শাওমির ১০৮ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরায় তোলা ছবির মান কেমন?

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ০৭ নভেম্বর ২০১৯, ০১:০০ পিএম | আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০১৯, ০৪:২৮ পিএম

শাওমির ১০৮ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরার নতুন ফোন।

শাওমির ১০৮ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরার নতুন ফোন।

চীনের প্রযুক্তি কোম্পানি শাওমি ১০৮ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরার মোবাইল ফোন বাজারে ছেড়েছে। জনপ্রিয় স্মার্টফোনগুলোর মধ্যে এত হাই রেজ্যুলেশনের ক্যামেরা এসেছে এই প্রথম।  

জানা যায়, আপাতত এমআইসিসি নাইন-প্রো-প্রিমিয়াম ফোনটি শুধু চীনের বাজারেই ছাড়া হবে। সেখানে এই ফোনটির প্রাথমিক মূল্য রাখা হয়েছে ২ হাজার ৭৯৯ ইউয়ান বা ৪০০ মার্কিন ডলার। 

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, শাওমির স্মার্টফোনে যুক্ত এই ক্যামেরার সেন্সর প্রস্তুত করেছে স্যামসাং। এরকম সেন্সর স্যামসাং এখনো পর্যন্ত তাদের নিজেদের তৈরি করা স্মার্টফোনেই ব্যবহার করেনি।

তারা দাবি করছে, এই ক্যামেরায় খুবই ঝকঝকে এবং সুস্পষ্ট ছবি তোলা যায়। এই ক্যামেরায় তোলা ছবির রেজ্যুলেশন অনেক বেশি, ধরা পড়ে অনেক খুঁটিনাটি।  

তবে এই ক্যামেরায় তোলা ছবিতে ডিজিটাল বিকৃতি অনেক বেশি। এর চেয়ে অনেক কম রেজ্যুলেশনের ক্যামেরায় তোলা ছবির ডিজিটাল বিকৃতিও এত বেশি নয়।

গবেষণা প্রতিষ্ঠান ক্যানালিসের তথ্য অনুযায়ী, স্মার্টফোন বিক্রির দিক থেকে শাওমি এখন বিশ্বে চার নম্বরে। স্মার্টফোনের বাজারে তাদের শেয়ার ৯ দশমিক ১ শতাংশ।

মিশে যাওয়া পিক্সেল

এতদিন পর্যন্ত ১০০ মেগাপিক্সেলের বেশি শক্তিশালী সেন্সর শুধু মিডিয়াম ফরম্যাট ডিজিটাল ক্যামেরাতেই দেখা গেছে। এসব ক্যামেরার দাম অনেক বেশি।

ছোট একটি স্মার্টফোনের মধ্যে এরকম অতি উচ্চমাত্রার রেজ্যুলেশনের সেন্সর বসানোর একটা বিপদ আছে। যখন একটি পিক্সেলের খুব কাছে আরেকটি পিক্সেল বসানো হয়, তাদের একটির বৈদ্যুতিক সংকেত আরেকটির ওপর গিয়ে পড়ে। এটিকে বলা হয় ক্রসটক। এতে করে ক্যামেরায় তোলা ছবিতে বিকৃতি অনেক বেশি ঘটে।

স্মার্টফোনের ক্যামেরায় যখন এরকম সেন্সর লাগানা হয়, তখন প্রতিটি পিক্সেলকে স্বাভাবিক আকারের চেয়ে ছোট হতে হয়, যাতে করে সব পিক্সেলের জায়গা হয়। এতে করে পিক্সেলগুলো যথেষ্ট আলো পায় না। ফলে এই ক্যামেরায় স্বল্প আলোতে ছবি তোলা নিয়ে সমস্যা হয়।

শাওমির নতুন ফোনে লাগানো স্যামসাংয়ের আইসোসেল প্লাস সেন্সর সমস্যাটি কিছুটা কাটিয়ে উঠতে পেরেছে। অন্যান্য স্মার্টফোনের সেন্সরের চেয়ে এই সেন্সরের আকার বড়।

এই প্রযুক্তিতে যেটা নতুন, তা হলো এখানে প্রতি চারটি পিক্সেলকে একটি করে গ্রুপে ফেলে সাজানো হচ্ছে। এই চারটি পিক্সেল লাল, সবুজ এবং নীল রঙ সনাক্ত করতে একই ধরনের কালার ফিল্টার শেয়ার করবে।

অর্থাৎ, এই চারটি পিক্সেল একসঙ্গে একটি পিক্সেলের মতোই আচরণ করবে। ফলে ক্যামেরায় তোলা ছবিটা হবে কার্যত ২৭ মেগাপিক্সেলের।

তবে ছবি তোলার সময় যদি যথেষ্ট আলো থাকে, তখন কেউ চাইলে ক্যামেরার সেটিং বদল করে ১০৮ মেগাপিক্সেলের ছবিই তুলতে পারে।

ডিজাইনে দুর্বলতা

এই ফোনটি বাজারে আসার আগেই সেটি পরীক্ষা করে দেখার সুযোগ পেয়েছিল রিভিউ ওয়েবসাইট ডিএক্সও মার্ক।

তারা এই ফোনটির কিছু দুর্বলতার কথা উল্লেখ করছে। প্রথমত, এটি দিয়ে তোলা ছবির মান অন্য খুবই উচু মানের ক্যামেরায় তোলা ছবির চেয়ে খারাপ।

এই ফোন দিয়ে খুব উজ্জ্বল আলো বা ছায়াময় স্থানে ছবি তুললে সেটার মানও অতো ভালো হয় না।

১০৮ মেগাপিক্সেল সেন্সর থাকায় এটি জনপ্রিয়তা পাবে বলে মনে করা হচ্ছে।

আরেকটি সমস্যা হচ্ছে ১০৮ মেগাপিক্সেলে ছবি তুললে তা ফোনের মেমোরির অনেক বেশি জায়গা দখল করবে। আর এরকম ছবি এডিটের ক্ষেত্রেও প্রসেসরের শক্তিক্ষয় বেশি হবে।

তবে এই ফোনে টেলিফোটো পোর্ট্রেট, ওয়াইড অ্যাঙ্গেল ল্যান্ডস্কেপ ও ম্যাক্রো ক্লোজ আপ শটের জন্য কম রেজোলিউশনের আলাদা সেন্সর আছে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh