রিক্তা রিচি
প্রকাশ: ১৪ জুলাই ২০২০, ০৪:৪২ পিএম
তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে ছোট-বড় সবাই স্মার্টফোন, ইন্টারনেট নিয়ে ব্যস্ত। তবে বড়দের চেয়ে শিশুদের ক্ষতি হয় বেশি। এখন প্রায় প্রতিটি পরিবারে শিশুরা বাবা মায়ের ব্যবহার করা স্মার্টফোন নিজেরা চালায়। ইউটিউবে বিভিন্ন ভিডিও গান দেখে, নাচ দেখে, কার্টুন দেখে।
স্মার্টফোনে গান, নাচ, কার্টুন না দেখলে তারা খেতে চায় না, ঘুমাতে চায় না। এমনকি শিশুর কান্নারত অবস্থায় মোবাইল থেকে গান ছেড়ে দিলে তারা কান্না থামিয়ে নাচতে থাকে। প্রযুক্তির ইতিবাচক প্রভাব অবশ্যই সকলের জন্য আশীর্বাদ। তবে নেতিবাচক প্রভাব এবং অত্যধিক আসক্তি কখনোই কাম্য নয়।
গবেষকরা বলছেন, মোবাইল ফোন শিশুদের মধ্যে এতটা প্রভাব বিস্তার করেছে যে, শিশুদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন কেড়ে নিলে তারা রেগে যায়, কান্না করে এবং নেতিবাচক আচরণ করে।
মনস্তাত্ত্বিকেরা দাবি করছেন ব্যবহৃত স্মার্ট ফোন শিশুদের মনোজগতে ব্যাপক পরিবর্তন আনছে।
তারা বলেন এখনকার শিশুরা স্মার্টফোনে গান, ভিডিও না দেখে খেতে চায় না। তারা মনে করেন শিশু কিশোরদের মধ্যে স্মার্টফোন ও বাস্তব জগতের যোগাযোগের মধ্যে সীমানা তৈরি করার অতীব জরুরি। কারণ অতিমাত্রায় স্মার্টফোনে আসক্তি গড়ে উঠলে শিশুদের মানসিক ও শারীরিক নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।
তাছাড়া বেশিরভাগ সময় স্মার্টফোনে আসক্ত থাকার ফলে শিশুরা সামাজিক যোগাযোগে অদক্ষ হয়ে পড়ে। তাদের আচরণগত সমস্যা দেখা দেয়। এমনকি অল্প বয়সে তাদের দৃষ্টিশক্তি কমে যায়। তাদের কথা বলতে দেরি হয়, শব্দভান্ডার বৃদ্ধি পায় না।
আমেরিকান অ্যাকাডেমি ও পেডিয়াট্রিকস বিশেষজ্ঞরা মনে করেন অন্তত দুই বছরের আগে শিশুদের প্রযুক্তি পণ্য তথা স্মার্টফোনের সাথে পরিচিত করানো উচিত নয়। তারা আরো জানান তিন থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশুদের দৈনিক এক ঘন্টা স্মার্টফোন ব্যবহার করতে দেয়া যেতে পারে।
ভারতের চার্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা থেকে জানা যায়, স্মার্টফোনের অধিক ব্যবহার চোখের রেটিনা, কর্নিয়া এবং অন্যান্য অংশকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। গবেষকরা আরো বলেন শিশুকে অন্তত দুই ঘন্টা বাইরে খেলতে দিলে ধীরে ধীরে তার স্মার্টফোনের প্রতি আসক্তি কমে যাবে।
মোট কথা শিশুকে ঘরে বদ্ধ করে না রেখে বাইরের পরিবেশের সাথে মিশতে দিতে হবে, খেলাধুলা করতে দিতে হবে। গল্প ও সৃজনশীল বই পড়ায় আগ্রহী করে তুলতে হবে।
অধিক পরিমাণে স্মার্টফোন ব্যবহারের ফলে শিশুদের মানসিক ও শারীরিক গঠন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শিশুর স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে যায়। পড়াশুনায় অনীহা আসে। শিশুর মানসিক বিকাশ, সৃজনশীলতা বৃদ্ধি বাধাগ্রস্থ হয়।