নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪ এপ্রিল ২০২০, ০২:১২ পিএম | আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২০, ০২:১৩ পিএম
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে (কভিড-১৯) সৃষ্ট সংকট মোকাবিলায় সরকারকে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি ২৭ দফা প্রস্তাবনা দিয়েছে বিএনপি।
এর মধ্যে জিডিপির তিন শতাংশ অর্থাৎ ৮৭ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ প্রণোদনা ঘোষণার প্রস্তাবও রয়েছে।
এর মধ্যে স্বল্পমেয়াদী খাতে ৬১ হাজার কোটি টাকা, মধ্য মেয়াদী খাতে ১৮ হাজার কোটি টাকা এবং অতিরিক্ত আরো ৮ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করেছে দলটি।
আজ শনিবার (৪ এপ্রিল) বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে এসব প্রস্তাবনা তুলে ধরেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
করোনাভাইরাসে সৃষ্ট সংকট মোকাবিলায় জাতীয় ঐকমত্যের ডাক দেন তিনি এবং করোনা পরীক্ষা না করার সমালোচনা করে বলেন, এটা কি উদাসীনতা না উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তা বোধগম্য নয়। এজন্য জাতিকে চড়া মূল্য দিতে হতে পারে।
তিনি বলেন, দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। এখন প্রয়োজন পরীক্ষার কিট ও চিকিৎসক-নার্সদের জন্য পিপিই সরবরাহ নিশ্চিত করা। জেলা-উপজেলা পর্যায়ে পর্যাপ্ত পরীক্ষা কিট, সম্পূর্ণ পৃথক কোয়ারেন্টিন ও আইসোলেশন কেন্দ্র স্থাপন, পর্যাপ্ত আইসিইউ স্থাপন ও ভেন্টিলেটর সরবরাহ, নিরাপদ দূরত্বে সম্পূর্ণ পৃথক হাসপাতাল স্থাপন করা।
তিনি আরো বলেন, এই মুহূর্তে ডেঙ্গু দরজায় কড়া নাড়ছে। ইতোমধ্যে গত বছরের তুলনায় ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে রোগী ভর্তি হচ্ছে। শাটডাউনের কারণে এডিস মশা নিধন কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়েছে। এছাড়া কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যাতে করোনাভাইরাস না ছড়ায় সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
বিএনপির প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, করোনার সংক্রমণ যে কেবল বৈশ্বিক মহামারির সৃষ্টি করেছে তাই নয়, এতে বিশ্বজুড়ে এক মহা অর্থনৈতিক মন্দার ঝুঁকি দেখা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও কোরিয়াসহ অনেক রাষ্ট্র করোনা ভাইরাসের নেতিবাচক প্রভাবের মুখে স্ব স্ব জিডিপির একটি উল্লেখযোগ্য অংশের বড় অর্থনৈতিক রিকভারি প্যাকেজ ঘোষণা করেছে।
বিএনপির পক্ষে ইতোমধ্যে করোনাভাইরাস নিয়ে বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। এখন আমরা শুধু অর্থনৈতিক ক্ষেত্রের জন্য কতগুলো পদক্ষেপ এর প্রস্তাব রাখছি। এর মধ্যে কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে স্বল্প-মেয়াদী অনতিবিলম্বে, আর সময়ক্ষেপণ না করে। কিছু মধ্যমেয়াদে ও কিছু দীর্ঘমেয়াদী।
আমাদের প্রদত্ত সুপারিশসমূহ বাস্তবায়নের জন্য জিডিপির ৩% অর্থ সমন্বয়ে ৮৭ হাজার কোটি টাকার একটি বিশেষ তহবিল ঘোষণা করতে হবে । শাটডাউন প্রত্যাহার হলে নতুন করে একটি সংশোধিত আর্থিক প্যাকেজ প্রদান করতে হবে, যেন সকল সেক্টরের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সাধারণ-ছুটি-পূর্ব স্তরে ফিরে আসতে সক্ষম হয়।
বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে দ্রুত সাহায্য পৌঁছাতে হবে- দৈনিক মজুরিভিত্তিক গ্রুপ, অপ্রাতিষ্ঠানিক সেক্টর, আত্মকর্মসংস্থানকারী, গ্রামীণ ভূমিহীন কৃষক, কৃষি শ্রমিক, মাইগ্রেন্ট ওয়ার্কার্স গণপরিবহন শ্রমিক, রোড সাইড ভেন্ডর, সকাল-বিকাল ভিন্ন জায়গায় কাজ করে উপার্জনকারী গ্রুপ ইত্যাদি।