প্রতিনিধি, মুন্সীগঞ্জ
প্রকাশ: ২২ অক্টোবর ২০১৯, ০২:০৮ পিএম | আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০১৯, ০৪:০১ পিএম
পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তে ২৩-২৪ নম্বর পিলারে স্থায়ীভাবে বসানো হলো ১৫তম স্প্যান। আজ মঙ্গলবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে স্প্যানটি বসানো হয়েছে। এর ফলে সেতুর ২২৫০ মিটার দৃশ্যমান হল।
৪-ই নম্বর এই স্প্যানটি জাজিরা প্রান্তে (প্রশাসনিক মাদারীপুর জেলা) সেতুর ২৩ ও ২৪ নম্বর পিলারে স্থাপন করা হয়।
এর আগে ধূসর রঙের ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৩ হাজার ১৪০ টন ওজনের স্প্যানটিকে মাওয়া কন্সট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে বহন করে নিয়ে যায় তিন হাজার ৬০০ টন ধারণ ক্ষমতার ‘তিয়ান ই’ ক্রেন।
১৫তম স্প্যানটি বেশ কয়েকদিন ধরে বসানোর জন্য পিয়ার ২৩-২৪ এর কাছে অবস্থান করছিল। কিন্তু নাব্যতা সঙ্কটের কারণে স্প্যানটি বসাতে বিলম্ব হয়। অনবরত ড্রেজিং করে স্প্যানবাহী জাহাজটি যথাস্থানে যাওয়ার জন্য পানির গভীরতা তৈরি করে স্প্যানটি আজ স্থাপন করা হয়।
এর আগে ১৪তম স্প্যান বসানো হয়েছিল গত ২৯ জুন। এ ব্যাপারে প্রকৌশলীরা জানান, বর্ষাকালে পদ্মা নদীতে প্রচুর পলি আসে। পলি জমে চ্যানেল প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। স্প্যান বহনকারী ক্রেনটি নাব্য সংকটের কারণে চলতে পারে না। তাই স্প্যান বসানোর শিডিউল এভাবে নির্ধারণ করা হয়।
এছাড়া আরো চারটি স্প্যান কন্সট্রাকশন ইয়ার্ডে আছে ও একটি চর এলাকায় ২৮ নম্বর পিয়ারের কাছে মোট পাঁচটি স্প্যান সম্পূর্ণ প্রস্তুত অবস্থায় রাখা আছে। এ স্প্যানগুলো অল্প সময়ের মধ্যে স্থাপন করা হবে।
এদিকে চীন থেকে পদ্মা সেতুর কন্সট্রাকশন ইয়ার্ডে আরো একটি স্প্যান পৌঁছেছে। এটা নিয়ে সেতুর মোট ৩১টি স্প্যান কন্সট্রাকশন ইয়ার্ডে পৌঁছাল। এসব তথ্য জানিয়ে পদ্মা সেতুর দায়িত্বশীল এক প্রকৌশলী জানান, মোট ৪১টি ট্রাস বা স্প্যানের মধ্যে চীন থেকে মাওয়া সাইটে এসেছে ৩১টি। এর মধ্যে ১৫টি স্প্যান পিয়ারে স্থাপন করা হয়েছে।
রেলওয়ে স্ল্যাবের জন্য ২৯৫৯ টি প্রি-কাস্ট স্ল্যাব প্রয়োজন হবে। এরমধ্যে ২৮৯১ টি স্ল্যাব তৈরির কাজ শেষ হয়েছে এবং বাকি স্ল্যাব আগামী নভেম্বরে তৈরি শেষ হবে। রেলওয়ে স্ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে ৩৬১টি। অন্যদিকে ২৯১৭টি প্রি-কাস্ট রোডওয়ে ডেক স্ল্যাবের মধ্যে ১৫৫৩ টির কাজ শেষ হয়েছে এবং ৫৪টি স্থাপন করা হয়েছে।
মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদী শাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো।
সেতুর বাস্তব কাজের অগ্রগতি ৮৪ শতাংশ এবং সেতুর আর্থিক অগ্রগতি ৭৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ এবং প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৭৪ শতাংশ।