একটি সেতুতে ভাগ্য পাল্টাতে পারে ১০ হাজার মানুষের

একটি সেতুর অভাবে নাটোরের সিংড়া উপজেলার প্রায় ১০ হাজার মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। 

প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হচ্ছে স্কুল, কলেজের দেড় শতাধিক শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ। 

সিংড়া সদর থেকে ৯ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে ৭ নম্বর লালোর ইউনিয়নের গুপেন্দ্রনাথ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন সোনাইডাঙা নদীতে সেতু নির্মাণের জন্য দীর্ঘদিন দাবি জানিয়ে আসছে এ অঞ্চলের মানুষের। 

সেতুটি নির্মিত হলে একদিকে যেমন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে তেমনি পাল্টে যাবে চলনবিলের কৃষকদের ভাগ্য, বাড়বে ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার। 

সরেজমিনে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকোর ওপর দিয়ে চলাচল করছে। এসময় অমল কুমার সরকার, উৎপল, ববি খাতুন, অনিকসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী তাদের দুঃখ-দুর্দশার কথা জানায়। অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এই সাঁকো দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে প্রায়ই তাদের বই-খাতা ও কলম পানিতে পড়ে নষ্ট হযে যায় ও অনেকেই দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে।  

সোনাইডাঙা নদীর বাঁধে প্রায় তিন শতাধিক সংখ্যালঘু পরিবারের বসবাস। দুর্গম এলাকা হওয়ায় ভোটের সময় শুধু প্রতিশ্রুতিই জোটে তাদের ভাগ্যে। তখন স্বপ্ন দেখা শুরু করে পরিবারগুলো। এরপর আর কেউ তাদের খোঁজ রাখে না। শিক্ষার্থীদের নদী পারাপারে যেন দুর্ভোগের অন্ত নেই। কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রয় ও হাটে বাজারে আনতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। 

পরবর্তীতে ২০১৯ সালে এই অঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে সিংড়া উপজেলা পরিষদ থেকে একটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে দেন স্থানীয় উপজেলা চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম। কিন্তু বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় সেই বাঁশের সাঁকোটিও নড়বড় হয়ে গেছে। এখন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভাঙা সাঁকো দিয়ে নদী পার হতে হচ্ছে শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষকে। 

এলাকাবাসী আরো জানান, চলনবিলের সোনাইডাঙা, গুপেন্দ্রনগর, হাপুনিয়া, হামিরঘোষ, কান্দিপাড়া, সিধাখালী, শেরকোল, বাড়ইহাটিসহ প্রায় ১০ গ্রামের ১০ হাজার মানুষ এই সেতু দিয়ে স্কুল, কলেজ ও সিংড়া বাজারে যাতায়াত করেন। সেতুটি না হওয়ায় কৃষকরা তাদের ফসলের নায্যমূল্য পাচ্ছেন না। তাছাড়া স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছেলে-মেয়ে ও অসুস্থদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে এলাকাবাসীর দাবি অচিরেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এদিকে নজর দেবে।

সোনাইডাঙা শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা শিল্পী রাণী বলেন, বাঁশের সাঁকোটি বছরের ছয়মাস পানিতে ডুবে থাকে আর ছয়মাস ডাঙায়। অনেকেই ভয়ে স্কুলে আসতে চায় না। 

গুপেন্দ্রনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আব্দুস সালাম বলেন, প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী এই সাঁকো পার হয়ে বিভিন্ন স্কুল ও কলেজে যায়। তাদের শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রতিনিয়তই দুঃচিন্তায় থাকতে হচ্ছে। অচিরেই একটি সেতু নির্মাণ করে শিক্ষার্থীদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান তিনি।

সিংড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বলেন, ২০১৯ সালে জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে সোনাইডাঙা নদীতে উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে একটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণ ও একটি নৌকা দেয়া হয়েছে। এই নদীতে একটি সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //