিশেষ এয়ারলায়েন্সের মাধ্যমে সে নারী পাচার করতো। দুবাইতে যদি কোনো নারী তাদের কথামতো কাজ করতে রাজি না হতো তবে তাকে টর্চার করা হতো, ইলেক্ট্রিক শক দেয়া হতো। এছাড়াও প্রচুর মারধর করা হতো। নারীদের নির্যাতন করা হচ্ছে এমন অনেক ভয়েস রেকর্ড আমরা তার মোবাইল ফোন থেকে পেয়েছি।

এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুবাই সরকার আমাদের অ্যাম্বাসিকে জানালে চক্রের গডফাদার আজমের পাসপোর্ট জব্দ করে তাকে দেশে ফেরত পাঠায় কর্তৃপক্ষ।

তিনি বলেন, এই বিষয়ে দুবাই পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছিল। ১ মাস সে জেলে ছিল। সেখানে তার পাসপোর্ট জব্দ করা হয়েছে। এরপর তাকে দুবাই থেকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়। দেশে আসার পর আজম আত্মগোপনে যায়। বারবার নিজের অবস্থান পরিবর্তন করে। নতুন পাসপোর্ট করে সে সীমান্ত দিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশে পালানোর চেষ্টা করে। তবে তার আগে তার দুই সহযোগীসহ সিআইডির চৌকস দল তাকে আটক করে।

জিজ্ঞাসাবাদে গডফাদার আজম স্বীকার করেছে যে, গত আট বছরে সে সহস্রাধিক বাংলাদেশি তরুণীকে দুবাই পাচার করেছে। গডফাদার আজমের বিরুদ্ধে দেশে ১৫টি মামলা রয়েছে, যার মধ্যে ৬টি হত্যা মামলা।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //