গুণগত মানের দিকে চোখ সাফা কবিরের

টেলিভিশনের জনপ্রিয় অভিনেত্রী সাফা কবির। এখন নাটকের স্যুটিং কমিয়ে দিয়েছেন। এর কারণ হচ্ছে, ক্যারিয়ারের লম্বা একটা সময় কাটিয়ে তিনি অনুভব করছেন, কাজের সংখ্যার থেকে মান বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই এখন তিনি বেছে বেছে ভালো গল্প, চরিত্র, নির্মাতা দেখে কাজ করছেন। তবে সহশিল্পীর ক্ষেত্রে তার কোনো নিজস্ব পছন্দ নেই।

সাফা জানান, ‘আমি অভিনেত্রী হিসেবে কোনো নির্মাতার সঙ্গে কাজ করব বা কাকে বিশ্বাস করব, সেটা আমার ব্যক্তিগত পছন্দ। একইভাবে গল্প নির্বাচন করার ক্ষেত্রেও আমার স্বাধীনতা রয়েছে। তবে আমি কিছুতেই সহশিল্পী নির্বাচন করতে পারি না। এটা নির্মাতার বিষয়। তিনি আমার বিপরীতের চরিত্রটির জন্য যাকে নির্বাচন করবেন, সেটাই হবে সঠিক সিদ্ধান্ত। তাই খেয়াল করলে দেখবেন, আমি সবার সঙ্গে সমানতালে কাজ করছি। তবে বর্তমানে আমার কাছে তৌসিফ মাহবুব, জোভান, মনোজ প্রামাণিক, খায়রুল বাসারের বিপরীতে কাজের প্রস্তাব বেশি আসে। তাই এদের সঙ্গেই বেশি কাজ করা হয়।’

বর্তমানে টিভি নাটকের অঙ্গনে সবচেয়ে চাহিদাসম্পন্ন নায়ক আফরান নিশো ও জিয়াউল ফারুক অপূর্ব। সবাই তাদের সঙ্গে কাজ করতে চান। কারণ তাদের নাটকগুলো সহজেই সফলতার সিঁড়ি ছুঁতে পারে। তবে এই নায়কের সঙ্গে এখন সবচেয়ে বেশি দেখা যায় মেহজাবীন চৌধুরী, সাবিলা নূর ও তানজিন তিশাকে। প্রথম সারির অভিনেত্রী হয়েও সাফাকে সেভাবে এই দুই নায়কের সঙ্গে কাজ করতে দেখা যায় না। বিশেষ কোনো কারণ আছে কি? জানতে চাইলে সাফা কবির বলেন, ‘আমার দিক থেকে বিশেষ কোনো কারণ নেই। সবার মতো আমিও চাই জনপ্রিয় এই দুই অভিনেতার সঙ্গে কাজ করতে। কারণ তাদের সঙ্গে কাজ করলে আমি অনেক কিছু শিখতে পারব; কিন্তু আমার কাছে সেভাবে প্রস্তাব আসে না বলেই কাজ করা হয় না।’

সাফা সর্বশেষ অভিনয় করেছেন গেল ভালোবাসা দিবসের জন্য নির্মিত পাঁচটি নাটকে। ঈদের কাজ শুরুর আগেই তিনি অসুস্থ হয়ে ঘরে বিশ্রাম নিচ্ছেন। তিনি জানান, ‘কথায় আছে না, ভাগ্যের লিখন যায় না খ-ন। আমার ক্ষেত্রে তাই হয়েছে। কোনো কারণ নেই, হুট করেই আছাড় খেয়ে আমার পায়ে আঘাত লেগেছে। চিকিৎসক বলেছেন, কমপক্ষে দুই সপ্তাহ বেড রেস্টে থাকতে। এরই মধ্যে পাঁচ দিন অতিবাহিত হয়েছে ঘরের মধ্যেই। আমি খুব কাজ পাগল একজন। কিছু না কিছু করতেই থাকি। শুয়ে বসে    থাকতে আমি একদম পছন্দ করি না। তাই এই পাঁচ দিনে আমি বিরক্ত হয়ে গেছি। শুধু ভাবছি, যখন কাজে ফিরতে পারব; কিন্তু আমার এই ছোট্ট ইনজুরিতে বাসার সবাই বেশ খুশি। আব্বু জার্মানিতে থাকেন। তিনি বলেছেন, ভালোই হয়েছে! কটা দিন বিশ্রাম নাও । আম্মুও আমাকে ঘরে পেয়ে খুশি। আর বন্ধু-বান্ধবরা তো খুব টেক কেয়ার করছেন। তারা দলে দলে আমার বাসায় আসছে। আমার কিছু লাগবে কি-না জানতে চাচ্ছে। সবার এই আদর-আহ্লাদ মন্দ লাগছে না।’

ভালোবাসা দিবসের নাটকগুলোতে কেমন সাড়া পেলেন সাফা? তিনি জানান, ‘যে পাঁচটি নাটক প্রচার হয়েছে। প্রতিটি নিয়েই দর্শকের ইতিবাচক মন্তব্য পেয়েছি। তবে অমিতাভ রেজার পরিচালনায় ক্লোজ আপ কাছে আসার গল্পের ‘ফাগুন থেকে ফাগুনে’ এবং মাহমুদুর রহমান হিমির পরিচালনায় ‘ইয়ারমেট’ নাটক দুটির জন্য সবচেয়ে বেশি সাড়া পেয়েছি। বেছে বেছে অল্প কাজ করছি বলেই আমার প্রতিটি কাজ দর্শকের কাছে ভালো লাগছে বলে আমি বিশ্বাস করি।’


সাফার ছোটবেলার অনেক বন্ধুই বিয়ে থা করে থিতু হয়েছেন। তার অনেক সহকর্মীও তাই; কিন্তু সাফার এ দিকে কোনো মন নেই আপাতত। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমার পরিবার খুবই সাপোর্টিভ। তারা আমার কাজকে খুব গুরুত্ব দেয়। তাছাড়া এখনো পরিবার থেকে বিয়ের কোনো চাপ নেই। তারা বলে রেখেছেন, তোমার কাউকে পছন্দ হলে জানাবে। তার সঙ্গেই বিয়ে দেব; কিন্তু আমার আপাতত তেমন কেউ নেই। যদি কাউকে সত্যি সত্যিই মনে হয়, বাকিটা জীবন একসঙ্গে কাটাতে পারব, তাহলে অবশ্যই বাবা-মার সঙ্গে তাকে পরিচয় করিয়ে দেব। আমি আপাতত অভিনয় নিয়েই থাকতে চাই। আজীবন অভিনয় করতে পারব কি-না জানি না। তবে অবশ্যই শোবিজের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারি, এমন কোনো কাজ করব। আমি এই অঙ্গনকেই সত্যিই অনেক ভালোবাসি।’

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //