করোনায় মৃত্যুঝুঁকি কমাতে পারে না প্লাজমা থেরাপি: গবেষণা

প্লাজমা থেরাপি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের প্রাণহানির সংখ্যা কমাতে পারেনি বা করোনার মাঝারি থেকে মারাত্মক আকার ধারণ করা থেকেও রক্ষা করতে পারে না।

ভারতের রোগীদের ওপর পরিচালিত এক গবেষণায়েএ তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল শুক্রবার (২৩ অক্টোবর) ব্র্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নালে (বিএমজে) প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে।

গবেষণায় বলা হয়, কভিড-১৯ রোগ থেকে সেরে ওঠা রোগীদের রক্ত থেকে নেয়া প্লাজমা এ রোগে আক্রান্ত অন্য রোগীদের দেয়া হলেও সেটি তাদের গুরুতর অসুস্থ হওয়ার বা মারা যাওয়ার সম্ভাবনা কমাতে পারে না। এছাড়া মাঝারি মাত্রার কভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের সম্ভাব্য চিকিৎসা হিসেবে ব্যবহৃত কনভালসেন্ট প্লাজমা থেরাপির সীমিত কার্যকারিতা দেখা গেছে।

কোড-১৯-এ আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৪০০ জনেরও বেশি মানুষকে নিয়ে করা এ গবেষণায় মাঝারি মাত্রায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য চিকিৎসায় প্লাজমা থেরাপি দেয়া নিয়ে অনুসন্ধান করা হয়েছিল। এদের অর্ধেককে মান সম্পন্ন সেবার পাশাপাশি ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে দুইবার প্লাজমা থেরাপি দেয়া হয়। আর বাকি অর্ধেককে নিয়ন্ত্রিত মানসম্পন্ন দেয়া হয়।

এক মাস পর দেখা যায় প্লাজমা থেরাপি নেয়া রোগীদের ১৯ শতাংশেরই রোগের জটিলতা বেড়েছে কিংবা কোনো কারণে মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে নিয়ন্ত্রিত সেবা পাওয়া রোগীদের এই হার ১৮ শতাংশ। তবে প্লাজমা থেরাপি সাতদিনের মধ্যে শ্বাসকষ্টের মতো লক্ষণ কমানোয় ভূমিকা রেখেছে বলেও দেখা গেছে।

গত আগস্টে প্লাজমার কার্যকারিতা নিয়ে প্রথম ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের পর একে ‘ঐতিহাসিক অগ্রগতি’ বলে মন্তব্য করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এখন নতুন গবেষণাটি চিকিৎসার জন্য এক ধাক্কা বলে মনে করা হচ্ছে। 

কভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের কারণে বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতে থাকা যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত উভয় দেশেই জরুরি অবস্থায় প্লাজমা থেরাপির ব্যবহার অনুমোদন রয়েছে। যুক্তরাজ্যসহ অন্য দেশগুলোও প্লাজমা সংগ্রহ করছে যাতে এটি কার্যকর চিকিৎসা হিসেবে প্রমাণিত হলে এ পদ্ধতি ব্যাপকভাবে ব্যবহার করতে পারে।

ইংল্যান্ডের রিডিং বিশ্ববিদ্যালয়ের সেলুলার মাইক্রোবায়োলজি বিশেষজ্ঞ সিমোন ক্লার্ক বলেন, ইঁদুরের ওপর করা ট্রায়ালে দেখা গেছে ভাইরাস সংক্রমণ থেকে রোগীদের সেরে ওঠার ক্ষেত্রে এর প্রভাব সামান্য। যা এ রোগ থেকে সেরে ওঠার জন্য যথেষ্ট না। সহজ ভাষায় বললে, এ থেকে রোগীরা কোনো ক্লিনিক্যাল সুবিধা পাননি।

এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর ভ্যাকসিন বা চিকিৎসা না থাকায় বিশ্বের অনেক দেশ করোনাভাইরাস মোকাবিলার উপায় খুঁজে বের করতে হিমসিম খাচ্ছে।

তিন ধরনের রক্ত কণিকা বাদ দিলে বাকি যে হলুদাভ অংশ থাকে সেটিকেই প্লাজমা বা রক্তরস বলা হয়।  করোনা থেকে সেরে ওঠা ব্যক্তিদের রক্তরসে প্রতিরোধক্ষম উপাদান থাকে এমন ধারণা থেকেই ভাইরাসটির চিকিৎসায় নানা দেশেই আক্রান্ত রোগীদের এটি প্রয়োগ হয়ে আসছে। ১৯১৮ সালে ফ্লু মহামারির সময় ছাড়াও সার্স কিংবা ইবোলা মহামারির সময়েও এটি ব্যাপকভাবে ব্যবহার হয়েছে। -ইউএনবি

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //