ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ২৯ জুন ২০২০, ০২:২৫ পিএম
ছবি: ডয়চে ভেলে
ভারত-চীন সংঘাত পর্বে কাশ্মীরে দুইটি নতুন বিজ্ঞপ্তি নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। ভারত-চীন সংঘাতের কারণেই এই বিজ্ঞপ্তি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ভারত-চীন সীমান্ত সংঘাত অব্যাহত। দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় বৈঠক হলেও এখনো পর্যন্ত কোনো স্থায়ী সমাধানের রাস্তা খোলেনি। তারই মধ্যে কাশ্মীরে সরকারের একটি বিজ্ঞপ্তি নতুন করে জল্পনা বাড়িয়েছে।
জম্মু ও কাশ্মীরের বড় কোম্পানিগুলোকে সরকার জানিয়েছে, আগামী দুই মাসের জন্য এলপিজি স্টক করে রাখতে হবে।
সাধারণত শীতকালে কাশ্মীর ও লাদাখে এ ধরনের বিজ্ঞপ্তি জারি করে সরকার। বরফ পড়ে রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ার জন্য এ ধরনের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। কিন্তু গরমকালে কেন এই বিজ্ঞপ্তি জারি হলো, তা নিয়ে প্রবল জল্পনা শুরু হয়েছে।
শুধু তাই নয়, লাদাখ সীমানার দিকে কাশ্মীরের একটি জেলায় আরো একটি বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে। ওই অঞ্চলের প্রতিটি সরকারি স্কুলকে অনুরোধ করা হয়েছে, সেনা জওয়ানদের থাকার জন্য স্কুল বাড়িগুলো যেন ছেড়ে দেয়া হয়।
তবে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন জম্মু ও কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আব্দুল্লাহ।
সরকার অবশ্য জানিয়েছে, দুইটি বিষয় নিয়েই আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। জম্মু-শ্রীনগর হাইওয়ের ওপর বার বার ধস নামার কারণেই এলপিজি স্টক করার কথা বলা হয়েছে। এর সাথে অন্য কোনো বিষয় জড়িয়ে নেই। সেনাবাহিনীর জন্য স্কুল বাড়ি ছেড়ে দেয়ার প্রসঙ্গে সরকারের বক্তব্য, অমরনাথ যাত্রার জন্য এই বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে।
করোনার কারণে এ বছর প্রায় সমস্ত ধর্মীয় উদযাপনই বন্ধ রেখেছে সরকার। অমরনাথ যাত্রা নিয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। কিন্তু যাত্রা যে খুব বড় আকারে হবে না, তা একপ্রকার ধরেই নিয়েছেন সকলে। ফলে প্রতি বছর অমরনাথ যাত্রার জন্য যে অতিরিক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হতো, এ বছর তা করতে হবে না। ফলে এত সংখ্যক সেনা জওয়ান কেন সেখানে নিয়ে যেতে হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
বিশেষজ্ঞদের অনেকরই ধারণা, ভারত-চীন সীমান্ত সংঘাতের জন্যই কাশ্মীর উপত্যকাতেও এই বিজ্ঞপ্তিগুলো জারি করেছে সরকার। ভারত ও চীনের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা জারি রয়েছে। কূটনৈতিক ক্ষেত্রে যেমন একের পর এক বৈঠক হচ্ছে, তেমন দুই দেশের সেনা বাহিনীও একের পর বৈঠক করছে।
সেনাবাহিনী সূত্রে জানা যাচ্ছে, বৈঠকে দুইটি শব্দ অত্যন্ত গুরুত্ব পাচ্ছে। এক, ক্ল্যাশ বা সংঘর্ষ ও দুই, ফাইট বা যুদ্ধ।
সূত্র জানাচ্ছে, সপ্তাহখানেক আগে ভারত ও চীন দুই পক্ষই একটি সমঝোতায় এসেছিল। ঠিক হয়েছিল সংঘাত এড়িয়ে এখন দুইপক্ষই সীমান্ত থেকে সেনা সরিয়ে নেবে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত তা ঘটেনি।
ভারতের দাবি, শুধু গালওয়ান নয়, প্যাংগং থেকেও কাঠামো সরিয়ে পিছোতে হবে চীনের সেনাকে। সাম্প্রতিক বেশ কিছু স্যাটেলাইট ইমেজ থেকে স্পষ্ট চীন গত কয়েক দিনে আরো বেশ কিছু নতুন কাঠামো তৈরি করেছে সীমান্তে। ফলে এখনই সমস্যার সমাধান হবে বলে মনে করা হচ্ছে না।
সেনাবাহিনীর সূত্র জানাচ্ছে, যেকোনো সময় বড় ধরনের সংঘাতের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে ভারত এবং সেই সূত্রেই কাশ্মীর সীমান্তেও কোনো ঝুঁকি নেয়া হচ্ছে না। বিজ্ঞপ্তিগুলো সে কারণেই জারি করা হয়েছে। -ডয়চে ভেলে