বরিশালে প্রতারক চক্রের ৩ নারী সদস্য গ্রেফতার

বরিশাল নগরীতে ফাঁদে ফেলে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার ঘটনায় প্রতারক চক্রের তিন নারী সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। 

তারা হলেন নগরীর ভাটিখানার কবির মঞ্জিলের ভাড়াটিয়া মো. কবির হাওলাদারের স্ত্রী মাহিনুর বেগম (৪৫), তার সহযোগী একই এলাকার মো. লিখন গাজীর স্ত্রী ফেরদৌসি আক্তার রুমা (৩৩) ও বিপুল হালদারের স্ত্রী স্বর্ণা হালদার (২৮)।

শনিবার (১১ জুলাই) গভীর রাতে নগরীর ভাটিখানা এলাকার কাজীবাড়ি মসজিদ সংলগ্ন মা মঞ্জিল থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। রবিবার (১২ জুলাই) দুপুরে নগরীর নথুল্লাবাদ এলাকায় বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উত্তর জোন কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) মো: খাইরুল আলম সাংবাদিকদের এই তথ্য জানিয়েছেন। 

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মাহিনুর বেগম বরিশাল সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ লামছড়ি এলাকার বাসিন্দা হলেও দুই সহযোগিকে নিয়ে ভাটিখানায় মা মঞ্জিলে ফ্লাট ভাড়া নিয়ে থাকতো। তার সহযোগী স্বর্ণার স্থায়ী ঠিকানা বাকেরগঞ্জ উপজেলার নলুয়া গ্রারে এবং রুমা নগরীর ভাটিখানা ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। এছাড়া তাদের নাদিম হাওলাদার নামের অপর এক সহযোগী পালিয়ে গেছে। সে চরমোনাই’র বাসিন্দা।

সংবাদ সম্মেলনে মো: খাইরুল আলম বলেন, ‘গত ১০ জুলাই নগরীর খাটিখানা এলাকার বাসিন্দা ও ফল ব্যবসায়ী হাসান খানের নিকট থেকে এক কেজি আম ক্রয় করেন প্রতারক মাহিনুর বেগম। এর কিছুক্ষণ পরে ওই নারী মুঠোফোনের মাধ্যমে ফল বিক্রেতা হাসান খানকে জানায়, তার কাছ থেকে ক্রয়কৃত আম পঁচা এবং তার আরও তিন কেজি আমের প্রয়োজন। এরপর ওই নারী হাসান খানের নিকট থেকে আরও তিন কেজি আম ক্রয় করেন। কিন্তু টাকা না থাকার অজুহাত তুলে টাকা পরিশোধের কথা বলে ব্যবসায়ীকে বাসায় নিয়ে যায়। এর পর পরই শুরু হয় প্রতারণা।

উপ-পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘মাহিনুর তার সহযোগী স্বর্ণা ও ফেরদৌসি আক্তার রুমা সদর উপজেলার চরমোনাই এলাকার চরহোগলা এলাকার শাজাহান হাওলাদারের ছেলে নাদিম হাওলাদার (২২) নামের এক যুবকের সহায়তায় ব্যবসায়ীকে উলঙ্গ করে মোবাইল ফোনে অশালীন ছবি এবং ফিডিও ধারণের কথা জানিয়ে জিম্মি করে। ফল ব্যবসায়ীর কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে প্রতারক চক্রটি। পরে ১১ হাজার টাকা দিয়ে জিম্মি দশা থেকে মুক্তি পায় ব্যবসায়ী।

এদিকে রাতেই প্রতারণার শিকার ব্যবসায়ীর বোনের মাধ্যমে ঘটনাটি জানতে পারে মহানগরীর কাউনিয়া থানা পুলিশ। এর পর পরই ভাটিখানার ওই বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে তারা। সেখান থেকে ওই তিন নারী প্রতারককে আটক করতে সক্ষম হলেও নাদিম নামের যুবক পালিয়ে যায়।

উপ-পুলিশ কমিশনার খাইরুল আলম জানান, ‘গ্রেফতারকৃতরা একটি চক্র। এরা আরো অনেকের সাথে এমন প্রতারণার কথা স্বীকার করেছে। এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি তাদের অন্যান্য সহযোগীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে থানা পুলিশের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে বলে জানান বিএমপি’র উত্তর জোনের এই কর্মকর্তা।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. জাকারিয়া হাওলাদার, সহকারী পুলিশ কমিশনার (কাউনিয়া) আব্দুল হালিম, কাউনিয়া থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) আজিমুল করিম, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) হিরন্ময় প্রমুখ।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //