দ্বিতীয় দফায় জয়ের জন্য চীনের সাহায্য চেয়েছিলেন ট্রাম্প

দ্বিতীয় দফায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাহায্য চেয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

মার্কিন সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন তার নতুন বইতে এমনই দাবি করেছেন।

৫৭৭ পাতার ‘দ্য রুম হোয়্যার ইট হ্যাপেনড’ নামে বইটি ২৩ জুন প্রকাশ হবার কথা রয়েছে। জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউস বলেছিল, বইটিতে 'টপ সিক্রেট' তথ্য ও বর্ণনা রয়েছে, যা অবশ্যই বাদ দিতে হবে। তবে বোল্টন সেসময় তা নাকচ করে দিয়েছিলেন। ট্রাম্পের অভিশংসন বিচারের ক্ষেত্রে যেসব প্রশ্ন উঠেছিল, তাও বইটিতে স্থান পেয়েছে।

জাপানের ওসাকায় গত বছরের জুনে জি-২০ সম্মেলনের ফাঁকে ট্রাম্প ও শি’র মধ্যে হওয়া এক বৈঠকের পর এমন অভিযোগ উঠেছে।

মার্কিন দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত নতুন বইটির সারসংক্ষেপে বোল্টন দাবি করেছেন, চীনের প্রেসিডেন্ট অভিযোগ করেছিলেন- কিছু মার্কিন সমালোচক চাইছেন, চীনের সাথে যাতে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন করে স্নায়ুযুদ্ধ শুরু হয়। ট্রাম্প ভেবেছিলেন শি হয়তো তার ডেমোক্রেটিক প্রতিপক্ষের কথা বলছেন।

জন বোল্টন

বোল্টন বলেন, এরপর বিস্ময়করভাবেই  ট্রাম্প আলোচনা ২০২০ সালে অনুষ্ঠিতব্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিকে ঘুরিয়ে দেন। চীনের অর্থনৈতিক সামর্থ্যের কথা উল্লেখ করে ট্রাম্প নির্বাচনে জেতার জন্য শি'র সাহায্য চান। তিনি কৃষকদের গুরুত্বের ওপর ও দেশটি থেকে চীনের সয়াবিন ও গম ক্রয়ের বর্ধিত হারের ওপর বারবার জোর দিচ্ছিলেন।

এরপর শি যখন বাণিজ্য আলোচনায় কৃষি উৎপাদনের ওপর জোর দেয়া হবে বলে মন্তব্য করেন তখন ট্রাম্প তাকে 'চীনের ইতিহাসে শ্রেষ্ঠ নেতা' বলে অভিহিত করেন।

ট্রাম্প প্রশাসন ইতিমধ্যেই বইটির প্রকাশনা আটকে দেবার চেষ্টা করছে। ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিসের অভিযোগ বইটিতে 'ক্লাসিফায়েড' অর্থাৎ 'রাষ্ট্রীয়' গোপনীয় তথ্য রয়েছে। বইটির প্রকাশ আটকাতে গতকাল বুধবার (১৭) রাতে এক বিচারকের কাছে জরুরি আদেশ চেয়েছে মার্কিন বিচার বিভাগ।

এর প্রতিক্রিয়ায় 0বইয়ের প্রকাশক সাইমন অ্যান্ড শুস্টার এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আজ রাতে সরকারের জরুরি আদেশ চাওয়া নিরর্থক ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মহড়া। বইটির কয়েক হাজার অনুলিপি ইতিমধ্যে বিশ্বজুড়ে বিতরণ করা হয়েছে এবং নিষেধাজ্ঞার আদেশ সফল হবে না।

এদিকে বইটি নিয়ে ইতোমধ্যেই নানা ধরণের বিতর্ক তৈরি হয়েছে। বোল্টনের বক্তব্যকে নাকচ করে মার্কিন ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ রবার্ট লাইথিজার বলেছেন, চীনের প্রেসিডেন্টের সাথে ওই আলোচনায় দ্বিতীয় দফা নির্বাচনে জেতার ব্যাপারে কোনো কথা হয়নি।

জানুয়ারিতে ডেমোক্রেটিক পার্টির সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জো বাইডেন ও তার ছেলে হান্টারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত শুরু করার জন্য ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে চাপে ফেলার জন্য সামরিক সহায়তা প্রত্যাহারের অভিযোগে ইমপিচমেন্টের মুখোমুখি হন ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্ট সব অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত সিনেটে কোনো সাক্ষীর বক্তব্য ছাড়াই দুই সপ্তাহব্যাপী ট্রায়ালের পর নিষ্কৃতি পান ট্রাম্প।

২০১৮ সালের এপ্রিলে হোয়াইট হাউসে যোগ দেন বোল্টন এবং একই বছরের সেপ্টেম্বরে তিনি জানান, তিনি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদ ছেড়ে দেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

কিন্তু তখন ট্রাম্প বলেছিলেন, প্রেসিডেন্টের সাথে মতানৈক্য হবার কারণে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।- বিবিসি

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //