বগুড়ায় ২২ গ্রাম পানিবন্দি

বগুড়ায় সারিয়াকান্দি উপজেলায় যমুনা নদীর পানি বেড়ে বিপদসীমার ৬৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বেড়ে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া সোনাতলায় যমুনা ও বাঙালি নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।

বগুড়ার সোনাতলা উপজেলা প্রশাসন সুত্রে জানা যায়, পানি বৃদ্ধি পেয়ে ৩ ইউনিয়নের ২২ গ্রামের সাড়ে ১৭ হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি মানুষগুলো তাদের ঘরের মূল্যবান আসবাবপত্র নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। গত কয়েক দিনে অবিরাম বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার যমুনা ও বাঙালি নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ফলে ওই উপজেলার তেকানীচুকাইনগর, পাকুল্লা ও মধুপুর ইউনিয়নের ২২টি গ্রামে সাড়ে ১৭ হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে।

জানা যায়, বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার তেকানীচুকাইনগর ইউনিয়নের ১৪টি গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়াও পাকুল্লা ইউনিয়নের ৬টি গ্রামের ৫ হাজার এবং মধুপুর ইউনিয়নের ২টি গ্রামের আড়াই হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। বর্তমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে মানুষ যখন কর্মহীন হয়ে পড়েছে, ঠিক সেই সময়ে বন্যার পানি নদীতীরবর্তী মানুষের বসতবাড়ি ঘিরে ফেলেছে।

বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার পাকুল্লাহ এলাকার বাসিন্দারা জানান, যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধির কারণে নিরাপদ স্থানে চলে যাচ্ছেন তারা। তাদের ঘরে পানি উঠেছে। এ জন্য ঘরের আসবাবপত্র নৌকায় করে উচুঁস্থানে যাচ্ছে তারা। 

বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার পাকুল্লা ইউপি চেয়ারম্যান মো: জুলফিকার রহমান শান্ত ও উপজেলার মধুপুর ইউপি চেয়ারম্যান অসীম কুমার জৈন নতুন জানান, একদিকে মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। অপরদিকে বন্যার পানিতে তলিয়ে গিয়ে অসহায় দরিদ্র মানুষগুলোর দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে।

পানিবন্দি হয়ে পড়া মানুষগুলোকে ভালোভাবে বাঁচানোর জন্য ত্রাণ সামগ্রীর পাশাপাশি সার্বক্ষনিক ওই এলাকাগুলোতে মেডিকেলের তদারকির ব্যবস্থার কথা বলেন তারা। 

বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো: জিয়াউর রহমান জানান, বর্তমান বন্যা পরিস্থিতিতে ২০ টন চাল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এছাড়াও নগদ ১ লাখ ৬৩ হাজার ৫’শ টাকা বুধবার ১ জুলাই থেকে বন্যার্তদের মধ্যে বিতরণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। 

এদিকে বুধবার (১ জুলাই) বগুড়া জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান জানান, বুধবার দুপুরে যমুনা নদীর পানি বেড়ে ৬৬ সেন্টিমিটার বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এরপর থেকে পানি আর বাড়েনি। এখন পর্যন্ত স্থিতি আছে। বর্তমানে যমুনার পানি স্থিতিশীল। আগামী এক সপ্তাহ নদীর পানি না বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে সারিয়াকান্দি উপজেলার চরাঞ্চলের চালুয়াবাড়ী, কর্নিবাড়ী, কুতুবপুর, চন্দনবাইশা, কাজলা, কামালপুর, রহদহ ও সারিয়াকান্দি সদর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলগুলো ও পাট, ধানসহ ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদী তীরবর্তী মানুষের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //