লকডাউনের মধ্যেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২০ সংঘর্ষ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যেই গত এক মাসে কমপক্ষে ২০টি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসব সংঘর্ষে শিশুসহ সাতজন নিহত ও অন্তত পাঁচ শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন।

নিহতরা হলেন- আশুগঞ্জ উপজেলার মো. জাহাঙ্গীর আলম (৫১), নাসিরনগর উপজেলার কদমতলী গ্রামের মোস্তফা কামাল ওরফে মস্তু মিয়া (৬০), কসবায় উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের মো. তানভীর (২২), নবীনগর উপজেলার থানাকান্দি গ্রামের মো. মোবারক মিয়া (৩৭), কসবা উপজেলার শাহপুর গ্রামের মো. ফারুক মিয়া চৌধুরী (৫৩), নাসিরনগর উপজেলার চাতলপাড় ইউনিয়নের বড়নগর গ্রামের রজব আলী (২০) এবং বরিশালের বাকেরগঞ্জের শ্যামপুর গ্রামের রাজু মিয়ার আড়াই মাস বয়সী শিশু কন্যা ফারিয়া। প্রবাসী রাজু মিয়ার স্ত্রী নাইমা তার বাবার বাড়ি নাসিরনগর উপজেলার গোকর্ণ ইউনিয়নের গোকর্ণ গ্রামে বসবাস করতেন।

এছাড়া সংঘর্ষ চলাকালে বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনাও ঘটে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, জমি নিয়ে বিরোধ, বাড়ির সীমানা নিয়ে বিরোধ, রাস্তা নিয়ে বিরোধ, পুকুরে মাছ ধরা, ধানের উপর দিয়ে ট্রাক্টর যাওয়া, এক বাড়ির হাঁস আরেক বাড়িতে যাওয়া, কথা কাটাকাটিসহ বিভিন্ন তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এসব সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়।

সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিপেটার পাশাপাশি টিয়ার শেল, রাবার বুলেটও ছুড়তে বাধ্য হয় পুলিশ। সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে আহত হন বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য। সংঘর্ষের এসব ঘটনায় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ অর্ধশতাধিক মানুষ গ্রেফতারও হয়েছেন।

এসব সংঘর্ষের মধ্যে দেশব্যাপী আলোচিত ছিল গত ১২ এপ্রিল সংঘর্ষের ঘটনা। ওইদিন নবীনগর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের থানাকান্দি গ্রামে পূর্ববিরোধকে কেন্দ্র করে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান ও আওয়ামী লীগ নেতা আবু কাউছার মোল্লার সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ৩৫ জন আহত হন। সংঘর্ষ চলাকালে চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমানের সমর্থক মোবারক মিয়ার (৩৭) পা কেটে উল্লাস করে প্রতিপক্ষের লোকজন। পরে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোবারক মিয়া মারা যান। এ ঘটনায় জিল্লুর রহমান ও কাউছার মোল্লাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

সর্বশেষ গত বুধবার সকালে সরাইল উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের কাটানিশার গ্রামে মসজিদে যাওয়া নিয়ে মিজান মেম্বার ও ইয়াছিন মুন্সির লোকদের মধ্যে সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অর্ধশত লোক আহত হয়েছেন।

এসব সংঘর্ষের বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান বলেন, এলাকায় যাতে আর কোনো সংঘর্ষ না হয় সেজন্য আমরা কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মাধ্যমে এলাকাবাসীকে সচেতন করছি। জনপ্রতিনিধিদেরকে নিয়ে এলাকায় যাতে ঝগড়া-বিবাদ না হয় সেজন্য কাজ করছি। এছাড়া আগের সব ঘটনায় জড়িত অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

উল্লেখ্য, করোনা পরিস্থিতিতে গত ১১ এপ্রিল থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা লকডাউন ঘোষণা করা হয়।

সূত্র : ইউএনবি

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //