বিশ্বব্যাপী গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ও ভূরাজনৈতিক উত্তাপ

মহামারি, অর্থনৈতিক ধস ও আদর্শিক অধোগতি

নিঃসন্দেহে ২০২০ সালের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ছিল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এবং ফলস্বরূপ বিশ্বব্যাপী মহামারি। সমাধানহীন অবস্থায় বিচলিত বিশ্ব নেতৃত্ব বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে ‘শারীরিক দূরত্ব’ নিশ্চিত করতে ‘লকডাউন’ নামে এক পদ্ধতির আবিষ্কার করে। 

জাতিসংঘের অঙ্গসংগঠন ওয়ার্ল্ড হেলথ অরগানাইজেশনের (ডব্লিউএইচও) ঘনঘন সিদ্ধান্ত পরিবর্তন পুরো বিশ্ব ব্যবস্থাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে। লকডাউনের ফলে বিশ্বব্যাপী অর্থনীতি স্থবির হয়ে যায় ও সব অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ধস নামে। তেলের বাজার ও শেয়ারবাজারে ঐতিহাসিক দরপতন ঘটে। লকডাউন উঠিয়ে নেয়ার জন্য পশ্চিমা বিশ্বের স্বাধীনচেতা মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করে। কোটি কোটি মানুষ কর্মসংস্থান হারালেও এই সুযোগে গুটিকয়েক পুঁজিপতি তাদের সম্পদ আরো বাড়িয়ে নেয়, যা কিনা সম্পদের অসম বণ্টনকে আরো বাড়িয়েছে। 

করোনাভাইরাসের সবচেয়ে বড় প্রভাব হলো- এটি পশ্চিমা পুঁজিবাদী আদর্শের ভিত নাড়িয়ে দিয়েছে। এর ফল ২০২১ সালজুড়ে দেখা যাবে। 

বিশ্ব অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে যখন চেষ্টা করছে, তখনই করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ আঘাত হানে ইউরোপে। ২০২১ সালের প্রথম অংশেও বিশ্ব দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলা করবে। এরই মাঝে ভাইরাসের নতুন জাতের আবির্ভাব হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। এই মুহূর্তে এর গতিপ্রকৃতি নির্দিষ্ট করা না গেলেও, তা যে অর্থনীতির ওপর বড় আঘাত হানবে, তা নিশ্চিত। 

মহামারির কারণে মেডিক্যাল সুরক্ষাসামগ্রী ও টেস্টিং কিট নিয়ে শুরু হয় আন্তর্জাতিক প্রভাব বিস্তারের প্রতিযোগিতা- চীন ও তুরস্ক এ ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকে। ভাইরাসের সংক্রমণ চীনের উহান প্রদেশ থেকে শুরু হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প করোনাভাইরাসকে ‘চীনা ভাইরাস’ বলে আখ্যা দিয়ে চীনের বিরুদ্ধে জনমত তৈরির চেষ্টা চালান। চীনারাও এই ভাইরাসের উৎপত্তি যুক্তরাষ্ট্রের ল্যাবরেটরিতে হয়েছে বলে দাবি করতে থাকে। দুই দেশের মাঝে চলমান ‘বাণিজ্য যুদ্ধের’ মাঝে এই দ্বন্দ্ব আরো অস্থিরতার জন্ম দেয়।

মহামারিতে লাখো মানুষের মৃত্যুর মাঝে ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলোতে শুরু হয় মুনাফাবৃত্তির প্রতিযোগিতা। ভ্যাকসিন ডেভেলপ করার ক্ষেত্রে এই প্রতিযোগিতা আরো গতিশীল হয়; বিশেষ করে রাশিয়া ও চীন ভ্যাকসিন তৈরিতে মনোনিবেশ করার পর থেকে। যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, কানাডা ও আরো কয়েকটি দেশ নিজেদের জনসংখ্যার বহুগুণ ভ্যাকসিন অর্ডার করার ফলে এ নিয়ে আসন্ন ভূরাজনৈতিক প্রতিযোগিতার আভাস পাওয়া যায়। তদুপরি আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহনে ভ্যাকসিন নেয়া বাধ্যমূলক করার প্রচেষ্টা শুরু হওয়ায় এই প্রতিযোগিতা ২০২১ সালে বাজে দিকে মোড় নিতে যাচ্ছে।

মহামারির মাঝেই ফ্রান্সে ইসলামবিদ্বেষী ভূমিকা নেয়া এক শিক্ষক হত্যাকে কেন্দ্র করে বিশ্বব্যাপী মুসলিমদের মাঝে ফ্রান্সবিরোধী আবেগ দৃশ্যমান হয়। এতে বেশিরভাগ মুসলিমপ্রধান দেশের সরকার ফ্রান্সের বিরুদ্ধে কথা না বললেও তা মুসলিম বিশ্বের অতি সংবেদনশীল জায়গাটিকে দেখিয়ে দেয়। ইউরোপের লিবারেল আদর্শিক অবস্থানের বিরুদ্ধে মুসলিম বিশ্বের জনগণের এই অবস্থান ২০২১ সালের সম্ভাব্য আদর্শিক সংঘাতের দিকেই ইঙ্গিত দেয়।

দক্ষিণ চীন সাগর

করোনাভাইরাস মহামারির মাঝে ভূরাজনৈতিক প্রতিযোগিতা আরো গতিশীল হয়েছে। ভাইরাস সংক্রমণে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে মার্কিন যুদ্ধজাহাজগুলো অকার্যকর হয়ে যাওয়ার সময় দক্ষিণ চীন সাগরে চীনারা শক্তি প্রদর্শন করে। এতে পূর্ব এশিয়াতে স্বল্প সময়ের জন্য মার্কিন অবস্থান প্রশ্নবিদ্ধ হয়। হংকংয়ে চীনা সরকারের কঠোর নীতির ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের হস্তক্ষেপের কারণেও থেকে থেকে উত্তেজনা চলে। 

ভারত মহাসাগর

হিমালয়ের পাদদেশে লাদাখ অঞ্চলে সীমান্ত বিরোধ নিয়ে ভারত ও চীনের মাঝে চলে ব্যাপক উত্তেজনা। যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহকৃত অস্ত্র ও ভারতের তৈরি সীমান্ত অবকাঠামো আকসাই চীন অঞ্চলে চীনা অবস্থানের ওপর হুমকি তৈরি করলে বহু দশকে প্রথমবারের মতো চীনারা তাদের স্থল সীমানা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে ওঠে। এই উত্তেজনার ফলে চীনারা তাদের সীমান্তে নতুন করে অবকাঠামো তৈরি শুরু করেছে, যা এখানকার সামরিক ব্যালান্সকে চ্যালেঞ্জ করবে ও উত্তেজনাকে ২০২১ সালে টেনে নিয়ে যাবে। হিমালয়ের ইস্যুতে ভারত তার প্রতিবেশী কোনো দেশ থেকেই সমর্থন না পাওয়ায় ভারতের জন্য এমন এক চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে, যা ভারতের ভৌগোলিক অখণ্ডতাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করছে। 

ভূমধ্যসাগর ও লোহিত সাগর 

২০২০ সালে ভূমধ্যসাগর ও লোহিত সাগর অঞ্চলে এশিয়া ও ইউরোপের মাঝে গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্রপথের ওপর ভূরাজনৈতিক প্রতিযোগিতা ছিল সবচেয়ে বেশি। ভূমধ্যসাগরে তুরস্কের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টার কারণে ফ্রান্স, গ্রিস, মিসর ও অন্যান্য দেশের সাথে থেকে থেকে বিবাদে জড়িয়েছে তুরস্ক। লিবিয়ার গৃহযুদ্ধে তুরস্কের হস্তক্ষেপের পর যুদ্ধের মোড় ঘুরে যায় ও হাফতার বাহিনী জয়ের দ্বারপ্রান্ত থেকে পিছু হটতে বাধ্য হয়। এতে ত্রিপোলিতে তুরস্কের একটা সামরিক অবস্থান নিশ্চিত হয়, যা ফ্রান্স হুমকি মনে করে।

হাফতার বাহিনীর পক্ষে মিসরীয়রা সরাসরি হস্তক্ষেপের হুমকি দিলেও শেষ পর্যন্ত দুই পক্ষের আলোচনায় যুদ্ধবিরতি স্বাক্ষরিত হয়। উল্টো মিসর নীল নদের ওপর ইথিওপিয়ার তৈরি বাঁধ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। ইথিওপিয়া বাঁধের কাজ শেষ পর্যায়ে নিয়ে এলে মিসর ও সুদানের সাথে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। তবে সেই উত্তেজনাও অন্যদিকে ধাবিত হয় যখন ইথিওপিয়ার সরকার জাতিগত তিগ্রে অঞ্চলে সামরিক অভিযান শুরু করে। গৃহযুদ্ধের আশঙ্কায় ইথিওপিয়াতে আঞ্চলিক শক্তিগুলোর হস্তক্ষেপ ছাড়াও কৌশলগত বাব এল মান্ডেব প্রণালি সংলগ্ন লোহিত সাগর ও পুরো ‘হর্ন অব অফ্রিকা’ অঞ্চলে অস্থিরতার সম্ভাবনা দেখা দেয়। বছরের শেষের দিকে সোমালিয়া থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার শুরু হলে অত্র অঞ্চলের অস্থিরতা আরো বেড়ে যায়।

ইউরেশিয়া

ককেশাসে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার মাঝে নাগোর্নো কারাবাখ নিয়ে শুরু হয় যুদ্ধ। তুর্কি সহায়তায় ও রুশ নিরপেক্ষতায় আজারিরা বড় জয় ঘরে তুলে নেয়। এই যুদ্ধ ককেশাসে তুর্কি অবস্থানকে শক্তিশালী করেছে ও মধ্য এশিয়াতে তুরস্কের নতুন করে অবস্থানের ভিত তৈরি করেছে। এই যুদ্ধ ড্রোন ব্যবহারের ক্ষেত্রে নতুন এক উদাহরণ সৃষ্টি করেছে, যা ২০২১ সালের সম্ভাব্য সংঘাতগুলোকে প্রভাবিত করবে। 

অপরদিকে মধ্য এশিয়ার দেশ কিরগিজস্তানে রাজনৈতিক পরিবর্তন চীনের উইঘুর সীমান্তে নতুন এক ভূরাজনৈতিক খেলার জন্ম দিতে যাচ্ছে। বেলারুশে ব্যাপক অস্থিরতা চললেও সেখানে রাজনৈতিক পরিবর্তন সংগঠিত হয়নি। আর ইউক্রেনের সাথে তুরস্কের সখ্য বৃদ্ধি পাওয়ায় ডনবাসে নতুন করে যুদ্ধ শুরুর সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। 

রাশিয়া ও তুরস্ক অর্থনৈতিকভাবে হাইড্রোকার্বন পাইপলাইনের জন্য একে অপরের ওপর নির্ভরশীল। রাশিয়া থেকে ‘এস-৪০০’ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ক্রয় করার কারণে যুক্তরাষ্ট্র বছর শেষে তুরস্কের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেও, তুর্কি-রুশ সম্পর্ক খুব শক্ত ভিতের ওপর প্রতিষ্ঠিত নয়। তুরস্কের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা রাশিয়ার স্বার্থের পরিপন্থী। লিবিয়া ও সিরিয়াতে রাশিয়া ও তুরস্ক বিপরীত পক্ষে রয়েছে। এ কারণেই ২০২১ সালে সিরিয়ার ইদলিবে নতুন করে যুদ্ধ শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

আটলান্টিকের ওপাড়ে

নির্বাচনের বছরে যুক্তরাষ্ট্র অনেকটাই ছিল নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত। করোনাভাইরাসের ব্যাপক সংক্রমণ নিয়ে হোয়াইট হাউসের সাথে লিবারেলদের বছরব্যাপী দ্বন্দ্ব ছিল চোখে পড়ার মতো। এর ওপর রাস্তায় শ্বেতাঙ্গ পুলিশের হাতে একজন কৃষ্ণাঙ্গের বিচার বহির্ভূত হত্যার পর পুরো যুক্তরাষ্ট্র কেঁপে ওঠে। মহামারির ভয়াবহতাকে উপেক্ষা করে রাস্তায় লাখো মানুষের সমাবেশ ছাড়াও বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা হয়। সারাবিশ্ব টেলিভিশনে সুপারপাওয়ার যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বর্ণবাদ-বিরোধী আন্দোলন প্রত্যক্ষ করে; যা ছিল ঐতিহাসিক।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ কলহের সর্বশেষ রূপ ছিল হাড্ডাহাড্ডি নির্বাচন ও ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ডেমোক্র্যাটদের বিরুদ্ধে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ। নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নির্বাচনে জিতলেও এক বিভক্ত রাষ্ট্রকে নেতৃত্ব দেয়ার কঠিন দায়িত্ব পান তিনি। একইসাথে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন আঞ্চলিক শক্তির আবির্ভাবে ‘গ্রেট পাওয়ার’ প্রতিযোগিতা যখন চরমে উঠেছে, তখন বাইডেন প্রশাসনের জন্য ২০২১ সাল যে বেশ চ্যালেঞ্জিং হবে, তা বলাই বাহুল্য।

মধ্যপ্রাচ্য 

মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ছিল আরব দেশগুলোর সাথে ইসরায়েলের প্রকাশ্য কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন। মার্কিন ট্রাম্প প্রশাসন এর সাফল্য দাবি করলেও, এটি প্রকৃতপক্ষে নতুন বৈশ্বিক বাস্তবতার ফলাফল। 

২০২০ সালটি শুরু হয়েছিল ইরাকের রাজধানী বাগদাদে ইরানের প্রভাবশালী সামরিক কর্মকর্তারা কাশেম সোলেইমানিকে মার্কিন প্রশাসন ড্রোন হামলায় হত্যা করে। আর বছর শেষ হয়েছে ইরানের অভ্যন্তরে দেশটির পারমাণবিক প্রকল্পের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি মোহসেন ফখরিজাদেহ হত্যার মাধ্যমে; যা ইসরায়েলের কাজ বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়াও সাইবার হামলায় ইরানের পারমাণবিক প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ সেন্টিফিউজের স্থাপনা ধ্বংস হয়। করোনাভাইরাসের সংক্রমণে নির্বাচন চালিয়ে নেয়ার প্রচেষ্টা, মহামারির ভয়াবহতা গোপনের চেষ্টা, অর্থনৈতিক দৈন্যদশায় রাস্তায় বিক্ষোভ, ভুলবশত ইউক্রেনের বেসামরিক বিমান ভূপাতিত করে অস্বীকার করা ও পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত পাল্টে ক্ষতিপূরণ প্রদান- ইত্যাদি ঘটনা ২০২০ সালে ইরানকে আরো দুর্বল করেছে। 

ইরান তার ওপর অর্থনৈতিক অবরোধ তুলে নেয়ার লক্ষ্যেই ফখরিজাদেহ হত্যার প্রতিশোধ নেয়া থেকে এখনো বিরত থেকেছে। তারা হয়তো আশা করছে- নতুন মার্কিন প্রশাসন ইরানের ওপর অবরোধ তুলে নিতে সচেষ্ট হবে। তবে বাইডেন প্রশাসনকে ট্রাম্প প্রশাসনের রেখে যাওয়া বাস্তবতাগুলো নিয়েই কাজ করতে হবে। অন্যদিকে, ইরাক ও সিরিয়াতে ইরানের অবস্থানকে তুর্কি ও সৌদি গ্রুপের প্রভাব বিস্তার থেকে রক্ষা করার জন্য তাদের পক্ষে রাশিয়া ছাড়া আর কেউই থাকছে না। বিশেষ করে ইসরায়েলের সাথে আরব দেশগুলোর সখ্য তৈরি হওয়ায় ২০২১ সালে ইরানের জন্য আঞ্চলিক প্রভাব ধরে রাখা কঠিন হবে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //