যেসব কিংবদন্তিকে কখনো কিনতে পারেনি রিয়াল

খলিলুর রহমান

প্রকাশ: ২৯ জুন ২০২০, ০১:৫৬ পিএম

কোনো খেলোয়াড়কে মনে ধরলে, তাকে কিনেই ছাড়ে রিয়াল মাদ্রিদ। টাকার কথা ভাবে না। খেলোয়াড়দের কেনা-বেচার যুগ শুরু হওয়ার পর থেকেই এই সুনাম ধরে রেখেছে রিয়াল। তাদের এই সুনামের কথা সারা দুনিয়া জানে। 

কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে রবার্ট লেভান্ডভস্কির ক্ষেত্রে রিয়ালের এই সুনামে বড়সড় একটা ধাক্কা খেয়েছে।

পোলিশ এই ফরোয়ার্ডকে অনেক দিন ধরেই কেনার চেষ্টা করে যাচ্ছে রিয়াল; কিন্তু টাকার বস্তার লোভ দেখিয়েও রিয়াল ৩১ বছর বয়সী লেভান্ডভস্কিকে বায়ার্ন মিউনিখ থেকে বের করতে পারছে না। 

ইউরোপিয়ান দলবদলের নতুন মৌসুম যেহেতু শুরু হওয়ার অপেক্ষায়, এই করোনা মহামারির মধ্যেও তাই বিশ্ব তারকা ফুটবলারদের দলবদল গুঞ্জন তুঙ্গে। এবারো যথারীতি আলোচনার তুঙ্গে বায়ার্ন ছেড়ে লেভান্ডভস্কির রিয়ালে যোগ দেয়ার বিষয়টি।

এবারো রিয়ালের লেভান্ডভস্কির আশা পূরণ হবে কিনা, সেটা সময়ে হয়তোবা বলবে। তবে এই গুঞ্জনকালীন সময়ে লেভান্ডভস্কির এজেন্ট ফাঁস করেছেন গোপন এক তথ্য। এর আগে ২০১৩ ও ২০১৪ সালে দু’বার লেভান্ডভস্কির সঙ্গে চুক্তির কথা বার্তা পাকা করেছিল রিয়াল; কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই পাকা কথাও ভেস্তে গেছে। সবকিছু ঠিকঠাক করেও অতি পছন্দের লেভান্ডভস্কিকে রিয়াল নিজেদের তাঁবুতে তুলতে পারেনি।

শুধু লেভান্ডভস্কিকে নিয়েই রিয়ালের এই ‘কিনেও না কিনতে পারার হতাশা’ তা নয়। স্পেনের জনপ্রিয় ক্রীড়া দৈনিক মার্কার বর্ষীয়ান ফুটবল লেখক হুয়ান ইগনাসিও গার্সিয়া ওচুয়া ইতিহাসের পাতা ঘেটে তুলে এনেছেন, এর আগেও বেশ কয়েকজন কিংবদন্তি ফুটবলারকে ‘কিনেও না কিনতে পারার’ চির হতাশায় পুড়তে হয়েছে রিয়ালকে।

রিয়াল শিবিরে চির আক্ষেপের নাম হয়ে থাকা সেই তালিকার এক নম্বরে রয়েছেন আর্জেন্টাইন ফুটবল ঈশ্বর ডিয়েগো ম্যারাডোনা। ১৯৮২ সালে রিয়াল মাদ্রিদের কোচের দায়িত্বে ছিলেন আর্জেন্টাইন-স্প্যানিশ কিংবদন্তি আলফ্রেডো ডি স্টেফানো। দায়িত্ব নিয়েই তিনি স্বদেশী ম্যারাডোনাকে কেনার জন্য হাত বাড়ান।

মারাডোনার তৎকালীন ক্লাব বোকা জুনিয়ার্সের সাথে কথাবার্তা চূড়ান্তও করে ফেলেন আলফ্রেডো ডি স্টেফানো। কোনো এক অদৃশ্য খেলায় যেন রিয়ালের নাকের ডগা থেকে ম্যারাডোনাকে ছিনিয়ে নেয় তাদেরই চিরশত্রু বার্সেলোনা। রিয়ালে যেতে চেয়ে হুট করেই বার্সেলোনায় যোগ দেয়া ম্যারাডোনা সেখানে দুই মৌসুম কাটিয়ে ১৯৮৪ সালে যোগ দেন ইতালিয়ান ক্লাব নাপোলিতে। 

রিয়াল শিবিরে একই রকম হতাশার নাম হয়ে আছেন ডাচ কিংবদন্তি রুদ খুলিত। ১৯৮৭ সালে এই ডাচ তারকাকেও কেনার সব আয়োজন চূড়ান্ত করে ফেলেছিলেন রিয়ালের তৎকালীন সভাপতি রেমন কালদেরন; কিন্তু দলবদলের শেষ মুহূর্তে রিয়ালকে চতুরতার খেলায় হারিয়ে দেয় ইতালিয়ান ক্লাব এসি মিলান। পছন্দের খেলোয়াড় ক্রয়ে দুই হাতে টাকা ঢালা যাদের চির স্বভাব, সেই রিয়ালকে টেক্কা দিয়ে বেশি দামে রুদ খুলিতকে কিনে নেয় এসি মিলান। 

রিয়ালকে একই রকম হতাশায় পুরতে হয়েছে দুই জার্মান কিংবদন্তি লোথার ম্যাথাউস, ইয়র্গেন ক্লিন্সমান, সাবেক দুই ফরাসি তারকা থিয়েরি অঁরি, প্যাট্রিক ভিয়েরা, ইতালিয়ান কিংবদন্তি ফ্রান্সেস্কা টট্টি ও স্বদেশী মানে স্পেনের সাবেক ফরোয়ার্ড ডেভিড ভিয়ার ক্ষেত্রেও। 

সময়ের স্রোতে এদেরকেও কেনার সব আয়োজন চূড়ান্ত করে ঘরে তোলার অপেক্ষায় থেকেছে রিয়াল; কিন্তু অদৃশ্য অশুভ শক্তির কারসাজিতে এদেরকেও শেষ পর্যন্ত হাতছাড়া করার আক্ষেপে পুড়তে হয়েছে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh