এক্সিম ব্যাংকের মামলার পর উল্টো অভিযোগ ন্যাশনাল ব্যাংকের

এক্সিম ব্যাংকের দুই কর্মকর্তাকে সিকদার গ্রুপের দুই পরিচালকের নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে ব্যাখ্যা দিয়েছে সিকদার গ্রুপের মালিকানাধীন ন্যাশনাল ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

তবে সিকদার গ্রুপ নিজে কোনো ব্যাখ্যা প্রদান করেনি।

ন্যাশনাল ব্যাংকের পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী আব্দুল বাছেত মজুমদার গতকাল বুধবার (২৭ মে) এক বিবৃতিতে জানান, ন্যাশনাল ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশে এক্সিম ব্যাংক কর্তৃক ঋণ আবেদন ও ১৯ মে গুলশান থানার মামলা পর্যালোচনা করে জানাচ্ছি যে এক্সিম ব্যাংকের জনৈক পরিচালক ব্যবসা প্রসারের জন্য ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রকারের ঋণ–সুবিধা গ্রহণ করেন। জনৈক পরিচালক তার কন্যার নামেও ঋণ–সুবিধা গ্রহণ করেন, তিনি বেনামে ঋণ–সুবিধা গ্রহণের জন্য প্রস্তাব পাঠান। গুলশান থানায় করা মামলার বাদী নিজেও ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে ঋণ–সুবিধা নিয়েছেন। এসব ঋণের উপযুক্ত জামানত নেই। এরপরও বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে জনৈক পরিচালক ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ১৩ মে ৫ কোটি টাকা ঋণ–সুবিধা গ্রহণ করেন।

ন্যাশনাল ব্যাংকের প্যাডে বাসেত মজুমদারের পাঠানো বক্তব্যে বলা হয়, ৭ মে দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ঘটনার বিবরণ দেখিয়ে সিরাজুল ইসলাম মামলা করেন। মামলায় এক্সিম ব্যাংক থেকে ৫০০ কোটি টাকা ঋণ নেয়ার অভিযোগ করা হয়। অথচ রন হক সিকদার এ ধরনের কোনো ঋণের আবেদন করেননি। মামলার বাদী তা কোনোভাবে দেখাতেও পারবেন না। এছাড়া রন হক সিকদার ও ন্যাশনাল ব্যাংকর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ৭ মে এক্সিম ব্যাংকের গুলশান অ্যাভিনিউ শাখায় যাননি, কোনো ঋণ প্রস্তাব নেই এবং ব্যাংকটির এমডি ও অতিরিক্ত এমডির সাথে দেখা করেননি। 

এতে আরো বলা হয়েছে, সে ক্ষেত্রে ঋণ ও ঋণের জামানত–সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে দর–কষাকষির সুযোগ আসতে পারে না। আর মামলার বাদী এই ঘটনার সাক্ষীও নন। তিনি এক্সিম ব্যাংকের এমডি ও অতিরিক্ত এমডির সাথে আলোচনা না করে শুধু নির্বাহীদের সাথে কথা বলে ঘটনার ১২ দিন পর উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা করেন। এ মামলা ন্যায়বিচারের পরিপন্থী ও সামাজিকভাবে হেয় করার জন্য করা হয়েছে।

ব্যাখ্যায় আরো বলা হয়, ন্যাশনাল ব্যাংক ও তার পরিচালনা পর্ষদ স্বাধীনতার পর থেকেই দেশে সুনামের সাথে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। ভিত্তিহীন ও বানোয়াট তার মক্কেলদের হেয়প্রতিপন্ন করার অপচেষ্টা ছাড়া আর কিছুই না। তার মক্কেলদের দৃঢ় বিশ্বাস, মামলার নিরপেক্ষ তদন্ত হবে এবং প্রকৃত দোষী এক্সিম ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ও বাদীকে আইনের ও ন্যায় বিচারের সম্মুখীন হতে হবে।

সিকদার গ্রুপের মালিক জয়নুল হক সিকদারের ছেলে এবং গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রন হক সিকদার ও তার ভাই দিপু হক সিকদারের বিরুদ্ধে গত ১৯ মে গুলশান থানায় মামলা করেন এক্সিম ব্যাংকের পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল সিরাজুল ইসলাম।

এতে দুই ভাইর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে, তারা এক্সিম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ হায়দার আলী মিয়া ও অতিরিক্ত এমডি মোহাম্মদ ফিরোজ হোসেনকে অপহরণ করে হত্যার হুমকি দিয়েছেন, গুলি ছুড়েছেন।

সিকদার গ্রুপের প্রস্তাবিত ঋণের বন্ধকী সম্পত্তির দাম কম হওয়ার কথা বলায় ক্ষুব্ধ হয়ে রন ও দিপু অস্ত্রের মুখে গত ৭ মে পূর্বাচল থেকে বনানীতে সিকদার গ্রুপের অফিসে হায়দার ও ফিরোজকে তুলে নিয়ে সাদা কাগজে সই নিয়ে তারপর ছেড়েছিলেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।

এদিকে মামলার বাদী ও এক্সিম ব্যাংকের পরিচালক সিরাজুল ইসলাম গতকাল সন্ধ্যায় বলেছেন, যা ঘটেছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে এই মামলা করা হয়েছে। আমরা ব্যাংকের এমডি ও অতিরিক্ত এমডিকে নিরাপত্তা দিতে না পারলে কীভাবে চলবে। তদন্ত শুরু হয়েছে। আশা করছি, সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ বিচার হবে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //