প্রতিনিধি, কক্সবাজার
প্রকাশ: ১৬ অক্টোবর ২০১৯, ০৯:২৯ এএম | আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৯, ০৩:৪৯ পিএম
পচে যাওয়া পেঁয়াজ খোলা জায়গায় ছড়িয়ে রাখা হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত
মিয়ানমার থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ কক্সবাজারের টেকনাফ স্থলবন্দরে পচে যাচ্ছে। খালাসে দেরি হওয়ায় এক সপ্তাহে প্রায় তিন হাজার বস্তা পেঁয়াজ পচে গেছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, বাজারে পেঁয়াজের কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে ব্যবসায়ীরা এমন কৌশল নিয়েছেন। এই অবস্থায় মিয়ানমার থেকে গত দুইদিন পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রাখেন ব্যবসায়ীরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, টেকনাফ স্থলবন্দরে পচে যাওয়া পেঁয়াজ খোলা জায়গায় রাখা হয়েছে। সেখান থেকে শ্রমিকরা ভাল পেঁয়াজ সংগ্রহ করছে। এমনকি নাফ নদীর তীরে পচা পেঁয়াজের বস্তা পরে থাকতে দেখা গেছে। এছাড়া দুইদিন আগে আসা বন্দরে পেঁয়াজ ভর্তি ছোট-বড় সাতটি ট্রলার ঘাটে খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে।
এদিকে পেঁয়াজের বাজার স্বাভাবিক রাখতে গতকাল মঙ্গলবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ জালাল উদ্দিনসহ একটি প্রতিনিধিদল টেকনাফ স্থলবন্দর ঘুরে দেখেন এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেন।
টেকনাফ শুল্ক স্টেশন ও স্থলবন্দর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মাসের ১৩ তারিখ পর্যন্ত মিয়ানমার থেকে আসা আট হাজার ৪৯৭ দশমিক ১১০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ খালাস করা হয়েছে। সর্বশেষ ১৩ অক্টোবর দুই হাজার ৮০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ মিয়ানমার থেকে আনা হয়। তবে এত বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি হলেও স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজের দাম কমছেনা বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
টেকনাফ সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এহতেশামুল হক বাহাদুর বলেন, 'গত এক সপ্তাহে খালাসে দেরি হওয়ায় আমদানিকৃত তিন হাজার পেঁয়াজের বস্তা নষ্ট হয়ে গেছে। এতে ব্যবসায়ীদের লাখ লাখ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। বন্দরে জনবল ও অবকাঠামোর অভাবে মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আসা কমে গেছে। তবে চার্জের কারণে রাতে বন্দর কর্তৃপক্ষ পেঁয়াজের ট্রাকে ছাড়পত্র দিচ্ছেন না। ব্যবসায়ীদের লোকসান কমাতে সরকারের কঠোর নজরদারি বাড়ানো দরকার বন্দরে।'
তবে টেকনাফ স্থলবন্দরের ব্যবস্থাপক জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা মিয়ানমার থেকে নিম্নমানের পেঁয়াজ আমদানি করায়, সেগুলো পচে যাচ্ছে। সেখান থেকে পেঁয়াজের ট্রলার এখানে পৌঁছাতে ১০ দিন সময় লাগে। মূলত বাজারে পেঁয়াজের কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে, এসব বাহানা করছে ব্যবসায়ীরা। বন্দর কর্তৃপক্ষ সাধ্যমত সেবা দিয়ে যাচ্ছে।’
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রবিউল হাসান বলেন, ‘বন্দর কর্তৃপক্ষের কিছু সমস্যা রয়েছে, সেগুলো দ্রুত সমাধানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মিয়ানমার থেকে আসা পেঁয়াজের ট্রলার দ্রুত খালাস করে ছেড়ে দিতে বলা হয়েছে। কেন পেঁয়াজ নষ্ট হচ্ছে, সে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’