ঘুরে আসুন ভাসমান পেয়ারা বাজার

চোখ ও মনের শীতলতা আনয়নের জন্য সবুজের সান্নিধ্য সবাই চায়। একটু খানি গ্রামীণ পরশ, সবুজের স্নিগ্ধতা, কোলাহলবিহীন জীবনের সন্ধ্যানে ছুটে চলতে চায় সবাই। কিন্তু আটপৌড়ে জীবনে মেলে না সব।  আপনার ব্যস্ত জীবনকে একটু অন্যরকম ভাবে রাঙাতে, কিংবা একটু সজীবতার ছোঁয়া খুঁজে পেতে চাইলে ঘুরে আসতে পারেন ভাসমান পেয়ারা বাজার থেকে।    

এতদিন তো অনেক বাজারের কথা শুনেছেন। চালের বাজার, ধানের বাজার, সোনার বাজার। আজ আপনাদের শোনাবো ভাসমান পেয়ারা বাজারের গল্পকথা।

ভাসমান পেয়ারা বাজার বরিশাল, ঝালকাঠি ও পিরোজপুরের সীমান্তবর্তী এলাকায় গড়ে উঠেছে। একে বলা হয় এশিয়া মহাদেশের বৃহত্তম পেয়ারা বাজার। ঝালকাঠি জেলা থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে ভিমরুলিতে অবস্থিত এটি। এই বাজারের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো এটি স্থিতিশীল নয়। অর্থাৎ পানির উপর অসংখ্য পেয়ারা ভর্তি নৌকার হাট বসে। বিশেষ করে পেয়ারার মৌসুমে অর্থাৎ জুলাই ও আগস্ট মাসে এই হাট বেশ জমে। কখনো কখনো সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পেয়ারা হাট জমজমাট থাকে। সারা বছরে এখানে হাট বসলেও আগষ্ট মাসে বেশি প্রাণ ফিরে পায়।  

বরিশালের ভিমরুলি এলাকার আঁকা বাঁকা ছোট্ট খালজুড়ে যে পেয়ারার হাট বসে তা দেখলে আপনার নয়ন জুড়াবেই। একদিকে গ্রামের মেঠো পথ, গাছগাছালি, গ্রামীণ পরশ অন্যদিকে ভিন্নরকম পেয়ারার আমেজ যেকোনো মানুষের ক্লান্তি দূর করে দেবে। এখানে সকাল সকাল চলে আসে শত শত নৌকা। মজার বিষয় হলো সবগুলো নৌকার আকার ও ধরন প্রায় একই রকমের। দেখলে মনে হবে যেন একই কারিগর নৌকাগুলো তৈরি করেছেন। 

পেয়ারার হাট থেকে আপনি চাইলে পেয়ারা কিনতে পারবেন। খাল দিয়ে যাওয়ার সময় আপনি পেয়ারাগুলো ধরে দেখতে পারবেন। আর যদি তখন বৃষ্টি হয় তবে তো কথাই নেই। এক অপার্থিব সৌন্দর্যে মোহনীয় হয়ে ওঠবে চারপাশ। 

কোথায় খাবেন

ভিমরুলি বাজার থেকে সাদা ও লাল মিষ্টি, কুড়িয়ানা বাজারে ঋতুপর্ণা দোকানের গরম মিষ্টি, বৌদির হোটেলের খাবার এবং গুঠিয়ার সন্দেশ খাবেন। এছাড়া বরিশাল শহর থেকে রসমলাই, ছানা ইত্যাদি খেতে পারবেন। 

থাকার ব্যবস্থা

পেয়ারা বাজার ঘুরে আপনি চাইলে রাতের লঞ্চে ফিরে আসতে পারবেন। যদি থাকতে চান তাহলে জেলা শহরের সাধারণ মানের হোটেলে থাকতে পারবেন। ভালো কোনো হোটেলে থাকতে চাইলে বরিশাল সদরে যেতে হবে। বরিশাল শহরে রাত্রিযাপনের জন্য ভালো মানের আবাসিক হোটেল আছে।


সতর্কতা

যেহেতু ভাসমান পেয়ারা বাজার ভ্রমণটা নদীকেন্দ্রিক, সেহেতু সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। সাথে ওয়াটারপ্রুফ ব্যাগ, রেইনকোট ও লাইফ জ্যাকেট রাখা ভালো। যেহেতু জায়গাটা প্রত্যন্ত সেহেতু ওষুধ সাথে রাখবেন। মনে রাখবেন পেয়ারা বাজারে গেলে গ্রুপ করে যাওয়া ভালো। আনন্দে ঘুরে বেড়ানোর জন্য হলেও গ্রুপ করে যাওয়া ভালো। তবে পানিতে ময়লা, আবর্জনা, চিপসের প্যাকেট ফেলা থেকে বিরত থাকুন।   

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //