কক্সবাজারে আমফানে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে সেনাসদস্যরা

কক্সবাজারে আমফান পরবর্তী দুর্যোগ মোকাবিলায় সার্বিক ত্রাণ, উদ্ধার ও চিকিৎসা সহায়তা কার্যক্রম হাতে নিয়েছে সেনাবাহিনী।

সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের দিক-নির্দেশনায় আগে থেকেই সেনাবাহিনীর ১০ পদাতিক ডিভিশন সমগ্র কক্সবাজার ও জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মায়ানমার নাগরিকদের ক্যাম্পে ঘূর্ণিঝড় প্রাক ও পরবর্তী সচেতনতা, উদ্ধার কার্যক্রম, ত্রাণ তৎপরতা ও চিকিৎসাসেবা প্রদানে যথাযথ প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল।

বর্তমানে ঘূর্ণিঝড় আক্রান্ত এলাকাগুলোতে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট ও বাঁধ পুনর্নির্মাণে স্থানীয়দের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছে সেনাবাহিনী।

পাশাপাশি দুর্যোগ কবলিত  এলাকাগুলোতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সহায়তা প্রদানের জন্য রামু সেনানিবাসের ১০টি মেডিক্যাল টিম গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে একযোগে কাজ করছে, প্রয়োজনীয় রসদ ও ত্রাণ পৌঁছে দিচ্ছে দুর্গতদের ঘরে ঘরে।


এছাড়া ঘূর্ণিঝড় আমফান পরবর্তী সময়ে পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে কক্সবাজারে দুর্গত ও করোনাভাইরাসের কারণে কর্মহীন অসহায় মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী এবং কাঁচাবাজারের চাহিদা পূরণ করতে সেনাবাজারের আয়োজন করে প্রায় এক হাজার পরিবারের মধ্যে ঈদের খুশি ছড়িয়েছে রামু সেনানিবাসের সেনাসদস্যরা।

এরই ধারাবাহিকতায় কক্সবাজার জেলা এবং বৃহত্তর চট্টগ্রাম জেলার চারটি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় যেমন লোহাগারা উপজেলার বড়হাতিয়া, পেকুয়া রাবার ড্যাম, খুরুশকুল ইউনিয়ন ও চৌফলদন্ডী  ইউনিয়নের বিভিন্ন দুর্গত এলাকায় সেনাবাহিনী বাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামত, ভেঙে পড়া ঘরবাড়ির ছাউনি, টিনের চাল, ঘরের বেড়া ইত্যাদি মেরামত করতে দুর্গত লোকদের পাশে দাঁড়িয়েছে।

পাশাপাশি খুরুশকুল ইউনিয়নের রাস্তারপাড়া এলাকায় কালভার্টের মাটি ধসে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়া রাস্তা মেরামত করার জন্য রামু সেনানিবাসের ৬ ইঞ্জিনিয়ার্সের তত্ত্বাবধানে দিনব্যাপী কাজ করে মেরামত  করা হয়েছে।

এছাড়া সেনাবাহিনীর ১০টি মেডিকেল টিমের মাধ্যমে আজ কক্সবাজার জেলার ডেলা, শুটকি পাড়া, খুরুশকুল সহ কক্সবাজার শহরের শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিশেষ মেডিকেল ক্যাম্পেইন পরিচালনা করে সহস্রাধিক দুর্গত ও অসহায় মানুষদের বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা ও ওষুধ বিতরণ করেছে সেনাবাহিনী।


অপরদিকে রোহিঙ্গা  ক্যাম্পে সেনাবাহিনী আগে থেকেই ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছিল। ঘূর্ণিঝড় আমফানের প্রাক প্রস্তুতি হিসাবে ৩৪ টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গত ১৮ মে সোমবার প্রায় ১০ হাজার প্রশিক্ষিত রোহিঙ্গা ভলান্টিয়ারদের নিয়ে সেনাবাহিনী ব্যাপক আকারে মহড়া কার্যক্রম পরিচালনা করে।   

পরবর্তীতে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই  ঘূর্ণিঝড় আমফান তাণ্ডবে ঝড়ো বাতাসে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ির বেড়া, চালা মেরামত করতে সেনাবাহিনী সাধারণ রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি জেলা প্রশাসন, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন, বিভিন্ন এনজিও এবং আইএনজিও সমূহের সাথে রোহিঙ্গাদের দুর্যোগ পরবর্তী সার্বিক সহযোগিতা নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনী প্রতিনিয়ত সমন্বয় করে চলেছে।

চলমান রমজান মাসে প্রখর রোদ বৃষ্টি উপেক্ষা করে নিরলসভাবে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে চলেছেন সেনাসদস্যরা।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //