মার্কিন ভেটোয় খারিজ জাতিসংঘের জঙ্গি পুনর্বাসন প্রস্তাব

জঙ্গিদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা নিয়ে জাতিসংঘের প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। কারণ প্রস্তাবে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিদেশি যোদ্ধা ও তাদের পরিবারের বিষয়ে কোনো উল্লেখ নেই বলে দেশটি জানিয়েছে। 

জাতিসংঘের প্রস্তাবটি ছিল সন্ত্রাসবাদের সাথে জড়িতদের পুনর্বাসন, শাস্তি ও সমাজের মূল স্রোতে নিয়ে আসার ব্যবস্থা। তবে যুক্তরাষ্ট্র জানেয়ছে, এর মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ বাদ চলে গেছে। সেটা হলো আইএসে বিদেশি যোদ্ধা ও তাদের পরিবারের পুনর্বাসনের বিষয়টি। 

গত সোমবার (৩১) আগস্ট জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে এই ভোট অনুষ্ঠিত হয়। করোনাভাইরাসের ই-মেইলে ভোট দিয়েছে দেশগুলো।

জাতিসংঘে মার্কিন দূত কেলি ক্রাফট বলেছেন, ইন্দোনেশিয়া সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা চালু করা নিয়ে যে প্রস্তাব এনেছে, সেটা খুবই খারাপ। এটা কোনো প্রস্তাবই নয়।

ইন্দোনেশিয়া এই প্রস্তাব কাউন্সিলে এনেছিল। এর পক্ষে নিরাপত্তা পরিষদে ১৪টি ভোট পড়েছিল, আর বিপক্ষে শুধু যুক্তরাষ্ট্র। যেহেতু তাদের ভেটো দেয়ার ক্ষমতা আছে, তাই একমাত্র তারা বিরোধিতা করার ফলে প্রস্তাবটি খারিজ হয়ে গেল।

ক্রাফট বলেছেন, এই প্রস্তাবে প্রথম ধাপের উল্লেখই নেই। সেটা হলো নিজেদের দেশে তাদের পুনর্বাসনের বিষয়টি। আইএসের বিদেশি যোদ্ধাদের তাদের দেশে শাস্তি দিতে হবে এবং পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। 

কিন্তু যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সসহ ইউরোপের দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের এই মত সমর্থন করেনি। তারা বরং মনে করছে নিজের দেশে ওই সব জঙ্গিদের ওপর লোকের ক্ষোভ আছড়ে পড়তে পারে। তারা আক্রান্ত হতে পারেন। তাছাড়া ইরাক বা সিরিয়ায় তারা যে অপরাধ করেছেন, তার প্রমাণ জোগাড় করাও মুশকিল।

জঙ্গিদের পরিবার সম্পর্কে প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, তাদের সন্তানরা নিজেদের দেশে ফিরতে পারবেন। তবে প্রতিটি মামলা খতিয়ে দেখে তারপরই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। 

ঘটনা হলো সিরিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকা থেকে আইএস তার নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে। মূলত কুর্দদের নিয়ে গঠিত সিরিয়ান ডিফেনসিভ ফোর্স (এসডিএফ) দেশের উত্তর-পূর্বের এলাকায় হাজার হাজার বিদেশি যোদ্ধাকে আটক করেছে। বড় বড় শিবিরে অভিযুক্ত জঙ্গিদের স্ত্রী ও সন্তানদের রাখা হয়েছে। জাতিসংঘ ওই সব শিবিরের অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, বিদেশি যোদ্ধা ও তাদের পরিবার নিয়ে যত তাড়াতাড়ি প্রস্তাব নেয়া যাবে তত ভালো। তাহলে জঙ্গি কার্যকলাপ বড়ার সম্ভাবনাও কমবে।

যুক্তরাজ্য বলেছে, প্রস্তাব অনুমোদিত না হওয়ায় আমরা ক্ষুব্ধ। আমরা বিদেশি যোদ্ধাদের ঝুঁকি কমানোর চেষ্টা করছিলাম। দেশটির সরকার বলেছে, ইরাক ও সিরিয়ায় যেসব বিদেশি যোদ্ধা আটক রয়েছে, তাদের সেখানেই বিচার হওয়া উচিত। -ডয়চে ভেলে

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //