শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সেপ্টেম্বরের আগে খুলছে না

করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের কারণে কবে নাগাদ খোলা হবে তা নিয়ে বিভিন্ন অপ্রচারও চলছে। অপপ্রচারের বিরুদ্ধে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বুধবার (২২ জুলাই) রাতে প্রতিবাদও জানিয়েছে। 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব সৃষ্টি করে বলা হয়, ঈদের পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে। এর প্রতিবাদ জানিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, ঈদের পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

করোনার কারণে গত ১৮ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। আগামী ৬ আগষ্ট পর্যন্ত এই ছুটির মেয়াদ। এখন যে অবস্থা চলছে তাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার মত পরিবেশ নেই। খুলতে হলে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েই খুলতে হবে।

তাই পরিস্থিতি বিবেচনা করে করোনাভাইরাসের কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়ানোর পরিকল্পনা চলছে। একইসঙ্গে সেপ্টেম্বরের আগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সম্ভাবনা নেই বলেও জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।  

মঙ্গলবার মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, বর্তমান করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়েই প্রতিষ্ঠান খোলা হবে। সেই সাথে ছুটি আরো বাড়ানো হবে। ৬ আগস্টের পর ছুটি বাড়ার বিষয়টি ঈদের আগেই জানিয়ে দেয়া হবে।

এদিকে, দুই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপে জানা গেছে, ঈদের পর না হলেও সেপ্টেম্বরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে। এক্ষেত্রে কেবল যদি করোনাভাইরাস পরিস্থিতি বেশ নিম্নগামী হয় এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার ব্যাপারে সরকারের দায়িত্বশীলরা আশ্বস্ত হন তাহলেই প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হবে।

এ কারণে আপাতত দুটি পরিকল্পনা সামনে রেখে প্রস্তুতি চলছে। একটি হচ্ছে, সেপ্টেম্বরে খুলে দেয়া, আরেকটি এরপর যে কোনো সময়ে খুলে দেয়া।

এ ব্যাপারে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আকরাম-আল-হোসেন বলেন, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার মতো অবস্থা এখনও তৈরি হয়নি। হয়তো সেপ্টেম্বরের আগে খুলে দেব না। সেপ্টেম্বর থেকে প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়া শুরুর প্রস্তুতি হিসেবে আমরা সিলেবাস ও কারিকুলাম পর্যালোচনা করছি। প্রয়োজনে কর্মদিবস বিবেচনায় নিয়ে সিলেবাস সংক্ষেপ হচ্ছে। এ নিয়ে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি (নেপ) কাজ করছে। আর প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি), ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী (ইইসি), জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষার ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলাপ করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। 

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, সরকারের কাছে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হচ্ছে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা। ভাইরাসের সংক্রমণের বিষয়টি যখন নিশ্চিত করা যাবে তখনই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

এদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে কেউ গুজব ছড়ালে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তাই ৬ আগস্টের পর ছুটি বাড়ছে কি না, তা ঈদের আগেই জানিয়ে দেয়া হবে। কারণ গত এক সপ্তাহ ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু ভুয়া আইডি থেকে ঈদের পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার গুজব ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এতে বিভ্রান্ত হচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা। অনেক অভিভাবকই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ নিয়ে যোগাযোগ করছেন।

গত বৃহস্পতিবার শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক শ্রেণির মানুষ শিক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। ঈদের পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার বিষয়ে আমরা এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি। অথচ আমাদের নাম দিয়ে জাতীয় শিক্ষা বোর্ডের নামে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে জাতীয় শিক্ষা বোর্ড নামে কোনো শিক্ষা বোর্ড নেই।’

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //