সামনে আরো বড় মহামারি আসতে পারে: ডব্লিওএইচও

বিশ্বজুড়ে বর্তমান করোনাভাইরাস মহামারির মারাত্মক প্রভাব পড়েছে। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিওএইচও) সতর্ক করে বলেছে, এটিই শেষ নয়, সামনে আরো বড় মহামারি আসতে পারে।

এজন্য তা মোকাবিলায় প্রস্তুতির বিষয়ে বিশ্বকে আরো আন্তরিক হতে সংস্থাটি আহ্বান জানিয়েছে।

চীনে ছড়িয়ে পড়া করোনা সম্পর্কে জাতিসংঘের এ সংস্থাটির জানতে পারার এক বছর উপলক্ষে এর জরুরি বিষয়ক প্রধান মাইকেল রায়ান গতকাল সোমবার (২৮ ডিসম্বের) এ কথা বলেছেন।

তিনি বলেন, বর্তমান মহামারি একটি সতর্কবার্তা। এই মহামারি খুবই মারাত্মক রূপ নিয়েছে। এটি খুব দ্রত বিশ্বের সব জায়গায় ছড়িয়ে গেছে। কিন্তু এটিই অনিবার্যভাবে শেষ নয়। বর্তমান ভাইরাসটি খুবই ছোঁয়াছে এবং এর কারণে অনেক লোক মারাও যচ্ছে। কিন্তু অন্য যে রোগগুলো আসছে তার তুলনায় এই ভাইরাসে মৃত্যুহার যুক্তিসংগতভাবে কম। ভবিষ্যতে আরো মারাত্মক পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের প্রস্তুতি নেয়া প্রয়োজন।

ডা. রায়ান আরো বলেন, পরবর্তী মহামারি আরো ভয়াবহ হতে পারে। আমাদের সম্মিলিতভাবে কাজ করা প্রয়োজন কেননা আমরা প্রতিনিয়ত জটিল হয়ে যাওয়া একটি সমাজ ও একটি ভঙ্গুর গ্রহে বসবাস করছি। আর করোনা মহামারিতে আমরা যাদের হারিয়েছি, চলুন তাদের সম্মান জানাই।

ডব্লিওএইচও’র সিনিয়র উপদেষ্টা ব্রুস আইলওয়ার্ড সতর্ক করে বলেছেন, করোনা সংকট মোকাবিলায় বিশ্ব যথেষ্ট বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি অর্জন করেছে। রেকর্ড গতিতে টিকাও তৈরি করেছে। কিন্তু ভবিষ্যতের মহামারিকে দূরে রাখতে এই অগ্রগতি এখনো অনেক সামান্য।

ডব্লিউএইচও কভিড-১৯ বিষয়ক টেকনিক্যাল টিমের প্রধান ডা. মারিয়া ভ্যান বলেন, অনেক দেশ রয়েছে, যারা উচ্চ আয়ের বা ধনী দেশ নয়, তারা কভিড-১৯ ভালোভাবে মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছে। তারা সম্মিলিতভাবে ভাইরাস মোকাবিলা করেছে।

ডা. মারিয়া ও ডা. রায়ান আগামীতে এ ধরনের স্বাস্থ্য সংকট মোকাবিলার প্রস্তুতি হিসেবে উদ্ভাবনী প্রযুক্তির সকল সুবিধা নিয়ে বিশ্বকে স্বাস্থ্য কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেয়ার আহ্বান জানান। এছাড়া নাগরিকরা যাতে নিজেদের নিরাপদ রাখতে পারেন সেজন্য তাদেরকেও এসবের সাথে জড়ানোর কথা বলেন।

তবে এ প্রসঙ্গে সংস্থা প্রধান তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়াসিস আশা প্রকাশ করে বলেছেন, ভবিষ্যতের হুমকি মোকাবেলায় প্রস্তত হতে বর্তমান মহামারি আমাদের সাহায্য করবে। তবে বিষয়টিকে সত্যিকার অর্থে গুরুত্ব দিতে তিনি আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ভাইরাসের নতুন ধরনের ছড়িয়ে পড়ার সক্ষমতা, মানুষকে অসুস্থ করা, অথবা পর্যাপ্ত পরীক্ষা নিরীক্ষার গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব, চিকিৎসা ও ভ্যাকসিন নিয়ে জাতিসংঘ সংস্থা প্রতিদিনই গবেষণা করে যাচ্ছে। যুক্তরাজ্য ও দক্ষিণ আফ্রিকায় বিজ্ঞানীরা এ বিষয়ে গবেষণা করে যাচ্ছে, যা সংস্থাকে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে সাহায্য করবে।

ডব্লিউএইচও প্রধান আরো বলেন, শুধুমাত্র সঠিক পরীক্ষার মাধ্যমেই কেবল দেশগুলো নতুন ধরন সম্পর্কে জানতে পারবে এবং সেই অনুযায়ী কাজ করে এটি মোকাবিলা করতে পারবে। স্বচ্ছভাবে নতুন বৈজ্ঞানিক তথ্য শেয়ার করার কারণে ওইসব দেশগুলোকে আমরা যাতে শাস্তির মুখোমুখি না করি আমাদের সেটি নিশ্চিত করতে হবে।

ডব্লিউএইচও’র সাথে কাজ করা অনেক সংগঠনকে ধন্যবাদ দিয়ে তিনি চলতি বছরে আবিষ্কার হওয়া ভ্যাকসিনের স্বচ্ছ ও সমবণ্টন নিশ্চিত করার কথা বলেন।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //