গুজরাটে কলেজে অন্তর্বাস খুলিয়ে ছাত্রীদের হেনস্থা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১২:৩৪ পিএম | আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১২:৩৫ পিএম

ঋতুচক্র চলছে কি না, তা যাচাই করতে ভারতের গুজরাটের এক কলেজে ৬৮ জন ছাত্রীর অন্তর্বাস খুলিয়ে পরীক্ষার অভিযোগ উঠেছে। 

অভিযোগ খতিয়ে দেখতে একটি তদন্তকারী দল গঠন করেছে জাতীয় মহিলা কমিশন। কলেজ কর্তৃপক্ষ ও ছাত্রীদের সাথে তারা কথা বলবেন বলে কমিশন জানিয়েছে।

গুজরাটের ভুজ এলাকার শ্রী সহজানন্দ গার্লস ইনস্টিটিউট (এসএসজিআই) নামে মেয়েদের এই কলেজটি পরিচালনা করেন স্বামী নারায়ণ মন্দিরের অনুগামীরা। স্নাতক স্তরে প্রায় ১৫০০ ছাত্রী সেখানে পড়াশোনা করেন। তাদের মধ্যে প্রত্যন্ত এলাকা থেকে আসা ৬৮ জন ছাত্রী থাকেন হোস্টেলে। 

ছাত্রীনিবাসের ওই আবাসিকেরাই হেনস্থার অভিযোগ তুলেছেন। তারা জানান, কলেজে বিশেষ করে হোস্টেলে তাদের অনেক নিয়ম মানতে হয়। যেমন ঋতুকালীন অবস্থায় রান্নাঘর বা মন্দিরের কাছাকাছি যাওয়া বারণ। এমনকি অন্য সহপাঠীদের ছোঁয়াও নিষেধ। ছাত্রীরা সেই সব নিয়ম মানছেন না বলে বুধবার তাদের ভৎসনা করেন হস্টেলের ওয়ার্ডেন অঞ্জলিবেন। তিনি ছাত্রীদের বিরুদ্ধে কলেজের অধ্যক্ষ রীতা রানিনগার কাছে নালিশ জানান। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রীর অভিযোগ, বৃহস্পতিবার ক্লাস চলাকালীন তাদের বাইরে বেরিয়ে আসতে বলেন অধ্যক্ষ। নিয়মভঙ্গের অভিযোগে প্রথমে তাদের ধমক দেয়া হয়। এরপরে যাদের ঋতুচক্র চলছে তাদের আলাদা করে দাঁড়ানোর নির্দেশও দেন রীতাদেবী। দুই ছাত্রী তাতে সরে দাঁড়ান। বাকি পড়ুয়ারা সত্যি বলছেন কি না, তা যাচাই করতে ছাত্রীদের হোস্টেলের শৌচাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। 

অভিযোগ, সেখানে প্রত্যেকের অন্তর্বাস খুলে পরীক্ষা করেন শিক্ষিকারা। আবাসিক ছাত্রীদের আরো নালিশ, ঋতুচক্র চলাকালীন তাদের প্রায়ই হেনস্থা হতে হয়। নানাভাবে তাদের মনে করানো হয়, বিষয়টি ঘৃণ্য ও অপবিত্র। তবে এ বিষয়ে এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ক্ষুব্ধ অভিভাবক ও ছাত্রীরা জানান, বিষয়টি কলেজের পরিচালন সমিতির সদস্য প্রবীণ পিন্ডোরিয়াকে জানালে তিনি ঘটনাটি চেপে যাওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকেন। এমনকি পুলিশের কাছে গেলে ছাত্রীদের হোস্টেল ছাড়তে হবে বলেও হুমকিও দেন। কলেজে এ সব কিছুই ঘটেনি- এমন বয়ান লেখা একটি চিঠি সই করতে বলা হয় পড়ুয়াদের। এ বিষয়ে পিন্ডোরিয়ার সাথে সংবাদমাধ্যমের তরফে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে চাননি। ফোন বা মেসেজের জবাব দেননি অধ্যক্ষা রীতাদেবীও।

কলেজের পরিচালন সমিতির আর এক সদস্য পি এইচ হিরানি অবশ্য ঘটনাটির কথা স্বীকার করে বলেছেন, নামমাত্র বেতনের বিনিময়ে এখানে পড়ার সুযোগ পান মেয়েরা। প্রতিষ্ঠান চত্বরে মন্দির থাকায় মেয়েদের কিছু ধর্মীয় রীতিনীতি মেনে চলতে বলা হয়। তবে ছাত্রীদের সাথে যা ঘটেছে তা ঠিক নয়। উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

এই ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গড়ার নির্দেশ দিয়েছে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দর্শনা ঢোলকিয়া। তিনি বলেছেন, যে বা যারা এই ঘটনার জন্য দায়ী তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেয়া হবে। -আনন্দবাজার পত্রিকা

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh