করোনায় রিকন্ডিশন গাড়ির ব্যবসায় ১২০০ কোটি টাকা ক্ষতির আশংকা

করোনাভাইরাসের (কভিড-১৯) কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বড় রকমের ক্ষতির সম্মুখীন হতে যাচ্ছে দেশের দ্বিতীয় রাজস্ব প্রদানকারী খাত রিকন্ডিশন গাড়ির ব্যবসা। বর্তমান পরিস্থিতির কারণে প্রায় ১২০০ কোটি টাকা ক্ষতির আশংকা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিকল ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বারভিডা) দাবি, করোনার কারণে ১২০০ কোটি টাকার ক্ষতি হতে পারে। বর্তমানে গাড়ির চাহিদা প্রায় শূন্যের কোটায় নেমে যাওয়ায় আমদানি হওয়া হাজার হাজার গাড়ি এখন চট্টগ্রাম এবং মোংলা বন্দরে আটকে আছে। গাড়ি আটকে থাকায় বন্দর ভাড়া বাড়ছে। প্রতিদিনই ব্যবসায়ীদের বন্দর চার্জ হিসাবে লাখ লাখ টাকা গুণতে হচ্ছে। 

ব্যাংকঋণের সুদের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের বেতন পরিশোধ নিয়েও কোণঠাসা গাড়ির ব্যবসায়ীরা। এ খাতে প্রায় এক লাখ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত রয়েছেন। তারা সবাই এখন মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য আর্থিক প্রণোদনা চেয়ে সম্প্রতি অর্থমন্ত্রীর কাছে চিঠি দিয়েছে বারভিডা। ব্যবসায়ীদের বাঁচাতে হলে সরকারের ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায়  এনে এ খাতে নগদ সহায়তা দেয়ার দাবিও করেছেন ব্যবসায়ীরা।

বারভিডার সাবেক সভাপতি মো. হাবিব উল্লাহ ডন বলেন, ‘এ খাত সরকারের রাজস্ব আয়ের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উৎস। বছরে সরকারকে কয়েক হাজার কোটি টাকার রাজস্ব প্রদান করে থাকে এ খাত। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানি ও বিপণন কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকায় এ খাতের আমদানিকারক ও ক্ষুদ্র-মাঝারি ব্যবসায়ীরা চরম অর্থনৈতিক সংকটে দিন কাটাচ্ছেন। আমদানীকৃত হাজার হাজার গাড়ি দুটি বন্দরে আটকা পড়ে আছে। একেকটি গাড়ির বিপরীতে বিপুল পরিমাণ ব্যাংক সুদ ও বন্দরের ভাড়া যুক্ত হচ্ছে। এ অবস্থায় কর্মচারীদের বেতন ও শোরুম ভাড়া দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। 

অন্যদিকে, গাড়ি বিক্রি বন্ধ থাকায় সরকারও বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত। ফলে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত বন্দর থেকে গাড়ি ছোটানার জন্য যে বন্দর চার্জ আরোপ করা হয়, সেটা মওকুফ করার দাবি জানান তিনি। 

হাবিব উল্লাহ ডন আরো বলেন, ‘করোনার প্রভাবে আমরা প্রায় ১২০০ কোটি টাকার ক্ষতির মুখে। ব্যবসায়ীদের জন্য ঘোষিত প্যাকেজ থেকে আমরা সহজ শর্তে কম সুদে পাঁচ বছর মেয়াদি ঋণ চাই, যাতে আমরা আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত কর্মচারীদের বেতন ও শোরুম ভাড়া দিতে পারি। শোরুমের গাড়ি বিক্রি হলে ওই টাকায় শুল্ক দিয়ে বন্দর থেকে গাড়ি ছোটানো হয়ে থাকে। দুই মাস ধরে কোনো গাড়িই বিক্রি নেই। আরো কয় মাস বিক্রি বন্ধ থাকবে তা বলা যাচ্ছে না। তাই রিকন্ডিশন্ড গাড়ির আমদানিকারকদের আর্থিক ক্ষতি থেকে কিছুটা রক্ষা পেতে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দরের মাধ্যমে আমদানি করা গাড়ির বন্দর চার্জ ডিসেম্বর পর্যন্ত মওকুফ করা হোক। শুল্ক বিভাগ কর্তৃক বন্দরে গাড়ির নিলাম কার্যক্রম যেন ডিসেম্বর পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়। ঋণখেলাপি হওয়া থেকে রক্ষা পেতে বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণের কিস্তি প্রদানের সুবিধা আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত যেন বাড়ানো হয়।’

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //