ঈদ উৎসবে ঘর থাকুক ছিমছাম

এবারের কোরবানির ঈদ অন্য সময়ের চেয়ে একটু আলাদা। তারপরও উৎসব বলে কথা। এই উৎসবের একটি বড় অংশ কোরবানি দেওয়া। যেখানে মৃত পশুর রক্ত ও অন্যান্য বর্জ্যরে বিষয় থাকে। তাই এ সময়টা ঘরের ভেতরে একটু বাড়তি সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। বিশেষ করে শিশুদের এ সময় একটু পরিচ্ছন্নতা ও সাবধানতার সঙ্গে ঘরে রাখতে হবে।

মাংস বা অন্যান্য জিনিস যখন আসবে তখন গ্লাভস পরে সেগুলো প্রক্রিয়াজাত করতে হবে। রান্না ঘরে এ সময় বাড়তি জিনিসপত্র না রেখে ছিমছাম করে গুছিয়ে রাখুন। যেন মাংস বা অন্যান্য সামগ্রীগুলোকে গুছিয়ে রাখতে পারেন। দরোজায় ঘরে ঢোকার মুখেই জীবাণুনাশক স্প্রে রাখুন, যেটা দ্বারা আগত অতিথিরা তাদের হাত জীবাণুমুক্ত করে নিতে পারেন। বাসার জানালার কাঁচ, মেঝে সবকিছুই জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করুন। বিশেষ করে রান্নাঘর, মাংস ও অন্যান্য সামগ্রী প্রক্রিয়া করার পর বিশেষভাবে জীবাণুমুক্ত করে নিন। এ ক্ষেত্রে তিনটি ধাপ অনুসরণ করতে পারেন- 

১. প্রথমে পুরো মেঝে সাবান-পানি দিয়ে মুছে নিন।

২. ভালো করে মেঝে শুকিয়ে নিন।

৩. এবার স্যাভলন বা ডেটলযুক্ত পানি দিয়ে আর একবার মুছে নিন।

রান্নাঘরে যদি একটু বাড়তি জায়গা থাকে তবে সেখানে রাখতে পারেন ছোট্ট কোনো ফলের টব বা একটি ছোট্ট কাচের জারে মানিপ্ল্যান্ট।


এই সময়ে ঘরে প্রচুর সবুজ জিনিস রাখুন। যদি বারান্দা থাকে তবে সেখানে ঝুলিয়ে দিতে পারেন রঙ-বেরঙের অর্কিড, ঝোলানো প্ল্যান্ট, বোগেনভিলিয়া বা অপরাজিতার লতা। ড্রইং রুমে রাখতে পারেন ইনডোর প্ল্যান্ট। যেগুলো ঘরে শোভা বর্ধনের পাশাপাশি আপনার ঘরে দেবে বাড়তি অক্সিজেনের জোগান। জানেন তো সবুজেই বাঁচে প্রাণ?

এবার ঘরের পরিচ্ছন্নতার জন্য কী কী আগাম পদক্ষেপগুলো আপনাকে নিতে হবে।

১. ঘরের পর্দাগুলো সব খুলে পরিষ্কার করে ইস্ত্রি করে নিন। আর যদি নতুন সেট তৈরি করেন সেটাও ভালো করে ধুয়ে ইস্ত্রি করে নিন। পর্দায় হালকা পারফিউম স্প্রে করে দিন। দেখবেন ঘরে এক অন্যরকম সুগন্ধ ছড়িয়ে পড়বে।

২. কুশন কভার, সোফার ওয়ার এগুলোও ধুয়ে ইস্ত্রি করে রাখবেন।

৩. যাদের ফিক্সড সোফা তারা জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করে মুছে নেবেন।

৪. কাচের ও কাঠের টেবিল মুছে নিন জীবাণুনাশক দিয়ে। এর উপরে রাখা কাভারগুলো ধুয়ে ইস্ত্রি করে রাখুন।

৫. জুতার র‌্যাক একটি অন্যতম অনুষঙ্গ ঘরের। অথচ এর দিকে খেয়াল রাখেন না অনেকেই। অথচ এ সু-র‌্যাকে রাখা জুতা থেকে ছড়াতে পারে ক্ষতিকর জীবাণু বা ভাইরাস। সব জুতা ভালো করে মুছে পলিথিনে মুড়ে রাখুন এবং যদি লোহার বা প্লাস্টিকের র‌্যাক হয় তবে ভালো করে জীবাণুনাশক দিয়ে ধুয়ে রোদে শুকিয়ে নিন। আর যদি কাঠের হয় তবে মুছে নিন ভালো করে জীবাণুনাশক দিয়ে।

৬. রান্নাঘরে অনেকেই অপ্রয়োজনীয় জিনিস স্টোর বানিয়ে রাখেন। এটা করবেন না। যেহেতু এ সময় অনেক পরিমাণ মাংস ও পশুর শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ যেমন ভুড়ি, পায়া ইত্যাদি প্রক্রিয়া করতে হবে তাই রান্নাঘরটা ফাঁকা ও ছিমছাম রাখুন। এতে করে কাজে ক্লান্তি আসবে না।

এবার আসি ঈদের দিনটিতে কীভাবে ঘর সাজাবেন। প্রথমেই বসার ঘর। বসার ঘরে সবুজ ইনডোর প্ল্যান্ট রাখতে পারেন যেমন রডোডেনড্রন গোত্রের গাছগুলো ভালো লাগবে। বসার ঘরে সন্ধ্যায় জ্বালিয়ে দিতে পারেন ফ্রেগন্যান্স মোমবাতি। ঘরে এক মায়াময় অনুভূতির তৈরি হবে। বেডরুমে একটি বাটিতে পানি দিয়ে বেলি বা অন্য সুগন্ধি ফুলের মালা রেখে দিতে পারেন। জানালায় ঝুলিয়ে দিতে পারেন বাহারি টবে পাতাবাহার। ডাইনিং টেবিলে একটি ফুলদানিতে রাখতে পারেন ফুল। ডাইনিং টেবিলের ম্যাট ও কভার যেন সবসময় খাবার-দাবারের পর পরিষ্কার করে মোছা হয় সেটা খেয়াল রাখতে হবে।

পরিশেষে বলি যে কোনো উৎসবেই ফুল বা ইনডোর প্ল্যান্টের তুলনা হয় না। তাই নতুন চাদর পর্দা লাগবে না। পুরনো যা আছে সেটাকেই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে একগুচ্ছ ফুল বা বারান্দায় একটু সবুজের ছোঁয়া রাখুন, দেখবেন আপনার পুরনো ঘরটাই নতুনভাবে হেসে উঠেছে। সময়টা ভালো যাচ্ছে না, তবুও উৎসব তো থেমে থাকবে না। আর তাই এই উৎসবে ঘরকে সাজান সবুজে আদরে ভালোবাসায়।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //