ওয়াসার ভিন্ন প্রতিবেদনে হাইকোর্টের ক্ষোভ

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ০২ ডিসেম্বর ২০১৯, ১০:৩৭ পিএম | আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৯, ১০:৫১ এএম

ওয়াসার পক্ষ থেকে হাইকোর্টকে জানানো হয়েছে, বুড়িগঙ্গা নদীতে যে ৬৭টি প্রধান আউটলেট পতিত হয়েছে তার মধ্যে ঢাকা ওয়াসার ১৬টি। তবে এর আগে গত ১৮ জুন ওয়াসার দেওয়া এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বুড়িগঙ্গায় ওয়াসার কোনো সুয়ারেজ লাইন নেই। ওয়াসার এই দুই ধরনের প্রতিবেদনে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।

সুয়ারেজ লাইন নিয়ে বিআইডাব্লিউটিএ’র কাছে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালকের লেখা চিঠির ভাষাকে শুভংকরের ফাঁকি বলে উল্লেখ করেন। আদালত ওয়াসার আইনজীবীকে বলেন, একবার বললেন যে কোনো লাইন নেই। আবার বলছেন ১৬টি আছে। আপনাদের কোন রিপোর্ট সত্য। আদালতে কেন অসত্য রিপোর্ট দিলেন। আদালতে অসত্য তথ্য দেওয়া এটাতো ফৌজদারি অপরাধ। এটা শাস্তিযোগ্য। 

সোমবার (২ ডিসেম্বর) বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।

মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) করা এক আবেদনের ওপর শুনানিকালে আদালত উল্লেখিত মন্তব্য করেন।

আবেদনকারীপক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। ওয়াসার পক্ষে লিখিত জবাব দাখিল করেন ব্যারিস্টার এ এম মাছুম। তবে তিনি আদালতে না থাকায় আদালত ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তার পক্ষে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন তারই জুনিয়র অ্যাডভোকেট নাহিয়ান-ইবনে-সুবহান। পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আমাতুল করিম।

এর আগে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষে দাখিল করা প্রতিবেদনে বলা হয়, কেরানীগঞ্জের চর রঘুনাথপুর, কামরাঙ্গিরচর, জিনজিরা, সদরঘাট, ওয়াইজঘাট, বাদামতলী, বাবুবাজার, মিটফোর্ড, শামপুর, কদমতলী, ফতুল্লা, ধালাইখাল, মিলব্যারাক, ফরিদাবাদ, গোসাইবাড়ি, মিলব্যারাক মাজার, লালবাগের সোয়ারীঘাট ও নলখোলা এলাকায় ৫০টি স্থান দিয়ে ওয়াসার সুয়ারেজ লাইনের মাধ্যমে দূষিত বর্জ্য বুড়িগঙ্গায় ফেলা হচ্ছে। কিন্তু ওয়াসার আইনজীবীর স্বাক্ষরিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ওয়াসার সুয়ারেজ লাইন দিয়ে বুড়িগঙ্গার কোথাও বর্জ্য ফেলা হয় না। 

এই দুই প্রতিবেদন দেখার পর গত ১৭ নভেম্বর ওয়াসার এমডিকে শোকজ করেন হাইকোর্ট। শোকজ নোটিশ আদালতের আদেশ অমান্য করা এবং মিথ্যা তথ্য দেওয়ায় কেন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়। ১৫ দিনের মধ্যে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়। এ অবস্থায় ওয়াসার এমডির একটি জবাব হাইকোর্টে দাখিল করা হয়। তাতে ২০১১ সালে হাইকোর্টের দেওয়া রায় যথাযথ বাস্তবায়ন না করায় নিঃশর্ত ক্ষমা চান। তার জবাবের সঙ্গে বিআইডাব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যানকে দেওয়া একটি চিঠি তুলে ধরা হয়। 

এতে বলা হয়, আপনাদের প্রতিবেদনে দাবি করা ওয়াসার ৫৮টি সুয়ারেজ লাইন বুড়িগঙ্গা নদীতে পতিত হয়েছে সেই সুয়ারেজ লাইনের আউটলেট/উৎসমুখ ঢাকা ওয়াসা ও বিআইডাব্লিউটিএ’র প্রতিনিধিদের  সরেজমিনে যৌথ পরিদর্শনে দেখিয়ে দেয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করা হলো।

এই প্রতিবেদন দেখে আদালত বলেন, এটাতো শুভংকরের ফাঁকি। দায়িত্ব এড়ানোর জন্য এ ধরণের প্রতিবেদন দেওয়া হয়। 

শুনানিতে আদালতে অসত্য প্রতিবেদন দেওয়ায় ওয়াসার দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানান। তবে শুনানিকালে ওয়াসার মূল আইনজীবী না থাকায় আদালত আজ মঙ্গলবার আদেশের জন্য দিন ধার্য করেন।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh