আমফানের তাণ্ডবে পশ্চিমবঙ্গে ব্যাপক ক্ষতি

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ২১ মে ২০২০, ০৯:৫০ এএম

সুপার সাইক্লোন আমফানের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে ভারতের কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গের সমুদ্র উপকূলীয় বিভিন্ন এলাকা। অন্তত ১০-১২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে বলে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ঝড়টি পুরোটাই পশ্চিমবঙ্গের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে। এতে উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা ‘ধ্বংস’ হয়ে গেছে, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে, প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

গতকাল বুধবার (২০ মে) দুপুর আড়াইটার দিকে ঘূর্ণিঝড়টি স্থলভূমিতে ঢুকে পড়তে শুরু করে এবং সন্ধ্যায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন উপকূলে আছড়ে পড়ে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে কলকাতায় ঘণ্টায় প্রায় ১৩৩ কিলোমিটার বেগে বয়ে যায় ঝড়ো হাওয়া।

এর জেরে লণ্ডভণ্ড হয় কলকাতাসহ দুই চব্বিশ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুর। হাওড়া, হুগলি ও পশ্চিম মেদিনীপুরেরও হাজার হাজার কাঁচা ঘরবাড়ি ও গাছপালা ভেঙে পড়েছে। ক্ষয়ক্ষতি আরো বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। 

আবহাওয়া বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল (পূর্বাঞ্চল) সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, সুন্দরবন-সহ উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপকূলে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৮৫ কিমি বেগে ঝড় বয়ে গিয়েছে। আইলার সময়ে উপকূলবর্তী এলাকায় ঝড়ের সর্বোচ্চ বেগ ছিল ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার। আর কলকাতায় আয়লার গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার। এ দিন আমফানের তাণ্ডবের সময়ে দমদমে ঝড়ের সর্বোচ্চ বেগ ছিল ঘণ্টায় ১৩৩ কিলোমিটার ও কলকাতার আলিপুরে ১১৪ কিলোমিটার। রাত পর্যন্ত কলকাতায় বৃষ্টি হয়েছে ২৪৪.২ মিলিমিটার। 

তিনি আরো বলেন, কলকাতায় তাণ্ডব চালিয়ে ঝড়টি নদিয়া ও মুর্শিদাবাদের দিকে বয়ে গিয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (২১ মে) সকালে সেটি বাংলাদেশে ঢুকতে পারে। তবে তার প্রভাব আজ বাংলাদেশ লাগোয়া জেলাগুলোতে পাওয়া যাবে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেন, মৃতের সংখ্যাটা এখনি বলা যাচ্ছে না। ১০-১২ জনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হতে পারে ১ লাখ কোটি রুপি। পশ্চিমবঙ্গে ঘূর্ণিঝড় আমফানের প্রভাব করোনভাইরাস মহামারির চেয়েও মারাত্মক। 

তিনি বলেন, উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এবং পশ্চিমবাংলাকে সবকিছু পুনর্নির্মাণ করতে হবে।

উপকূলীয় সুন্দরবন, দিঘাসহ দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বহু এলাকা, মন্দারমণি, শংকরপুর, তাজপুর, কুলপি, পাথরপ্রতীমা, নামাখানা, বাসন্তী কুলতলি, বারুইপুর, সোনারপুর, ভাঙড়, কাকদ্বীপ মিনাখাঁ, রাজারহাট, বনগাঁ, বাগদা, হাবড়া, হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালি, হাসনাবাদ, হাড়োয়াসহ উত্তর চব্বিশ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বিস্তীর্ণ অংশ বিধ্বস্ত হয়ে গেছে।

পানির তোড়ে ভেসে গেছে সড়ক, সেতু, বাড়িঘর। ভেঙে গেছে বহু নদীর বাঁধ, নষ্ট হয়েছে চাষের জমি। আম্পানের প্রভাবে সমুদ্রের জলোচ্ছ্বাস বেড়েছে। ঝড়ের দাপট বিকেলের পর থেকে বেড়ে যায় বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সকাল থেকেই ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি শুরু হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গে।

কলকাতার আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত চলতে থাকবে এ দুর্যোগ। পূর্ব-পশ্চিম মেদিনীপুর, বর্ধমান, হুগলিতেও প্রবল বৃষ্টিপাত হবে। ঝড় বইবে ৭০-৮০ কিলোমিটার বেগে। উত্তরবঙ্গেও মালদা, উত্তর দিনাজপুরে সকাল থেকেই বৃষ্টি বাড়বে। এরপর ধীরে ধীরে কমবে ঝড়ের গতিবেগ। -আনন্দবাজার পত্রিকা ও এনডিটিভি

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh