বিক্ষোভ রূপ নিলো দাঙ্গায়, যুক্তরাষ্ট্রে কারফিউ জারি

যুক্তরাষ্ট্রে মিনোপলি সিটিতে পুলশি নির্যাতনে খুন হওয়া কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকাণ্ডের জেরে চলমান শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সমাবেশ শনিবার রাতে দাঙ্গায় রূপ নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ৭৫টি বড় সিটিতে এ আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে।

আন্দোলনের ক্ষিপ্রতা প্রশমনে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ২৪টি বড় শহরে কারফিউ জারি করেছেন স্থানীয় প্রশাসন। জরুরি তলব করা হয়েছে ন্যাশনাল গার্ড। দ্বিতীয় দিনের মতো ঘেরাও করা হয়েছে হোয়াইট হাউজ, আগুন দেয়া হয়েছে পুলিশের গাড়িতে।

পুলিশের সাথে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ নিকট অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ করেছে বলে দাবি করছে যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমগুলো। বিক্ষোভকারীদের দমাতে কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে পুলিশ।

১৯৬৮ সালে মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র হত্যাকাণ্ডের পর দেশ জুড়ে যে বিক্ষোভ দেখা দিয়েছিল এবারের বিক্ষোভ তা ছাড়িয়ে যাবে বলে দাবি করছেন কেউ কেউ। কারণ ১৯৬৮ সালের পর একই সাথে এতগুলো শহরে কারফিউ জারির ঘটনা এই প্রথম। আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন, করোনায় লাখ মানুষের মৃত্যু, বেকারত্ব এসব কিছু এ দাঙ্গার পেছনে কাজ করছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু কোনো ধরণের সহিংসতা বরদাস্ত করা হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন তিনি।

এদিকে আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রার্থী সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, আমরা পুরো জাতি বেদনায় আক্রান্ত, তবে আমাদের এ বেদনা যেনো আমাদের গ্রাস করতে না পারে। 

তিনি আরো বলেন, আমরা বিক্ষুব্ধ জাতি, কিন্তু আমরা আমাদের ক্রোধকে গ্রাস করতে দিতে পারি না। তবে দেশ জুড়ে চলা জাতিগত নিপীড়নের জন্য তিনি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে দায়ী করেন।

ফ্লয়েড হত্যাকণ্ডের ঘটনা কালো বর্ণের মানুষের বিরুদ্ধে পুলিশের ধারবাহিক হত্যাকাণ্ডের অংশ হিসেবে মনে করছে বিক্ষোভকারীরা। ফার্গিউসনে মাইকেল ব্রাউন, নিউ ইয়র্কে এরিক গার্নার হত্যাকাণ্ডের ধারাবাহিকতা ফ্লয়েড হত্যার স্বীকার হয়েছেন বলে মনে করে বিক্ষোভকারীরা।

এদিকে ফিলাডেলফিয়ায় পুলিশের স্কোয়াডে আগুন ধরিয়ে উল্লাস করতে দেখা গেছে, লস এঞ্জেলসে দোকানপাট লুট করা হয়েছে। ভার্জিনিয়ায় বেশ কয়েকজন পুলিশ বিক্ষোভকারীদের হামলায় আহত হয়ে হসপিটালে ভর্তি হয়েছেন। পুলিশের সাথে সহিংসতা ইন্ডিয়ানপলিসে একজন নিহত হয়েছেন। দেশ জুড়ে বিভিন্ন স্থানে আগুন ধরিয়ে দেয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। করোনার ধকল কাটিয়ে উঠতে না উঠতে দাঙ্গার কারণে বাংলাদেশি কমিউনিটিতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

উল্লেখ্য, গত সোমবার জর্জ ফ্লয়েড পুলিশের হাঁটু চাপায় মারা যান। ঘটনার ভিডিও দৃশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে নাড়া দেয় পুরো যুক্তরাষ্ট্রবাসীকে। কালোদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য শনিবার পঞ্চম দিনের মতো রাস্তায় বেড়িয়ে আসেন সাদা বর্ণের আমেরিকানরা। অভিযুক্ত পুলিশ অফিসার ডেরেক চৌভিনকে তৃতীয় মাত্রার খুনের দায়ে অভিযুক্ত করা হয়।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //