গণস্বাস্থ্যের ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি অব্যাহত

মেডিকেল অফিসার নিয়োগ, বেতন, নিরাপত্তা, সাব-সেন্টারগুলোতে আটকে পড়া শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের ফেরত আনাসহ বিভিন্ন দাবিতে কর্মবিরতি অব্যাহত রেখেছে গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। তবে কর্মবিরতির তৃতীয় দিনে হাসপাতালের পরিচালকের সাথে তাদের দাবি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। 

বুধবার (১৭ জুন) সাংবাদিকদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন আন্দোলনরত ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।

তারা জানান, আমাদের দাবি নিয়ে পরিচালকের সাথে ফলপ্রসু আলোচনা হয়েছে। আগামীকাল সকালে মেডিকেল কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সাথে পুনরায় আলোচনা হবে। আশা করছি, সবকিছু সমাধান হবে এবং আমরা কর্মস্থলে ফিরতে পারবো। তবে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চলমান থাকবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যেই মেডিকেল অফিসার (এমও) এবং জুনিয়র মেডিকেল অফিসার (জেএমও) নিয়োগের ভাইবা সম্পন্ন করেছে। খুব দ্রুত সময়ের মাঝেই নিয়োগকৃতরা কর্মক্ষেত্রে যোগদান করবেন। এমনটি হলে কর্মবিরতি স্থগিত করে কর্মস্থলে যোগদান করবেন বলে জানিয়েছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। 

বাংলাদেশ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ইন্টার্নি ডাক্তার (শৃঙ্খলা ও আচরণ) বিধিমালা ১৯৯৮, আইন অনুযায়ী ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কর্মবিরতিতে যাওয়ার ক্ষমতা রাখেন না। এক্ষেত্রে ডিসিপ্লিনারি কমিটি চাইলে তাদের ইন্টার্নশিপ বাতিল করতে পারেন।

এ বিষয়ে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা বলেন, এমন অনেক নিয়মই আছে, যেগুলো কর্তৃপক্ষ মানেন না। তারা হাইকোর্ট (আইন) দেখাতে পারলে, আমরাও পারবো। 

কর্মবিরতিতে যাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে কি না, জানতে চাইলে হাসপাতালের পরিচালক ডা. মিজানুর রহমান বলেন, আমরা এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি। তারা যদি দ্রুত স্বেচ্ছায় ফিরে না আসে, তাহলে কর্তৃপক্ষ মিটিং ডেকে পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণ করবেন।

ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সার্বিক দাবি সংক্রান্ত বিষয়ে জানতে কলেজের অধ্যক্ষ ডা. ফরিদা আদিব খানমের সাথে যোগাযোগ করা হয়। ফোনে তিনি এ বিষয়ে কথা বলবেন না বলে লাইন কেটে দেন।

সূত্রমতে, মোট ৩৪ জন শিক্ষানবিশ চিকিৎসকের মধ্যে জরুরি বিভাগের ৭ জন বাদে বাকি ২৭ জনই কর্মবিরতিতে আছেন। এতে সাভার, ধামরাইসহ আশেপাশের এলাকার রোগীরা ভোগান্তিতে পড়েছেন। বিশেষভাবে, চিকিৎসক স্বল্পতার কারণে হাসপাতালে অস্থায়ীভাবে স্থাপিত ফ্লু কর্ণারে করোনা উপসর্গ নিয়ে আগত রোগীরা কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন না।

প্রসঙ্গত, গত ১৪ মে দাবি আদায়ে কলেজের অধ্যক্ষ ডা. ফরিদা আদিব খানম বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। কিন্তু একমাস হয়ে গেলেও এ ব্যাপারে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় গত ১৫ মে হাসপাতালের পরিচালকের সাথে যোগাযোগ করেন তারা। কিন্তু পরিচালক মুঠোফোনে তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করেছেন অভিযোগ করে তাঁরা কর্মবিরতির ঘোষণা দেন। যদিও হাসপাতাল পরিচালক দাবি করেছেন, ইন্টার্ন ডাক্তাররা আগে খারাপ আচরণ করেছেন।

এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (চিকিৎসা শিক্ষা অনুবিভাগ) মো. শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ঘটনার বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি। ঘটনা সম্পর্কে জেনে মেডিকেল এডুকেশনের (স্বাস্থ্য শিক্ষা) সাথে কথা বলবেন বলে জানান তিনি।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //