আফগান রাজনীতির পালাবদল

শান্তি কোন পথে?

আফগানিস্তানের রাজনীতির গতিপথ ফের উথাল-পাথাল হয়ে গেছে। গণতন্ত্র, আধুনিকতা, স্থিতিশীলতা, সমৃদ্ধি ও শান্তির দোহাই দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন যে বাহিনী দেশটিতে অবস্থান করছিল, তারা দৃশ্যত ব্যর্থ হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্যরা কাবুল ছাড়ার কয়েক দিনের মধ্যেই ফের তালেবানরা দেশের প্রায় সব এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। 

বলতে গেলে প্রায় বিনা বাধায় তারা দেশটির ৩৪টি প্রদেশের মধ্যে ৩৩টিতে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে। আশরাফ গানির নেতৃত্বাধীন সরকারের অনেকেই তালেবানদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে, কেউ কেউ দেশ ছেড়েছে। কার্যত শুধু ক্ষমতা বদলই নয়, গোটা আফগান রাষ্ট্রই আরেকবার বদলে দেওয়ার আয়োজন করছে তালেবানরা। এরই মধ্যে পতাকা নামিয়ে ফেলে নতুন পতাকা উড্ডয়ন করা হয়েছে, দেশের নাম ইসলামিক রিপাবলিক অব আফগানিস্তান থেকে ইসলামিক আমিরাত অব আফগানিস্তান বলা হচ্ছে। শাসন ব্যবস্থায় শরিয়া আইনের কথা জোরেশোরে বলা হচ্ছে। 

এ অবস্থায় বেশ কয়েকটি প্রশ্ন ভূরাজনীতির বিষয়ে আগ্রহী পাঠকের মনে উদয় হয়েছে এবং এসব প্রসঙ্গ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-পর্যালোচনা চলছে। ১. যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ন্যাটো বাহিনীর কাছ থেকে ২০ বছর প্রশিক্ষণ ও পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েও আফগানিস্তানের নিজস্ব সেনাবাহিনী, পুলিশ বাহিনী ও বিভিন্ন সংস্থা এক সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণ করল কেন? ২. তালেবান বাহিনী যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার বিপুল উৎসাহ, শক্তি ও রসদ কোথায় পেল? ৩. কীভাবে চলবে তালেবানদের নেতৃত্বাধীন নতুন আফগানিস্তান? 

প্রথমত, ২০০১ সালে ৯/১১ এর পর যুক্তরাষ্ট্রের বুশ প্রশাসন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের অংশ হিসেবে আফগানিস্তানে হামলা শুরু করেছিল। তারা আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছিল। সেই থেকে গত ২০ বছরে আফগানিস্তানে দুই মেয়াদে হামিদ কারজাই এবং আরও দুই মেয়াদে আশরাফ গানির নেতৃত্বাধীন সরকার ছিল। নতুন আফগানিস্তানের সংবিধান থেকে শুরু করে নানা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছিল। প্রত্যক্ষভাবে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো বাহিনীর সহযোগিতায় ৩ লাখ সৈন্যের সমন্বয়ে আফগান ন্যাশনাল আর্মি গড়ে তোলা হয়েছিল। ২০১৪ সাল থেকেই ব্যাপকভাবে আলোচনায় ছিল যে, যুক্তরাষ্ট্র শুধু প্রশিক্ষণ দেবে। নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব স্থানীয় আফগান বাহিনীকেই নিতে হবে; কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্যরা দেশ ছাড়ার এক সপ্তাহের মধ্যে সুসজ্জিত ও কথিত

সুপ্রশিক্ষিত এই বাহিনী রণে ভঙ্গ দিয়ে মাত্র ৮০ হাজার যোদ্ধার তালেবান বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে। অথচ এই বাহিনীর প্রশিক্ষণের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ৮৮ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি ব্যয় করেছে। আসলে চলতি বছরের জুনে বাইডেন সৈন্য প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়ার আগেই তালেবান বাহিনী ৪২০টি জেলার মাধ্যে ১২৭টির নিয়ন্ত্রণে নিয়েছিল। আর যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেকেই এটা জানত, এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হচ্ছিল যে, আফগান বাহিনীর অভ্যন্তরে ব্যাপক দুর্নীতি ও অপেশাদারিত্বের কারণে কার্যত তেমন একটা সক্ষমতা নেই। এ ছাড়া বিদেশি পৃষ্ঠাপোষকতায় গড়ে ওঠা আফগান বাহিনীর নৈতিক অবস্থাও দুর্বল ছিল। অনেকেই এখন এ আলোচনা করছেন যে, উন্নয়নের নামে যে অর্থ যুক্তরাষ্ট্র ব্যয় করেছে তার বৃহদাংশ নিরাপত্তার উদ্দেশ্যে সেনাবাহিনীর পেছনেই ব্যয় হয়েছে। অথচ আফগান সরকার ও প্রশাসনের পুনর্গঠনের জন্য ব্যয় হয়েছে মাত্র ৩৬ বিলিয়ন ডলার। এক্ষেত্রে অগ্রাধিকার নির্ধারণেই গলদ ছিল। 

তবে আফগান বাহিনীর বিনাযুদ্ধে আত্মসমর্পণের পেছনে আরেকটি কারণ লুকিয়ে আছে, যা অধিকাংশ পশ্চিমা গণমাধ্যম আলোচনায় আনছে না। সেটি হলো আফগানিস্তানের স্থানীয় উপজাতীয় সমঝোতার সংস্কৃতি। বলা হচ্ছে তালেবান বাহিনীর সঙ্গে বিভিন্ন অঞ্চলে আফগান বাহিনীর স্থানীয় পর্যায়ে উপজাতীয় নেতাদের মাধ্যমে সমঝোতা হয়েছে। আশরাফ গানির দেশত্যগ থেকে শুরু করে সবকিছুই হচ্ছে সেই সমঝোতার অংশ হিসেবে। দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই ও আশরাফ গানি সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারী আবদুল্লাহকে ফের তালেবান নেতৃত্বাধীন সরকার গঠন প্রক্রিয়ায় যুক্ত রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। মুজাহিদীন আমলের দেশটির এক সময়ের প্রধানমন্ত্রী ও ইসলামপন্থী ‘হিজবে ইসলামি’র নেতা গুলবুদ্দীন হেকমতিয়ার দোহায় এই দু’জনকে নতুন সরকার গঠনের আলোচনা যুক্ত হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। 

উল্লেখ্য, ১৯৯০ দশকে এই হেকমতিয়ারের সংগঠন হিজবে ইসলামী অনেকটা জামায়াতে ইসলামী ও ইখওয়ানুল মুসলিমীনের আদলে গড়ে ওঠা দল। অন্যদিকে তালেবান হচ্ছে, দেওবন্দি ভাবধারার। ফলে এদের মধ্যে চিন্তা ও দৃষ্টিভঙ্গিগত বিরোধ ছিল বরাবরই; কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে এই ধরনের বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে নানা সমঝোতাও হয়েছে অনেক সময়। মজার ব্যাপার হলো, হেকমতিয়ারের নেতৃত্বাধীন হিজবে ইসলামী যুক্তরাষ্ট্রের দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে সশস্ত্রভাবে বিভিন্ন সময়ে হামলা চালিয়ে যাচ্ছিল। আবার এদেরই একটি অংশ ২০১৪ সালের নির্বাচনে অংশ নিয়ে আশরাফ গানি সরকারের মন্ত্রিপরিষদে অংশ নিয়েছিল। ফলে হিজবে ইসলামীর পক্ষে সরকার ও তালেবানের মধ্যে অপ্রাতিষ্ঠানিকভাবে নানা সমঝোতার উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব হয়েছে। সরকারের মধ্যে থাকা অংশই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতা করে গুলবুদ্দীন হেকমতিয়ারসহ প্রায় ৫০০ হিজবে ইসলামীর নেতাকে মুক্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে এবং হেকমতিয়ারের বাহিনীকে সশস্ত্র হামলা প্রত্যাহার করে দেশগঠনের অংশ নেওয়ার দিকে নিয়ে আসে। 

আফগান রাজনীতিতে সমঝোতার আরও বড় উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে ২০১৪ সালের নির্বাচন-পরবর্তী ঘটনা থেকে। সেখানে আশরাফ গানি ও আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ প্রায় সমানসংখ্যক ভোট পেয়েছিলেন। ফলে সরকার ব্যবস্থায় প্রেসিডেন্টের পাশাপাশি ও সিইএ নামে আরেকটি পদ সৃষ্টি করে ক্ষমতার ভারসাম্য স্থাপন করা হয়েছিল। এটাকে সে সময় আফগান গণতন্ত্রের সৌন্দর্য বলেও ব্যাখ্যা করা হয়েছিল। আফগান রাজনীতির এসব বৈশিষ্ট্য থেকেও বোঝা যায়, কিসের বলে তালেবানরা ফের ক্ষমতায় ফিরে আসতে পেরেছে। এসব ছিল আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির কথা। এর পাশাপাশি আন্তর্জাতিকভাবে বেশ কিছু নতুন মেরুকরণ এক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রেখেছে। 

বরাবরই আফগানিস্তান ছিল বড় শক্তিগুলোর প্রতিযোগিতার কেন্দ্রবিন্দু। এ জন্য অনেক ইতিহাসবিদ এই ভূখণ্ডকে হার্টল্যান্ড বলেও আখ্যায়িত করেছেন। ১৮ শতকের আফগান কেন্দ্রিক ভূরাজনীতিকে ‘গ্রেটগেম’ বলেও আলোচনা করা হয়েছে। বর্তমান বাস্তবতায় এ কথা অত্যুক্তি হবে না যে, সেই গ্রেটগেম এখনো অব্যাহত আছে। ভূ-বেষ্টিত তথা সমূদ্রসীমাবিহীন হওয়ায় আফগানিস্তানের যেমন প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখা আবশ্যক, তেমনিভাবে অনেক প্রতিবেশী দেশেরও ভৌগোলিক কারণে আফগানিস্তানের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। পাকিস্তান, ইরান, চীন, রাশিয়া, উজবেকিস্তান ও তাজিকিস্তান প্রভৃতি দেশের সঙ্গে রয়েছে দেশটির ভূসীমা। কাজেই দেশটির ভূ-রাজনীতিও হচ্ছে বহুমুখী। এছাড়া নিকটতম প্রতিবেশী হিসেবে ভারত সেখানে ব্যাপক সক্রিয় রয়েছে পাকিস্তান ও চীনের প্রভাব বলয়কে সীমিত করতে। তাছাড়া আফগানিস্তানের বিপুল খনিজসম্পদের সম্ভাবনা অনেক প্রযুক্তি সমৃদ্ধ দেশের জন্য বাড়তি আগ্রহের কারণ। এসব ভূরাজনৈতিক বাস্তবতাকে মাথায় রেখে বর্তমান তালেবানদের উত্থানকে আলোচনা করলে দেখা যায়, এই উত্থানে আপাতভাবে সবচেয়ে বেশি সুবিধায় রয়েছে পাকিস্তান, চীন ও রাশিয়া। আর যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র হিসেবে গণতন্ত্র, উন্নয়ন, সমৃদ্ধি ও সংস্কারের এজেন্ডা নিয়ে সেখানে ভারত গত ২০ বছরে যে বিনিয়োগ করেছে, তার পুরোটাই এখন হাতছাড়া হয়ে গেছে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, আফগানিস্তানের সংস্কারের জন্য ভারত প্রায় ৪০০ প্রকল্পে ৩ বিলিয়ন ডলারের মতো বিনিয়োগ করেছে। তাছাড়া আফগানিস্তান থেকে মধ্য এশিয়ায় যোগাযোগ স্থাপনের জন্য ইরানের চাবাহার বন্দরটিও আধুনিকায়ন করেছে ভারত, যা পাকিস্তানের গওয়াধার বন্দরে চীনের বিনিয়োগের প্রতিক্রিয়া হিসেবে করা হয়েছে। বস্তুত এসব বিনিয়োগই এখন হুমকির মুখে। কেননা ভারতের কূটনৈতিক ও সামরিক মাধ্যমে বরাবরই তালেবানদেরকে পাকিস্তানের মদদপুষ্ট বলে বিবেচনা করা হতো এবং তালেবানের সঙ্গে সমঝোতার তেমন কোনো পথ খোলা রাখা হয়নি। পরবর্তী পরিস্থিতিতে ভারতের মধ্যেই অনেক বিশ্লেষক এখন বলছেন তালেবানদের সঙ্গে আলোচনার সুযোগ রাখা প্রয়োজন। দৃশ্যত যুক্তরাষ্ট্র পিছু হটার পর আফগানিস্তানে এখন পর্যন্ত মনে করা হচ্ছে ভারতই সবচেয়ে অনিরাপদ অবস্থানে রয়েছে। 

কেননা, বিনিয়োগ ও নিয়ন্ত্রণ হারানোর পাশাপাশি তালেবানদের উত্থানে উৎসাহিত হয়ে কাশ্মীরে নতুন করে সশস্ত্র সংগ্রাম পুনরুজ্জীবিত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে। তালেবানদের সঙ্গে ভারতের সমঝোতার সুযোগ কমার আরেকটি কারণ হলো, ভারত বরাবরই আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় জোটকে অগ্রাধিকার দিয়ে আসছে। এবারও আহমদ শাহ মাসউদের পুত্র আহমদ মাসুদ এবং গানি সরকারের ভাইস- প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহ কাবুলের উত্তর দিকে অবস্থিত পাঞ্জশীর ভ্যালিতে প্রতিরোধের ডাক দিয়েছেন, যারা কিছুতেই সমঝোতায় আসবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন। 

প্রায় ১ লাখ জনসংখ্যা বিশিষ্ট ওই এলাকা এখনো তালেবানদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে রয়েছে। এবারও হয়তো পরিস্থিতির চাপে ভারত প্রকাশ্যে তালেবানের সঙ্গে আলোচনায় গেলেও নেপথ্যে উত্তরাঞ্চলীয় জোটকে সহায়তা করতে চাইবে। ফলে আফগান ভূ-রাজনীতিতে ভারতের অবস্থান কেমন হয়, তা নিয়ে সংশয় অব্যাহত থাকছে। এ দিকে পাকিস্তানের জন্যও দুর্ভাবনার বিষয় হিসেবে রয়ে যাচ্ছে ডুরাল্ড লাইন তথা পাক-আফগান সীমান্ত বিরোধ। যেহেতু নতুন আফগান সরকারে তালেবান ছাড়াও অন্যান্য পক্ষের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে আলোচনা চলছে, কাজেই নতুন সরকার যে সহজেই সীমান্ত ইস্যুতে পাকিস্তানের প্রস্তাব মেনে নেবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। আর তেমনটি হলে তালেবান সরকারের সঙ্গে পাকিস্তানের বিরোধ অব্যাহত থাকতে পারে। 

ভূ-রাজনীতি ও বিদেশি স্বার্থের আলোচনা বারবারই সামনে আসছে। তবে আলোচনা শেষ করার আগে আবারও স্থানীয় আফগান রাজনীতির প্রসঙ্গই পুনরাবৃত্তি করা প্রয়োজন। ১৬ আগস্টে কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা (যিনি এই লেখকের এক সময়ের সহপাঠী) মোনা হোসেইনির সঙ্গে যোগাযোগে জানা গেছে, ‘কাবুলে অবস্থানরত আফগান নাগরিকরা, বিশেষ করে বিগত সময়ে শিক্ষা-দীক্ষায় এগিয়ে আসা ও কর্মব্যস্ত নারীরা নতুন পরিস্থিতিতে খুবই অনিরাপদ বোধ করছেন। ওই শিক্ষিকা নিজেই বলেছেন যে, যে কোনো মুহূর্তে দেশ থেকে অন্যত্র চলে যাওয়ার চেষ্টা করছেন তিনি’। 

এ থেকে স্পষ্ট হয়েছে যে, তালেবানদেরকে স্থানীয় মধ্যবিত্ত শ্রেণি আস্থায় আনতে পারছেন না। এ ছাড়া ব্যক্তি স্বাধীনতা ও নারীর অধিকারের মতো প্রসঙ্গগুলো ব্যাপক আলোচনায় আসছে। এ অবস্থায় তালেবান ও নতুন সরকারের প্রতিনিধিদের জন্য সবার অংশগ্রহণ ও অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। শরীয়া আইনের আদলে নতুন রাষ্ট্র গড়ে তোলার সঙ্গে সঙ্গে কীভাবে সেই বৈচিত্র্য নিশ্চিত করে সেটাই দেখার বিষয়। স্মরণ রাখা দরকার, তালেবানদের সিংহভাগই হচ্ছে পশতুন জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধি, যারা সমগ্র আফগান জনগণের ৪৫ শতাংশ। 

এ ছাড়া হাজারা, তাজিক, উজবেকসহ আরও অন্তত ৫-৬টি জাতিগোষ্ঠী রয়েছে, যারা বিভিন্ন অঞ্চলের বড় অংশের নিয়ন্ত্রণ করছে। এ সব গোষ্ঠীর অংশগ্রহণ যেমন পশ্চিমা মডেলের গণতন্ত্রে সম্ভব নয়, তেমনিভাবে তালেবানদের চাপিয়ে দেওয়া কোনো ব্যবস্থায়ও সম্ভব নয়। এর সমাধান রয়েছে স্থানীয় রাজনৈতিক সংস্কৃতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার মধ্যেই। সেটা নিশ্চিত করতে সক্ষম না হলে দেশটিতে ফের গৃহযুদ্ধ অনিবার্য।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //