শেষ মুহূর্তে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন চন্দ্রযান-২’র

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১১:৩৪ এএম | আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৭:০৫ পিএম

চাঁদের মাটি থেকে ২.১ কিলোমিটার উপরে থাকার সময় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় চন্দ্রযান-২’র। ছবি: সংগৃহীত

চাঁদের মাটি থেকে ২.১ কিলোমিটার উপরে থাকার সময় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় চন্দ্রযান-২’র। ছবি: সংগৃহীত

নেমে আসছিল নিখুঁতভাবেই। কিন্তু চাঁদের মাটি থেকে আকাশে ২.১ কিলোমিটার উপরে থাকার সময় ইসরো যোগাযোগ হারিয়ে ফেলে চন্দ্রযান-২ এর ল্যান্ডার বিক্রমের সঙ্গে। এভাবেই একেবারে শেষ মুহূর্তে থমকে যায় ভারতের স্বপ্ন। 

পৃথিবী থেকে ঠিক ৪৭ দিনের যাত্রা। একেবারে দিনক্ষণ মেপে চাঁদে নামছিল বিক্রম, দক্ষিণ মেরুর কাছে। যেখানে আজ পর্যন্ত আর কোনো দেশের যান পা রাখেনি। ভারতের দ্বিতীয় চন্দ্রযানের এই ল্যান্ডারের পেটে ছিল ছোট্ট চাঁদের গাড়ি বা রোভার প্রজ্ঞান। ঠিক ছিল ভোর হওয়ার আগেই খুলে যাবে বিক্রমের ডালা বা র‌্যাম্প। তার উপর দিয়ে গড়িয়ে নামবে প্রজ্ঞান। তারপরে বিক্রম প্রজ্ঞান শুরু করবে খোঁজ, কী কী আছে চাঁদের মাটিতে ও চাঁদের উপরে! অরবিটার তো আগে থেকেই ছবি তুলে চলেছে চাঁদের। যা দিয়ে তৈরি হবে পথিবীর একমাত্র উপগ্রহের ত্রিমাত্রিক মানচিত্র। কিন্তু তার আগেই ভারতীয় সময় রাত ১টা ৫৫ মিনিটে বিক্রমের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (ইসরো) বিজ্ঞানীদের নতুন অভিযানের উৎসাহ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, ‘আমরা পিছিয়ে পড়িনি… চাঁদে পৌঁছনোর জন্য আমাদের ইচ্ছাশক্তি আরো প্রবল হল, সংকল্প আরো দৃঢ় হল।’

চাঁদের ওই অংশটি এখনও মানুষের কাছে অজানা। সেখানে জমাট বরফ আকারে পানি থাকার বিষয়ে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হয়েছিলেন ভারতের চন্দ্রযান-১ অভিযান থেকে। কথা ছিল, ঠিকঠাক পৌঁছাতে পারলে চন্দ্রযান-২ এর রোভার প্রজ্ঞান নতুন তথ্য পাঠাবে পৃথিবীতে। সেখান থেকে হয়ত জানা যাবে, চাঁদের বুকে কতটা পানি কী অবস্থায় আছে। 

ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (ইসরো) বিজ্ঞানীরা বলছেন, ২২ জুলাই মিশন শুরুর পর সবকিছুই ঠিকঠাক চলছিল। তাদের সম্পূর্ণ নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি মহাকাশযান চন্দ্রযান-২ চাঁদের কক্ষপথে প্রবেশ করেছিল গত ২০ অগাস্ট।

ঠিক কী কারণে ল্যান্ডার থেকে সংকেত আসা বন্ধ হয়ে গেল, শেষ পর্যন্ত বিক্রমের ভাগ্যে কী ঘটেছে সে বিষয়গুলো এখনো জানতে পারেননি ভারতীয় মহাকাশ বিজ্ঞানীরা।  

ইসরোর তথ্য অনুসারে, চাঁদের সাথে ২.১ কিলোমিটার উচ্চতা পর্যন্ত যোগাযোগ ছিল কিন্তু তারপরে যোগাযোগটি হারিয়ে যায়। বর্তমান স্থিতি নিয়ে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। আসলে সম্পূর্ণ ঘটনাটি ইসরোর টেলিমেট্রি, ট্র্যাকিং এবং কমান্ড নেটওয়ার্ক কেন্দ্রের পর্দায় দেখা যাচ্ছিল, বিক্রম তার নির্ধারিত পথ থেকে কিছুটা বিচ্যুত হয় এবং তারপরে যোগাযোগ হারিয়ে যায়। 

বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ বলেছেন, এই মিশনটি এখনই ব্যর্থতা বলা যায় না। ল্যান্ডারটি আবার সংযুক্ত করা যেতে পারে। তাঁরা জানিয়েছেন, ল্যান্ডার ব্যর্থ হলেও 'চন্দ্রযান -২' এর কক্ষপথটি বেশ স্বাভাবিক এবং সেটি ক্রমাগত চাঁদকে প্রদক্ষিণ করছেন। ৯৭৮ কোটি টাকা খরচ করে গঠিত চন্দ্রযান-২ মিশন এখনো শেষ হয়ে যায়নি বলেই আশা করা হচ্ছে। -আনন্দবাজার পত্রিকা ও এনডিটিভি

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh