খুলে দেয়া হয়েছে ঝুলন্ত সেতু, স্বাস্থ্যবিধি মানতে কড়াকড়ি

টানা চারমাস বন্ধের পর অবশেষে খুলে দেয়া হয়েছে রাঙামাটির সবচেয়ে আকর্ষণীয় ও পর্যটকদের প্রধান গন্তব্য ‘সিম্বল অব রাঙামাটি’ খ্যাত ঝুলন্ত সেতুটি। 

তবে সেতুতে প্রবেশে বাধ্যবাধকতা রয়েছে মাস্ক পরিধানে। মাস্কবিহীন কারো কাছে প্রবেশের টিকেট বিক্রি করছে না কর্তৃপক্ষ। এদিকে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে আরো কড়াকড়ি আরোপের দাবি জানিয়েছে পর্যটকরা। 

ঝুলন্ত সেতুটি খুলে দেয়ার পরই খাতসংশ্লিষ্টদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরেছে। টানা চারমাস অলসসময় কাটানোর পর মৌসুমি ফল বিক্রেতা, টুরিস্ট বোটচালক থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সকলেই স্বস্তিতে কাজে ফিরেছে।

ঝুলন্ত সেতুতে আগত কয়েকজন পর্যটক জানান, করোনার প্রভাবে ঘরবন্দি থেকে জীবন দুর্বিষহ হয়ে গেছে। ঈদে রাঙামাটিতে এলাম, সোমবার পর্যটন সেতুটি খোলার কারণে এখানে এলাম। মনে হচ্ছে যেন প্রাণভরে শ্বাস নিতে পারছি। তবে সেতুতে প্রবেশে মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক থাকলেও ভেতরে ঢুকে কিছু মানুষ মাস্ক পরছে না। তাই কর্তৃপক্ষকে এই বিষয়ে আরো নজরদারি বাড়ানো উচিত। আর সেতুতে প্রবেশ পথে থার্মাল স্ক্যানার বসিয়ে সুরক্ষা আরো বাড়ানোর দাবি জানান তারা।


টুরিস্টবোট চালক নুর মোহাম্মদ ও মো. সেলিম জানিয়েছেন, টানা চারমাস ধরেই আমাদের চালক-সহকারীরা অবসরে ছিলেন। পরিবার-পরিজন নিয়ে কিভাবে যে জীবিকা নির্বাহ করেছি একমাত্র আল্লাহ ভালো জানেন। এখন পর্যটন খোলার কারণে যদি পর্যটক আসে তাহলে হয়ত এই দুর্ভোগের সময়টা কেটে যাবে। 

তারা জানান, সোমবার ঝুলন্ত সেতুতে প্রবেশাধিকার চালুর পর এক বিকেলেই ২৫টির মতো টুরিস্টবোট সুবলংয়ের দিকে ছেড়ে গেছে। যদিও স্বাভাবিক সময়ে ঈদের মৌসুমে প্রতিদিন ২৫০-৩০০ এর মতো ট্যুরিস্ট বোট ছেড়ে যেত। 

সেতুতে প্রবেশের টিকেট বিক্রেতা মো. সোহেল জানান, টানা চারমাস এই সেতুটিতে পর্যটন প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছিল। সোমবার সেতুতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা বাতিল করা হয়েছে। বিকেল থেকে আমরা টিকেট বিক্রয় শুরু করেছি। করোনা সময়কালীন হিসেবে প্রথম দিনেই আমরা তুলনামূলক ভালোই সাড়া পেয়েছি। তবে মাস্ক ছাড়া সেতুতে কাউকে প্রবেশ করতে দিচ্ছি না। এছাড়া স্প্রের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

রাঙামাটি পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক সৃজন বিকাশ বড়ুয়া জানান, করোনার প্রাদুর্ভাবের শুরুতেই সরকারের নির্দেশনায় ১৮ মার্চ থেকে ঝুলন্ত সেতুতে প্রবেশসহ রাঙামাটির সব পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ ছিল। তবে ইতোমধ্যে কক্সবাজার, চট্টগ্রামসহ অনেক জায়গায় পর্যটনকেন্দ্র খুলে দেয়া হয়েছে। তাই আমরা সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্যবিধি পালনে কড়াকড়ি আরোপ করেই পর্যটন ঝুলন্ত সেতুটি খুলে দিয়েছি। বিগত চারমাস ধরে সেতুটি বন্ধের কারণে আমরা নিজস্ব পর্যটন মোটেলেও কোনো বুকিং পাইনি। 

তিনি বলেন, চারমাসের প্রতি মাসেই কমপক্ষে আমাদের ২০ লাখ টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে। চারমাসে এই ক্ষতির পরিমাণ কোটির টাকার কাছাকাছি। এখন আশা করছি, কিছু বুকিংও পাবো। 

তিনি আরো বলেন, আমরা সেতুতে কাউকে মাস্ক ছাড়া প্রবেশ করতে দিচ্ছি না। ভেতরে প্রবেশের পরও মাস্ক পরে থাকার জন্য কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।

রাঙামাটি জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশিদ বলেন, পর্যটন কর্তৃপক্ষ আমার কাছে এসেছিলেন। আমি বলেছি আপনারা যদি স্বাস্থ্যবিধি চালাতে পারেন তবে চালু করুন। তবে মাস্কবিহীন যাতে কাউকে প্রবেশ করতে পারে। এমনকি সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে বলেছি।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //