‘মানুষ যদি বেইমানি করে আমি কী করবো’

ইন্টারনেটে সাড়া জাগানো ভারতীয় মিউজিক ভিডিও ‘গেন্দা ফুল’ বাদশা-পায়েল দেব এবং জ্যাকুলিন ফার্নান্দেজের নাচে আলোচনায় এলেও এর মূল গায়ক ও রচয়িতা রতন কাহার। তিনি পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমে থাকেন। 

মিউজিক ভিডিও’র বিবরণীতে গীতিকার রতন কাহারের নাম উল্লেখ না করায় বিতর্ক তোলা হয়েছে। এমনকি গানটির রিমেকের কথা তাকে জানানো হয়নি।

এক সাক্ষাৎকারে জি নিউজকে গীতিকার বলেন, “যদি মানুষ এভাবে বেইমানি করে আমি কী করবো বলুনতো? আমি অত্যন্ত গরিব মানুষ। অনেকেই আমাকে ব্যবহার করেছে। অথচ আমার নাম দেয়নি। অনেকেই আমার কাছ থেকে গান নিয়ে গিয়েছে, নিজের নামে চালিয়েছে। তাদের লেখার ক্ষমতা নেই। আমার গান নিজের নামে চালিয়েছে।”

তিনি আরো বলেন, “আমি অসহায়। আমি মাটির ঘরে থাকা, মাটির গান লেখা মানুষ। কিছু বুদ্ধিজীবী মানুষ তারা অনেক কথাই বলে, আশ্বাস দেয়। কিন্তু আমাদের মতো শিল্পীকে মূল্য দেয় না। আমার এটা নিয়ে প্রতিবাদ করার মতো আর্থিক সামর্থ্য নেই।”

‘বড়লোকের বিটি লো’ গানটি লেখা ও গীত হওয়া প্রসঙ্গে বলেন, “যতদূর মনে পড়ে ১৯৭২ সালে লিখেছিলাম। গানটা আমি প্রসারভারতীতে প্রথম গেয়েছিলাম। পরে ‘আনন’ গোষ্ঠীর রাজকুমার সাহাকে দিয়েছিলাম। ওনারা কোরাস গাইতেন। সেখান থেকেই গানটা ছড়িয়ে পড়ে। স্বপ্না চক্রবর্তী লিখে নিয়েছিলো আমার খাতা থেকে। পরে ১৯৭৬ সালে রেকর্ড করেন। কিন্তু সেখানেও গানটি আমার লেখা ও সুর বলে কোনোভাবে স্বীকার করা হয়নি। তবে রেকর্ড হওয়ার বহু আগেই আমি আকাশবাণীতে গানটি গেয়েছিলাম।”

গানটির রেকর্ডে তার নাম থাকা না নিয়ে কেন প্রতিবাদ করেননি সে প্রসঙ্গে রতন কাহার বলেন, “বহুবার বলেছি। কিন্তু আইনি লড়াই লড়ার মতো আর্থিক সামর্থ্য আমার নেই। কেউই মূল্য দেয়নি। কলকাতায় এমন অনেকেই আছেন যারা আমার থেকে গান নিয়েছেন। শিলাজিৎও আমার কাছ থেকে গান নিয়েছেন। পূর্ণচন্দ্রদাস বাউলও আমার গান গেয়েছেন। তবে অনেকেই ঠকিয়েছেন। তবে আমার লড়ার ক্ষমতা নেই। তবে কেউ স্বীকৃতি না দিক মানুষ আমাকে স্বীকৃতি দিয়েছে।”

আর্থিক অনটনে দিন কাটানো এই গীতিকবি বলেন, “বিড়ি বেঁধে সংসার চলতো। গান গেয়ে বিশেষ কিছুই করতে পারিনি। তবে এখন আর কিছু করি না। আমার দুই ছেলে আর এক মেয়ে রয়েছে।”

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //