মানসিক অস্থিরতাকে বিদায় জানান

মানসিক অস্থিরতার কারণে মানুষের স্বাভাবিক জীবন ব্যহত হয়, নেমে আসে নানা বিপর্যয়। যে কেউ মানসিক অস্থিরতায় ভুগতে পারে, তাই সঠিক কৌশলে মানসিক অস্থিরতা কাটিয়ে উঠতে পারলে জীবনযাপন সহজ ও সুন্দর হয়। 

মানসিক অস্থিরতা থেকে মুক্তি পেতে চাইলে কিছু টিপস মনে রাখতে পারেন। তা হলো: 

১. যখনই মানসিক অস্থিরতায় ভুগবেন, তখন সব রকম খারাপ বা মন্দ চিন্তা করা থেকে বিরত থাকতে চেষ্টা করুন। চেষ্টা করুন ভালো কিছু চিন্তা করার, এমন কিছু ভাবুন, যা আপনাকে মানসিক শান্তি প্রদান করতে সাহায্য করবে। দেখবেন মানসিক অস্থিরতা এক নিমেষেই আপনার মন থেকে দূর হয়ে যাবে।

২. মানসিক অস্থিরতা বোধ করার সাথে সাথে আপনার জন্য প্রথম করণীয় কাজ হবে চট করে বাইরে চলে যাওয়া। একা একা যদি ঘরের এক কোনায় চুপটি করে বসে থাকেন বা নিজেকে বদ্ধ ঘরে আটকে ফেলেন, তাহলে আপনার মানসিক অস্থিরতা বাড়বে। তাই মন কেমন করলে বা বুক ধড়ফড় করলে একবার বাইরে থেকে বেড়িয়ে আসুন। আপনার মনের অস্থিরতা অনেকখানি কমে যাবে।

৩. কোনো ব্যাপার নিয়ে খুব বেশি চিন্তিত হলেও আপনার মধ্যে মানসিক অস্থিরতা দেখা দিতে পারে। অনেক সময় দেখা যায়, কোনো বিষয় নিয়ে দুশ্চিন্তা এত মারাত্মক অবস্থায় চলে যায় যে, সে সমস্যার সমাধান না করা পর্যন্ত আপনি স্বস্তিবোধ করেন না। এ অবস্থায় আপনার কাজ হবে দুশ্চিন্তার কারণ নিয়ে ভালোভাবে ভাবা এবং এর ভালো-খারাপ দুটি দিক নিয়েই মনের মধ্যে একটা পরিকল্পনা করে ফেলা। দেখবেন এ উপায়ে আপনার মানসিক অস্থিরতা কমবে।

৪. যেকোনো কিছু থেকে মুক্তি পেতে ঘুমের কোনো বিকল্প হয় না। আপনার মানসিক অস্থিরতা কমাতেও তাই ঘুম খুব কাজের একটি উপায় হিসেবে প্রতীয়মান হতে পারে। যখনই আপনি মানসিকভাবে অস্থিরতায় ভুগতে থাকেন, তখন চেষ্টা করুন একটা ভালো ঘুম দিতে। একবার যদি আপনি একটা লম্বা ঘুম দিতে পারেন, তাহলে দেখবেন অস্থিরতা আর আপনাকে ভোগাবে না।

৫. মানসিক অস্থিরতা কমানোর আরো একটি সহজ ও সুন্দর উপায় হলো নিজের ভালো লাগার কাজগুলো করা। হতে পারে সেটা গান শোনা বা প্রিয় মানুষটির সাথে কথা বলা। এক কথায় আপনার যা করতে ভালো লাগে তা-ই করুন। আপনার ভালো লাগার কাজগুলো করতে করতে দেখবেন অস্থিরতা কখন স্থিরতায় রূপান্তর হয়েছে।

৬. মানসিক অস্থিরতা কমাতে আপনি প্রথমেই এক গ্লাস পানি পান করুন। এক গ্লাস ঠাণ্ডা পানি। মাত্র এক গ্লাস ঠাণ্ডা পানিই আপনাকে অদ্ভুত মানসিক প্রশান্তি প্রদান করতে সক্ষম।

৭. মানসিক অস্থিরতা কমাতে আপনি মেডিটেশন করতে পারেন। আবার চাইলে ব্যায়াম করতেও পারেন। অনেক সময় শারীরিক দুর্বলতা থেকেও মানসিক অস্থিরতা হতে দেখা যায়। তাই আপনার খাবার রুটিনের প্রতি খেয়াল রাখুন। এতে পুষ্টিকর খাবার যোগ করুন।

৮. অস্থিরতা দেখা দিলে প্রথমে ব্রিদিং রিলাক্সেশন করুন। নাক দিয়ে ধীরে ধীরে গভীর শ্বাস নিন। বুক ভরে ভেতরের সব খালি জায়গা বাতাসে ভরে ফেলুন। দমটা অল্পক্ষণ আটকে রাখুন। তারপর মুখ দিয়ে ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়ুন। এভাবে পরপর তিনবার করুন।

৯. ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও গান শোনা, গল্পের বই পড়া, কবিতা পড়া, বাগানে সময় কাটানো- এমন ধরনের নিজের ভালো লাগার কাজগুলো করুন। কাজগুলো মনটাকে অন্যদিকে সরিয়ে দিয়ে অস্থিরতা কাটাতে সাহায্য করবে।

১০. মনের অস্থিরতা কমাতে ফেলে আসা জীবনের কিছু ভালো স্মৃতি মনে করুন, অর্থাৎ আপনার সুসময় নিয়ে ভাবুন। দেখবেন মনের অজান্তে ঠোঁটের কোণে হাসি চলে আসবে।

১১. অস্থিরতার বিষয়টিকে পাত্তা না দেয়ার চেষ্টা করুন। চেষ্টা করুন ভাবতে, এমন আপনার সাথে কখনই হয়নি, আপনি ঘুমের মধ্যে আছেন ঘুমটা এখনই কেটে যাবে।

১২. উল্টোদিক থেকে সংখ্যা গুনুন। যেমন ১০০, ৯৯, ৯৮ এভাবে। গবেষণায় দেখা গেছে, বিভিন্ন মানসিক উত্তেজনায় এ পদ্ধতি বেশ কাজের।