দীপিকাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে: কঙ্গনা

নায়িকাদের ‘চুলোচুলি’ বলিউডে একেবারেই নতুন নয়। ইদানীং সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে আরো বাড়ছে ব্যাপারটা।

সেই বিতর্কে নতুন করে নাম লেখালেন বর্তমান প্রজন্মের দুই অতিচেনা নাম- দীপিকা পাড়ুকোন ও কঙ্গনা রানাওয়াত। কঙ্গনার সাফ কথা, দীপিকাকে ক্ষমা চাইতে হবে প্রকাশ্যে।

সুইৎজারল্যান্ডের দাভোসে ‘ওয়র্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম’এ গতকাল মঙ্গলবার ‘ক্রিস্টাল অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছেন দীপিকা। বেশ কয়েক বছর ধরে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতনতা নিয়ে কাজ করার সুবাদে তিনি এই পুরস্কার পান। 

তবে দীপিকার আনন্দ কিছুটা ভাটা ফেলেছেন তারই সতীর্থ কঙ্গনা। একটি সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে দীপিকার কঠোর সমালোচনা করেছেন তিনি।

দীপিকা পাড়ুকোন

অ্যাসিড আক্রান্তদের নিয়ে ছবি ‘ছাপাক’-এর প্রচারে দীপিকা সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ সক্রিয়। দিন কয়েক আগে দিল্লিতে দিনভর স্টিং অপারেশন করেছেন। পরিচয়পত্র ছাড়া মনিহারি দোকানে অ্যাসিড কিনতে পারা যায় কি না, তা দেখতে। হালে দীপিকা আর একটি প্রোমোশনাল ভিডিও করেছেন। সেটি দেয়া হয়েছে ‘টিক টক’ প্ল্যাটর্ফমে। 

ছাপাকে মূল চরিত্র দীপিকা। পর্দায় তিনি মালতী, এক অ্যাসিড আক্রান্ত। অর্থাৎ ডি-গ্ল্যাম লুক, এক অ্যাসিড আক্রান্তের মুখ যেমন হতে পারে, তেমন। ‘টিক টক’ ভিডিওতে দীপিকা এক মেকআপ আর্টিস্টকে চ্যালেঞ্জ করেছেন মালতীর লুক ‘রিক্রিয়েট’ করতে। অর্থাৎ ভিডিওতে দেখাতে হবে কীভাবে এক অ্যাসিড আক্রান্তের মুখ সাজানো যায়। 

আর এই ভিডিও নিয়েই সরব হয়েছেন কঙ্গনা। বারণ কঙ্গনার বোন রাঙ্গোলি একজন অ্যাসিড আক্রান্ত। আর সেই প্রসঙ্গ টেনে কঙ্গনা কড়া ভাষায় বলেছেন, আমার বোনের মতো যারা অ্যাসিড আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত। বিষয়টা কোনো মেকআপ লুকের ব্যাপার নয়। এটা তৈরি করার কৃতিত্বও নেই। এমন নির্বোধের মতো মন্তব্য করলে ক্ষমা চাওয়াই উচিত। আমরা সকলেই ভুল করি। ভুল করে ক্ষমা চেয়ে নেয়ায় কোনো ক্ষতি নেই।

কঙ্গনা রানাওয়াত

কঙ্গনায় আরো বলেন, প্রচারের জন্য মাঝেমাঝে মার্কেটিং টিম অত্যন্ত বাড়াবাড়ি করে ফেলে। কিন্তু রাঙ্গোলি এই ভিডিও দেখে খুবই আঘাত পেয়েছে। কেন এটা করা হল, দীপিকার কাছে নিশ্চয়ই তার কৈফিয়ত আছে বলে আমি মনে করি।

দিল্লিতে ছবির প্রচারের ফাঁকে দীপিকা গিয়েছিলেন জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ) ক্যাম্পাসে। আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। কঙ্গনার সমালোচনায় উঠে এসেছে সেই প্রসঙ্গও। তিনি বলেন, আমি মনে করি নারী হিসেবে নারীদের পাশে দাঁড়ানো দরকার। দীপিকা কী করেছে, আর ওর কী করা উচিত ছিল, তা নিয়ে মন্তব্য করার আমি কেউ নই। নিজের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করেছে দীপিকা। ব্যাপারটা যদি আমার সঙ্গে হতো, তাহলে আমি ওই ছোট ছোট দলের পাশে দাঁড়াতাম না।

টিনসেল টাউনে কঙ্গনা ঠোঁটকাটা বলেই পরিচিত। রাখঢাক না করেই কথা বলেন। এর আগে বলিউড ইন্ডাস্ট্রির স্বজন-পোষণ নিয়ে সরব হয়েছিলেন। এবার তার আক্রমণের তীর দীপিকার দিকে। তবে কঙ্গনা একা নন। যার প্রসঙ্গ তুলে কঙ্গনা তুলোধোনা করেছেন, সেই রাঙ্গোলিও এক সময় সমালোচনা করেছেন দীপিকার। 

‘লিভ লাভ লাফ ফাউন্ডেশন’ নামের একটি সংস্থার নেতৃত্বে রয়েছেন দীপিকা। মানসিক অবসাদ, হতাশার শিকার যারা, তাদের ফের স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে সাহায্য করে এই সংস্থা। বছর দেড়েক আগে রাঙ্গোলি টুইট করে এই সংস্থাকে একহাত নিয়েছিলেন। 

তিনি টুইটে বলেছিলেন, হতাশা কাটানোর নাম করে বিয়েবাড়ির মতো নাচগান হচ্ছে। সবই প্রচারের কৌশল ও বিরক্তিকর।

তবে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে দীপিকা পুরস্কৃত হয়েছেন ‘লিভ লাভ লাফ ফাউন্ডেশন’ সংস্থার কাজের সুবাদেই। তিনি বলেছেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে হতাশা কাটিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছি। অবসাদ নিয়ে এখনো সবাই সচেতন নন। অবসাদ জীবনে কতটা ক্ষত রেখে যায়, জানি। আর সেটা অনুভব করি বলেই এই সংস্থার মাধ্যমে অন্যের পাশে দাঁড়াতে চাই।

দীপিকার অনুরাগীরা তাই মনে করছেন আন্তর্জাতিক মঞ্চে এই পুরস্কার প্রাপ্তি একটা ‘পোয়েটিক জাস্টিস’। কঙ্গনা আর রঙ্গোলির সমালোচনার জবাব। 

আবার নেটিজেনদের একাংশ আবার কঙ্গনার পক্ষে। তাদের মত, ছাপাকের প্রচার ভিডিও আসলে দীপিকার ভুল পদক্ষেপ। তারা প্রকাশ্যেই সমালোচনা করছেন দীপিকার। -এই সময়


সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //