দাবানলের বছর ২০১৯

জ্বলেছে পৃথিবীর ফুসফুস: শুকনো মৌসুমে আমাজনের জঙ্গলে দাবানল একটা প্রচলিত ঘটনা। সেখানে শুকনো মরশুমের সময়কাল জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত। এবছরের প্রথম আট মাসে ব্রাজিলের জঙ্গলে ৭৫ হাজারের বেশি দাবানল হয়েছে। বিশ্বের বৃহত্তম রেইনফরেস্ট আমাজন ২০ শতাংশ অক্সিজেন একাই উৎপাদন করে। ব্রাজিলের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্পেস রিসার্চ উপগ্রহ থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে জানায়, চলতি বছর ব্রাজিলজুড়ে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৮৫ শতাংশ বেশি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। বেশিরভাগই ঘটেছে আমাজন অঞ্চলে। ফসল ফলানোর জন্য কৃষকরাই বন সাফ করছেন, এমন অভিযোগও উঠেছে। ছবিটি ব্রাজিলের রোনদোনিয়া রাজ্যের রেইনফরেস্ট থেকে ১০ সেপ্টেম্বর তোলা। ছবি: রয়টার্স

হুমকিতে জীববৈচিত্র্য: ব্রাজিলে এ বছর শুধু আমাজনেই আগুন লাগেনি। দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের কেরাডো তৃণভূমিতে আগুন লাগার ঘটনা আরো বেশি। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি জীববৈচিত্র্যে ভরপুর এ অঞ্চলটি সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ তালিকাতেও রয়েছে। তৃণভূমির অর্ধেকের বেশি সবুজ এলাকা এরই মধ্যে ধ্বংস হয়েছে। ছবি: ডয়চে ভেলে

পুড়ে শেষ ক্রান্তীয় জলাভূমি: বিশ্বের বৃহত্তম গ্রীষ্মমণ্ডলীয় জলাভূমি, প্যান্টানালও এ বছর দাবানলের শিকার হয়েছে। প্যান্টানাল জলাভূমির বেশিরভাগ অংশই ব্রাজিলে অবস্থিত, তবে বলিভিয়া ও প্যারাগুয়েতেও এর কিছু অংশ রয়েছে। এই বছরের আগুনের ঘটনার সংখ্যা অতীতের সব রেকর্ড ভেঙেছে। আট হাজার দাবানলের খবর মিলেছে এই এলাকায়। বলিভিয়াতেই ধ্বংস হয়েছে প্রায় ১২ লাখ হেক্টর বন। এ ঘটনাকে দেশটির ইতিহাসের বৃহত্তম জীববিপর্যয় বলে অভিহিত করেন বিজ্ঞানীরা। ছবি: ডয়চে ভেলে

ক্যালিফোর্নিয়ার বুশফায়ার: এ বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যে বেশ কয়েকবার দাবানলের ঘটনা ঘটেছে। প্রচণ্ড গরমে শুষ্ক আবহাওয়ায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে আগুন। মুহূর্তের মধ্যে পুরো এলাকা অগ্নিকুণ্ডে পরিণত হয়, ধ্বংস হয় ঘরবাড়ি। আগুনে মারা যান তিনজন। কয়েক হাজার মানুষ এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হন। ছবি: রয়টার্স

ইন্দোনেশিয়ার আগুনে ওরাংওটাংয়ের অস্তিত্ব হুমকিতে: ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা ও বোর্নিওতে ৪০ হাজার হেক্টরেরও বেশি এলাকাজুড়ে মাসখানেক ধরে আগুন জ্বলেছে। এরই মধ্যে অস্ত্বিত্বের হুমকিতে থাকা অনেক ওরাংওটাং এসব দাবানলে প্রাণ হারিয়েছে। যারা প্রাণে বেঁচেছে, তারাও হারিয়েছে পর্যাপ্ত বাসস্থান। এসব এলাকায় মাটির নিচে গাছের শক্ত শেকড় থাকায় আগুন নেভানোও বেশ কঠিন হয়ে পড়়ে। ছবি: রয়টার্স

আর্কটিকেও আগুন: বরফে আচ্ছাদিত আর্কটিক সার্কেলেও এ বছর আগুন লেগেছে। সাইবেরিয়াতে তিন মাস ধরে শত শত দাবানলে ৪০ লাখ হেক্টর বনভূমি পুড়ে গেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে রাশিয়াকে সেনা মোতায়েন পর্যন্ত করতে হয়। আলাস্কাতে ৪০০-রও বেশি আগুনের ঘটনা ঘটেছে। দাবানল ছড়িয়েছে কানাডা ও গ্রিনল্যান্ডেও। ছবি: ডয়চে ভেলে

অস্ট্রেলিয়ার বুশফায়ার: অস্ট্রেলিয়ায় এ বছর নজিরবিহীন বুশফায়ারের ঘটনা ঘটে। খরা, শুকনো তাপমাত্রা ও শুকনো বাতাসে ১০ লাখ হেক্টরের বেশি এলাকাজুড়ে আগুন জ্বলে। এতে চারজন মানুষের পাশাপাশি প্রাণহানি ঘটে অন্তত এক হাজার কোয়ালার। প্রাণীটিকে বিলুপ্তির ঝুঁকিতে থাকা একটি প্রজাতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ বছর এমন ঝুঁকিতে থাকা প্রাণীগুলোই দাবানলের ঘটনায় আরো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ছবি: রয়টার্স

গ্রিসেও দাবানল: গ্রিসের এভিয়ায় গ্যাভালাস গ্রামের কাছের দাবানলের আগুন নেভানোর চেষ্টা এক ফায়ার ফাইটারের। ছবিটি ৬ জুলিই তোলা। ছবি: রয়টার্স