Logo
×

Follow Us

আন্তর্জাতিক

ইসলামাবাদে আত্মঘাতী হামলার দায় স্বীকার টিটিপির

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২৫, ১৫:৩৮

ইসলামাবাদে আত্মঘাতী হামলার দায় স্বীকার টিটিপির

ইসলামাবাদে আত্মঘাতি হামলায় ব্যবহৃত গাড়ি। ছবি: এপি

ইসলামাবাদে আদালত ভবনের বাইরে আত্মঘাতী হামলার দায় স্বীকার করেছে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান—টিটিপি। ওই হামলায় কমপক্ষে ১২ জন নিহত হয়েছেন। এই টিটিপিকে দমন করতে গিয়েই অক্টোবর মাসে আফগানিস্তানের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত যুদ্ধে জড়ায় পাকিস্তান।

বুধবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।

খবরে বলা হয়, টিটিপি দায় স্বীকারের পর পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার ঢেউ পাকিস্তানকে “যুদ্ধাবস্থায়” ফেলে দিয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটের দিকে রাজধানীর জেলা আদালত ভবনের বাইরে ওই বিস্ফোরণ ঘটে। এলাকাটিতে সাধারণত আইনজীবী ও মামলার পক্ষদের উপস্থিতিতে বেশ ভিড় থাকে।

পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভি জানান, হামলায় ১২ জন নিহত ও ২৭ জন আহত হয়েছেন। তিনি বলেন, “বিস্ফোরক হামলাকারী আদালত প্রাঙ্গণে প্রবেশের চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ব্যর্থ হয়ে একটি পুলিশ গাড়িকে লক্ষ্যবস্তু বানায়।”

টিটিপি এক বিবৃতিতে বলেছে, “পাকিস্তানের ইসলামবিরোধী আইন অনুযায়ী রায়দানকারী বিচারক, আইনজীবী ও কর্মকর্তাদের টার্গেট করা হয়েছে।” সংগঠনটি হুমকি দিয়েছে, দেশে শরিয়া আইন কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত তাদের হামলা চলবে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তানে টিটিপির হামলা ভয়াবহভাবে বেড়ে গেছে, যা গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় নিরাপত্তা সংকটে পরিণত হয়েছে। শুধু এই বছরেই টিটিপি প্রায় ৬০০টির বেশি হামলা চালিয়েছে, যার বেশিরভাগই আফগান সীমান্তঘেঁষা খাইবার পাখতুনখোয়া অঞ্চলে। এসব হামলায় শত শত মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। তবে মঙ্গলবারের আত্মঘাতি হামলাটি ছিল ইসলামাবাদে গত কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় ঘটনা।

পাকিস্তান সরকার অভিযোগ করেছে, আফগান তালেবানরা টিটিপি জঙ্গিদের নিরাপদ আশ্রয় ও অস্ত্র সহায়তা দিচ্ছে। যদিও কাবুল সরকার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে গত মাসে পাকিস্তান-আফগান সীমান্তে ভয়াবহ সংঘর্ষ ঘটে, যাতে বহু মানুষ নিহত হয়। দুই দেশের মধ্যে বর্তমানে একটি নাজুক যুদ্ধবিরতি চলছে, তবে সীমান্ত সন্ত্রাসবাদের বিষয়ে এখনও কোনো স্থায়ী সমঝোতা হয়নি।

মঙ্গলবারের ঘটনার ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, বিস্ফোরণে লক্ষ্যবস্তু গাড়িটি সম্পূর্ণভাবে পুড়ে গেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একটি প্রবল শব্দের পর মানুষ চারদিকে ছুটোছুটি শুরু করে।

আইনজীবী রুস্তম মালিক বলেন, “পুরো এলাকাজুড়ে ছিল বিশৃঙ্খলা। আমি আদালতের গেটে দুইজনের মৃতদেহ দেখেছি, আর কয়েকটি গাড়ি জ্বলছিল।”

এর পাশাপাশি, পাকিস্তান বর্তমানে বেলুচিস্তান অঞ্চলেও মারাত্মক সহিংসতার মুখোমুখি। ইরান ও আফগানিস্তান সীমান্তবর্তী এই অঞ্চলে বিচ্ছিন্নতাবাদী বেলুচরা স্বাধীন রাষ্ট্রের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে সশস্ত্র আন্দোলন চালিয়ে আসছে। তারা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে একাধিক বড় হামলা চালিয়েছে, যার মধ্যে এ বছরের শুরুর দিকে একটি যাত্রীবাহী ট্রেন ছিনতাইয়ের ঘটনাও রয়েছে।

প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ মঙ্গলবারের হামলাকে ‘জাগরণ ঘণ্টা’ হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, “আমরা যুদ্ধাবস্থায় আছি। যারা ভাবছেন এই যুদ্ধ শুধু সীমান্ত অঞ্চলে সীমাবদ্ধ, আজকের ইসলামাবাদ আদালতের হামলা তাদের জন্য সতর্কবার্তা।”

তিনি আরও বলেন, “এই পরিস্থিতিতে কাবুলের শাসকদের সঙ্গে শান্তি আলোচনা ফলপ্রসূ হবে—এমন আশা করা অর্থহীন।”

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫