লকডাউনে সবচেয়ে বেশি ভুগছে শিশুরা

করোনাভাইরাস মহামারিতে শিশুদের অনেক ক্ষেত্রে ভাইরাসটি ছড়িয়ে দেয়ার সম্ভাব্য বাহক কিংবা মা-বাবার হোম অফিসে বাগড়া দেয়া মানুষ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। 

তবে বাস্তবে লকডাউনে শিশুরা সবচেয়ে বেশি ভুগছে।

আট বছর বয়সী এক শিশু তার মাকে প্রশ্ন করেছিল, ‘মা, করোনা কখন শেষ হবে?’ সে তার বন্ধুদের সাথে আবার ফুটবল মাঠে যেতে চায়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হচ্ছে, মায়ের কাছে কোনো উত্তর নেই।

করোনাভাইরাসের প্রভাব পরিবারের উপর পড়েছে সবচেয়ে বেশি। মা-বাবার উপর একইসাথে কাজ ঠিক রাখা, সন্তানদের শিক্ষাদান ও তাদের ইতিবাচক মনোভাব ধরে রাখার চেষ্টায় সৃষ্ট চাপের সাথে যোগ হয়েছে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার চাপ। সিঙ্গেল অভিভাবকদের ক্ষেত্রে এই চাপ অনেক ক্ষেত্রে অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে।

শিশুদের উপর করোনার প্রভাব কেমন, তা জার্মান অ্যাকাডেমি ফর চিলড্রেন অ্যান্ড ইউথ মেডিসিনের এক বিবৃতি থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়।

এতে বলা হয়েছে, আকস্মিকভাবে স্কুল ও অন্যান্য স্থাপনা বন্ধের পাশাপাশি বন্ধু ও শিক্ষকদের সাথে সপ্তাহের পর সপ্তাহ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকার অর্থ হচ্ছে- গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন চরিত্রের সাথে ভ্রান্ত ও সম্ভাব্য ক্ষতিকারকভাবে সম্পর্ক ছিন্ন থাকা।

রাজনৈতিক আলোচনায় শিশুদের উপর করোনাসৃষ্ট মানসিক চাপের বিষয়টি এখনো উঠে আসেনি। বরং তাদের স্কুলে পারফর্ম্যান্সের বিষয়টি প্রাধান্য পাচ্ছে বেশি।

ওই বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, অতীতের সিদ্ধান্তগ্রহণ প্রক্রিয়ায় শিশু-কিশোরদের সমঅধিকার পাওয়া মানুষ হিসেবে বিবেচনা করা হয়নি, বরং সম্ভাব্য ভাইরাসবাহক হিসেবে দেখা হয়েছে৷ 

বিভিন্ন পারিবারিক পটভূমি থেকে উঠে আসা কোনো কোনো শিশুর ক্ষেত্রে এই পরিস্থিতি শুধু অন্যায়ই নয়, ভীষণ মারাত্মকও।

সেভ দ্য চিলড্রেনের এক জরিপ অবশ্য কিছু ইতিবাচক খবরও দিচ্ছে। এতে দেখা যাচ্ছে, করোনার কারণে গৃহবন্দি হয়ে পড়ায় অনেক পরিবারের সদস্যরা একে অপরের সাথে ‘কোয়ালিটি টাইম’ কাটাতে পারছে।

প্রতিষ্ঠানটির পরিচালিত এক জরিপে দেখা যায়, করোনায় ৭৬% শিশু তাদের বন্ধুদের মিস করছে, ৫৯% শিশু বিরক্ত, ৩৮% শিশু পরিবারের সাথে ভাল সময় কাটাচ্ছে, ১৩% শিশু একাকীত্ব অনুভব করছে আর ৭% শিশ ভাইরাসটি নিয়ে ভীত। -ডয়চে ভেলে

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //