মিথিলা ও সৃজিতের লকডাউন

চলতি বছর ২৯ ফেব্রুয়ারি তাদের বিবাহোত্তর সংবর্ধনাও হয় ওপার বাংলায়। মিথিলা ও সৃজিতের এ আয়োজনে হাজির ছিলেন ওপার বাংলার তারকারা। এরপর নিজেদের কাজে মন দেন দু’জনেই। মিথিলা চলে আসেন দেশে আর সৃজিত উড়ে যান আফ্রিকা। তার মধ্যেই করোনার হানা। শুটিংয়ের নিষেধাজ্ঞা জারি হতেই ভারত ফেরেন তিনি। আর ফিরেই স্বেচ্ছায় গৃহবন্দি করে ফেলেন নিজেকে। অন্যদিকে মিথিলাও ঘরবন্দি হয়ে আছেন ঢাকায়।

করোনাকালীন এই সময়ে অফিসের কাজ সামলে নিজের সৃষ্টিশীল মনের খোরাকও জুগিয়ে চলছেন মিথিলা। কখনো গাইছেন, কখনো আঁকছেন, কখনো সরাসরি আড্ডায় হাজির হচ্ছেন। সৃজিতও ব্যস্ত রয়েছেন নতুন সৃষ্টিতে। ছবি নিয়ে নিজের ভাবনা জানাচ্ছেন দর্শকদের, চালিয়ে যাচ্ছেন লেখালেখি। সৃষ্টিশীল মানুষ জানেন, কী করে ঘরবন্দি সময়কে কাজে লাগাতে হয়।


ঘরে বসে মিথিলাকে মিস করছেন সৃজিত। গেল ৪ মে ইনস্টাগ্রামে পদ্মাপাড়ে পরস্পরের হাত ধরা সাদাকালো ছবি পোস্ট করে তিনি ক্যাপশন দিয়েছিলেন, ‘আগের বছরের আজকের দিনে পদ্মাপাড়ে ইলিশ খেতে গিয়ে।’ কয়েক দিন আগে লকডাউনে বসে সৃজিত লিখছেন, ছবি দেখছেন, ওয়েব সিরিজ দেখছেন। তার ভাষ্যে, ‘এই সময়টা স্টোরি টেলারের জন্য আদর্শ সময়। এ বছর ইন্ডাস্ট্রিতে দশ বছর পূর্তি হচ্ছে আমার। নিজের সঙ্গে কাটানোর জন্য অনেকটা সময় পেলাম। আর মিথিলার সঙ্গে আড্ডা জমাচ্ছি।’

অন্যদিকে লকডাউনে বসে নিজের কাজ এগিয়ে নিচ্ছেন সৃজিত। বহুল প্রতিক্ষীত ‘ফেলুদা ফেরত’ এর শীর্ষ সংগীত প্রকাশ করেছেন। পোস্ট প্রোডাকশনের অন্যান্য কাজও এগিয়ে নিচ্ছেন তিনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাবা দিবসে তাহসান-মিথিলার সন্তান আইরাকে নিয়ে পোস্ট করেছেন। সেখানে তাহসানকে শুভেচ্ছা জানাতে ভুল হয়নি তার। দুবাই বিমানবন্দরে ‘কাকাবাবু প্রত্যাবর্তন’ এর শুটিং শেষে আসার পথে মাস্ক পরা ছবি তুলে জানান দিয়েছেন ‘নিউ নরমাল’ কেমন হতে পারে।

একটি ফেসবুক আড্ডাতেও হাজির হয়েছিলেন দু’জন। দুই দেশে থেকেই। এর আগে সৃজিত তার ফেসবুক পেজে প্রকাশ করেন তাদের বিয়ের রিসিপসন পার্টির ভিডিও। পরে মিথিলাও তার ইনস্টাগ্রামে সেই ভিডিও শেয়ার করে লিখেছেন, ‘বসন্ত এসেছিল’। এ ভিডিও প্রকাশের আগে বিয়ের একটি ছবি পোস্ট করে মিথিলা লিখেছেন, ‘প্রহর শেষের আলোয় রাঙা সেদিন চৈত্রমাস তোমার চোখে দেখেছিলাম আমার সর্বনাশ।’


মিথিলা তার নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন, ‘দীর্ঘদিন পর যখন সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে তার দেখা করার কথা, তখন বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে করোনা।’ ঘরে বসে থেকে সৃজিতের লেখা গানও তুলে নিয়েছেন নিজের কণ্ঠে। ‘তুমি এবার’ শীর্ষক গানটি প্রিয়তমার কণ্ঠে শুনে সৃজিতও শেয়ার করেছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। মৈনাক ভৌমিকের ‘মাছ মিষ্টি অ্যান্ড মোর’ এর জন্য লিখেছিলেন সৃজিত। নীল দত্তের সুরে সে গান গেয়েছিলেন সোমলতা আচার্য।

ঘরবন্দি সময়ে কিছু কাজ করেছেন মিথিলা। নিজের পরিচালনায় নির্মাণ করেন শর্টফিল্ম ‘দ্য ফরগটেন ওয়ান’। ইরেশ যাকেরের গল্প অবলম্বনে শর্টফিল্মটি বানাতে তাকে সহায়তা করেছেন দুই বোন মীম রশিদ ও মিশৌরি রশিদ। মিথিলার মেয়ে আয়রাও এখানে অভিনয় করেন। নিজের ইউটিউবে ছেড়েছেন তিনি এটি।


শুধু তাই নয়। ঈদে গৌতম কৈরীর করা ঈদের বিশেষ নাটক ঘরবন্দি সময়ের গল্প ‘খোলা জানালা’তে মিথিলা অভিনয় করেছেন মেয়েকে নিয়ে। মিথিলা এ সময়ে কলকাতার বিক্রম চক্রবর্তীর সঙ্গে শাহরিয়ার পলকের পরিচালনায় কাজ করেন ‘দূরে থাকা কাছের মানুষ’ শর্টফিল্মে। দুই অভিনয়শিল্পী ঘরে বসেই কাজটি করেন। মিথিলা রবীন্দ্রজয়ন্তীতে শাশুড়ির অনুরোধে একটি নাচের ভিডিও করে উপহার দিয়েছেন দর্শকদের।

প্রায় ১৫ বছর পরে নাচলেন তিনি। মিথিলা এই ভিডিওটি প্রকাশ করে লিখেন, ‘প্রায় ১৫ বছর পরে নাচলাম। আমার ভারত মাতা সুমিতা দেবীর শ্রীময়ী ক্লাবের রবীন্দ্রজয়ন্তীর ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের জন্য। ১৫ বছর লম্বা সময়। আশা করি, ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবে সবাই।’ সৃজিতের বিয়ের পর প্রথম জামাইষষ্ঠীতে কলকাতায় থাকতে হয়েছে তাকে। অথচ ইলিশ, খাসি আর পঞ্চব্যাঞ্জনে মেতে ওঠার কথা ছিল তার। সৃজিতের দুঃখ বুঝতে পেরে মিথিলা সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছবি শেয়ার করে লিখেছেন, ‘এবার জামাইষষ্ঠীতে নিজেই ভালোমন্দ কিছু খেয়ে নাও।’

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //