পণ্য খালাশ ও রাজস্ব ফাঁকি রোধে কঠোর বেনাপোল কাস্টমস

যশোরের বেনাপোল বন্দর দিয়ে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে গতিশীলতা, দ্রুত পণ্য খালাশ ও রাজস্ব ফাঁকি রোধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।

বেনাপেল বন্দর ব্যবহারকারী সিএন্ডএফ এজেন্টস,ও কাস্টমস কর্মকর্তাদের সাথে গতকাল রবিবার (২১ জুন) এক জুম ভিডিও কনফারেন্সে কঠোর অবস্থানের কথা জানান বেনাপোল কাস্টমস হাউসের কমিশনার বেলাল হোসাইন চৌধুরী। 

রাজস্ব ফাঁকির সাথে জড়িত আমদানিকারক ও সিএন্ডএফ এজেন্টদের কালো তালিকাভুক্ত করে তাদের পণ্য চালান শতভাগ কায়িক পরীক্ষা করা হবে। আর যাদের বিরুদ্ধে রাজস্ব ফাঁকির কোনো অভিযোগ নেই তাদের পণ্যচালান ‘ডি’ মার্কের মাধ্যমে কোনো পরীক্ষা ছাড়াই খালাশ দেয়া হবে।

কেমিকেল জাতীয় পণ্যচালান কেমিকেল ল্যাবে পরীক্ষা করার পর ফলাফলের ভিওিতে শুল্কায়ন করে খালাশ দেয়া হবে বলে কনফারেন্সে বলা হয়। 

বন্দরে ওয়েইং স্কেলের ওজনের ভিওিতে পণ্যের শুল্কায়নের বিষয়ে বলা হয়, বন্দরে স্কেলগুলোতে এক একটির ওজন এক এক রকম হওয়ায় জটিলতা দেখা দিচ্ছে। এটি অবশ্যই বিবেচনায় নেয়া হবে, এটিকে পুঁজি করে কেউ স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে বেলাল চৌধুরী বলেন, গত ৪ জুন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বেনাপেল বন্দর দিয়ে সাইড ডোর রেল কার্গো চালুর নির্দেশনা দিয়েছে। সেই সাথে রেল টার্মিনাল ইয়ার্ড তৈরির ও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

স্বাধীনতার পর চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বেনাপোল বন্দর দিয়ে শুরু হয় রেলের মাধ্যমে পণ্য আমদানি। মাত্র ১২ দিনে ৩০ কোটি টাকার রাজস্ব আয় হয় সরকারের। 

স্থলপথে যেখানে প্রতিদিন ৫/৬ ’শ ট্রাক পণ্য আমদানি হতো বেনাপোল বন্দর দিয়ে সেখানে বর্তমানে করোনাভাইরাসের কারণে মাত্র ১৫০ ট্রাক মালামাল আমদানি হচ্ছে এ বন্দর দিয়ে। 

ওপারে পেট্রাপোল বন্দর এলাকায় কালিতলা পার্কিং এ আমদানি পণ্য বোঝাই ট্রাক থেকে ২০০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে জোর করে। দু’দেশের ব্যবসায়ীরা ওপারে বনগাঁও এলাকায় একটি অশুভ, অপশক্তি সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মী হয়ে পড়েছে বলে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়।

যদিও বেনাপোল বন্দর দিয়ে বছরে ৩০ হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য সম্পন্ন হয়ে থাকে ভারতের সাথে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড চলতি অর্থ বছরে বেনাপোল কাস্টমস হাউসের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।

ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে বেনাপোল-যশোর হাইওয়ে ৬ লেন ও বেনাপোল চেকপোস্ট থেকে বেনাপোল বাজার পর্যন্ত এলিভেটেড ট্রেন চালু, আইসিডি চালুসহ বাইপাস সড়ক ৪ লেন করার জোর দাবি করা হয়। 

কমিশনার বলেন, এসব দাবি আগেই পাশ হয়ে আছে, এডিবি অর্থায়নে এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে।

ভিডিও কনফারেন্সে সারা দেশ থেকে ১০০ জন ব্যবসায়ী, কাস্টমস কর্মকর্তাদের মধ্যে অতিরিক্ত কমিশনার ড. নেয়ামুল ইসলাম, পৌর মেয়র অশরাফুল আলম লিটন ডেপুটি কমিশনার শামীমু রহমান, ডিসি পারেভজ রেজা চৌধুরী, সহকারী কমিশনার উত্তম চাকমা, আকরাম হোসেন, কল্যাণ চাকমা,কাজী মুরশিদা খাতুন, ও রাজ্বস্ব কর্মকর্তা নঈম মীরন।

ব্যবসায়ীদের পক্ষে বেনাপোল সিএন্ড এফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন, সিনিয়র সহসভাপতি নুরুজ্জামান, সাবেক সভাপতি শামছুর রহমান, খাইরুজ্জামান মধু, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বারের ডিরেক্টর মতিয়ার রহমান, আমদানি-রফতানিকারক সমিতির সভাপতি মহসিন মিলন, নারী উদ্যোগতা সেতু শাহিদার রহমান, নাছির উদ্দিন, আব্দুল লতিফ।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //