প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে সহায়তা

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের আরো সময় দরকার

গত ০৭ এপ্রিল ২০২০ তারিখে মাউশির মাননীয় মহাপরিচালক স্বাক্ষরিত পত্রে বলা হয়েছে যে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে সহায়তা করতে আগ্রহী শিক্ষক-কর্মচারীদের একদিনে আহরিত বেতনের সমপরিমাণ টাকা ০৯ এপ্রিল ২০২০ তারিখের মধ্যে (মাত্র ২ দিনে) অগ্রণী ব্যাংকের 0200009382600 নং একাউন্টে জমা দিতে হবে।  

এমতাবস্থায় আমি মনে করি, মানবিক কারণে দেশের হতদরিদ্র ও অসহায় মানুষের সহায়তায় সকল এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে একদিনের বেতনের সমপরিমাণ টাক দিতে অবশ্যই আগ্রহী। কেননা, শিক্ষকগণ অত্যন্ত মানবিক ও দায়িত্বশীল মানুষ হওয়াটাই স্বাভাবিক। এটিই একজন গুণী শিক্ষকের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। তাদের অনেকের সাধ্য সীমিত হলেও অসহায় মানুষের প্রতি সবাই সহানুভূতিশীল। 

কিন্তু বর্তমান বাস্তবতা হচ্ছে, অধিকাংশ শিক্ষক-কর্মচারীই গত মাসে প্রাপ্ত বেতনভাতার টাকা ইতোমধ্যে সাংসারিক কাজে ব্যয় করে ফেলেছেন। বিশেষ করে যারা সরকারি অংশের বেতন-ভাতার উপর বেশিরভাগ নির্ভরশীল তাদের হাতে বাড়তি কোনো টাকাপয়সা এখন নেই। 

এদিকে সরকারি আদেশ অনুসারে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের মার্চ ২০২০ মাসের সরকারি অংশের বেতন বিল আগামী ১২ এপ্রিল ২০২০ তারিখ ও বাংলা নববর্ষের ভাতার বিল ১৩ এপ্রিল ২০২০ তারিখ এর মধ্যে ব্যাংকে জমা দেওয়া হবে বিধায় এর আগে তারা এই বেতন-ভাতার টাকা তুলতে পারছেন না। এক মাস গিয়ে আরেক মাসের প্রায় ১৫ দিন অনেক শিক্ষক-কর্মচারীর পক্ষেই দৈনন্দিন ব্যয় চালানো খুব কষ্টকর। তাই গত ০৯ এপ্রিল ২০২০ তারিখের মধ্যে ত্রাণ তহবিলে জমা দেওয়ার জন্য একদিনের আহরিত বেতনের সমপরিমাণ টাকা ম্যানেজ করার ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সকলের পক্ষে তা সম্ভব হয়নি। 

অপরদিকে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এখন অস্বাভাবিক ছুটি চলছে বিধায় শিক্ষক-কর্মচারীরা সহজে ঘর থেকে বের হতে পারেননি, পারছেন না। তাই সকল বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানগণের পক্ষে এতো সল্প সময়ের মধ্যে প্রত্যেক আগ্রহী শিক্ষক-কর্মচারীর নিকট থেকে এই টাকা সংগ্রহ করে ব্যাংকে জমা করা সম্ভব হয়ে উঠেনি।

এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের সম্মতি থাকলেও সরকারি বেতন বিল থেকে সরাসরি টাকা নিয়ে নেওয়ার বা রেখে দেওয়ার কোন সুযোগ প্রতিষ্ঠান প্রধানের হাতে নেই। শিক্ষক-কর্মচারীদের মার্চ ২০২০ এর বেতন ও বাংলানববর্ষ ভাতা ব্যাংকে জমা দেওয়ার শেষ তারিখ যথাক্রমে ১২ ও ১৩ এপ্রিল ২০২০ এর পরে তারা প্রত্যেকে ব্যাংক হিসাবের চেক দিলে বা টাকা তুলে এনে দিলে তখনই প্রতিষ্ঠান প্রধান সেই টাকা ত্রাণ তহবিলে জমা করতে পারবেন। 

এদিকে ব্যাংকের সকল শাখাও এখন খুলা নেই করোনার ভয়াবহতার কারণে। এইমাত্র পাওয়া খবরে জানা গেছে- সাধারণ ছুটিও আগামী ২৫ এপ্রিল ২০২০ তারিখ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এসকল বাস্তব কারণেই এই টাকা জমা দেওয়ার সময় কমপক্ষে আগামী ৩০ এপ্রিল ২০২০ তারিখ পর্যন্ত বাড়ানো উচিত। অন্যথায় বেতন থেকে বাধ্যতামূলকভাবে টাকা কেটে না নিয়ে বিশাল উদারতা দেখিয়েও অহেতুক সমালোচিত হবে সরকার। 

এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষকদের একদিনে আহরিত বেতনের সমপরিমাণ সহায়তার এই টাকাটা যদি কিছুদিন পরে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে জমা হয় তো তেমন কোন ক্ষতি হবে কি? নিশ্চয়ই না।

লেখক: মো. রহমত উল্লাহ 
অধ্যক্ষ, কিশলয় বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //