তেঁতুলিয়ায় পানিবন্দিদের উদ্ধার করলো ফায়ারসার্ভিস

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় গত ৪ দিনের লাগাতার ভারী বর্ষণ ও আকর্ষিক উজান থেকে বয়ে আসা পাহাড়ি ঢলে নদীর পানিতে ঘর বন্দি হয়ে আটকে পড়ে ২ ইউনিয়নের কয়েকশ পরিবার। খবর পেয়ে ওইসব পানিবন্দিদের উদ্ধার করলেন তেঁতুলিয়া ফায়ারসার্ভিসের কর্মীরা। 

স্থানীয় ভুক্তভোগী আতিরুল ও মোরজিনা বলেন, রবিবার (১২ জুলাই) দুপুরের পর থেকে আকর্ষিক করতোয় নদীর পানি বেড়ে যায়। এ সময় পানিবন্দি হয়ে ঘর থেকে বের হতে না পেরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে থাকি। কিন্তু পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় আমরা আতঙ্কিত হয়ে দ্রুত তেঁতুলিয়া ফায়ার স্টেশনকে জানাই। 

খবর পেয়ে তেঁতুলিয়া ফায়ার স্টেশনের কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার অভিযানে নেমে পড়ে। এদিকে খবর পেয়ে পানিবন্দি ওইসব এলাকা পরিদর্শন করে তাৎক্ষনিক শুকনো খাবার ও নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রর ব্যবস্থা করেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। পানিবন্দি এসব মানুষের নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ভজনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বেগম খালেদা জিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, গনাগছ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভজনপুর ডিগ্রি কলেজ, পাথরঘাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে প্রাথমিক ভাবে আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়। 

জানা গেছে, গত ৪ দিনের লাগাতার ভারী বর্ষণ ও আকর্ষিক উজান থেকে বয়ে আসা পাহাড়ি ঢলে করতোয়া নদী সংলগ্ন উপজেলার ভজনপুর ডাঙ্গী, কলেজপাড়া, পাথরঘাটা, আঠরখারীর ৪ গ্রামে ৩ ঘণ্টার চেষ্টায় অর্ধশতাধিক পরিবারকে উদ্ধার করেছে তেঁতুলিয়া ফায়ারসার্ভিস কর্মীরা, এ সময় অভিযানে পঞ্চগড় ফায়ারসার্ভিস কর্মীরাও অংশগ্রহণ করেন। তবে করতোয়া নদী সংলগ্ন ভজনপুর ইউনিয়নের গনাগছ, গোলাব্দিগছ, ডাঙ্গী, ভজনপুর বাজার, ভেলুপাড়া গ্রামের প্রায় ৩০০ পরিবার ও নদী সংলগ্ন দেবনগড় ইউনিয়নের বালুবাড়ি, কলেজপাড়া, নিজবাড়ী, পাথরঘাটা, আঠরখারী, শেখগছ গ্রামের প্রায় ৫০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। 

পঞ্চগড় ফায়ার স্টেশনের উপ সহকারি পরিচালক ওয়াদুদ হোসেন জানান, ফায়ারসার্ভিস কর্মীরা মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দিতে সব সময় প্রস্তুত। তাই আমরা পানিবন্দি এসব মানুষের আটকে পড়ার খবর পাওয়া মাত্রই দ্রুত ছুটে গিয়ে তাদের উদ্ধারের অভিযানে নেমে পরি। যেহেতু করতোয়ার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে তাই আমরা পঞ্চগড়র তেঁতুলিয়াসহ জেলার সবকয়টি ইউনিট প্রস্তুত আছি। যত রাত হোক না কেন খবর পাওয়া মাত্রই মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছে দিতে আমরা প্রস্তুত। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহাগ চন্দ্র সাহা জানান, যেহেতু মুজিব বর্ষ তাই কেউ না খেয়ে থাকবে না। পানিবন্দি সকলের খাবার ব্যবস্থা দিয়েছি সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যানদের। আর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত যেসব পরিবার থাকবে তাদের বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসন করার চেষ্টা করবো। 

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কাজী মাহমুদুর রহমান ডাবলু জানান, আকর্ষিক বন্যার খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ছুটে যায়। মানুষদের নিরাপদ আশ্রয় দেয়ার চেষ্টা করেছি। একই সাথে সকলকে রাতের খাবার ও নগদ শুকনো খাবার দেয়া হয়েছে। আমরা সব সময় প্রস্তুত আছি, খেয়াল রাখছি মানুষ যেন কষ্টে না থাকে। রাতভর আমরা তাদের খোজ খবর নেয়ার চেষ্টা করবো। একই সাথে পানিবন্দি এসব মানুষের পাশে দাঁড়াতে সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহব্বান করছি। 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //