দেশের বাইরে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করবে না চীন

চীন অন্য কোনো দেশে কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে। জলবায়ুর পরিবর্তন মোকাবিলায় চীনের এই সিদ্ধান্ত অনেক গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ভাষণ দেয়ার সময় এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

চীন ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’ নামের বিশাল অবকাঠামো প্রকল্পের আওতায় ইন্দোনেশিয়া ও ভিয়েতনামের মতো দেশগুলোতে কয়লা প্রকল্পে বিপুল পরিমাণ অর্থ সহায়তা দিয়ে আসছিল।

জলবায়ুর পরিবর্তন রোধে করা আন্তর্জাতিক প্যারিস চুক্তির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য এই অর্থায়ন বন্ধ করতে চীনের ওপর চাপ ক্রমশই বাড়ছিল।

‘পরিবেশের ক্ষতি করে না এবং অল্প পরিমাণে কার্বন নির্গত হয়- এ ধরনের জ্বালানির ব্যাপারে চীন অন্য উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সাহায্য করবে এবং অন্য কোনো দেশে কয়লাভিত্তিক নতুন কোনোবিদ্যুৎ কেন্দ্রও নির্মাণ করবে না,’ জাতিসঙ্ঘের বার্ষিক অধিবেশনে ভিডিওতে রেকর্ড করা ভাষণে একথা বলেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।

এ বিষয়ে এর বাইরে বিস্তারিত আর কিছু বলা হয়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে যে চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের আওতায় উন্নয়নশীল অনেক দেশে যেসব কয়লাভিত্তিক প্রকল্প নির্মাণ করা হচ্ছিল, বেইজিংয়ের এই সিদ্ধান্তের ফলে সেগুলো সীমিত হয়ে পড়বে।

বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ প্রকল্পের আওতায় চীন বিভিন্ন দেশকে রেল, সড়ক, বন্দর ও কয়লাভিত্তিক প্রকল্পের অবকাঠামো নির্মাণের জন্য অর্থ সহায়তা দিয়ে আসছিল। এসব দেশের মধ্যে অনেকগুলোই উন্নয়নশীল দেশ।

এ বছরের প্রথম ছয় মাসে চীন কোনো কয়লাভিত্তিক প্রকল্পে অর্থ সহযোগিতা দেয়নি যা গত কয়েক বছরের মধ্যে বিরল ঘটনা।

চীন বিশ্বের এক নম্বর পরিবেশ দূষণকারী দেশ। পৃথিবীতে যেসব দেশ সবচেয়ে বেশি গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গত করে তাদের শীর্ষে রয়েছে চীন। নিজেদের দেশের জ্বালানি চাহিদা মেটানোর জন্য তারা কয়লার উপর ব্যাপক নির্ভরশীল। চীন ২০৬০ সালের মধ্যে কার্বন নির্গমনের মাত্রা শূন্যে নামিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের জলবায়ু বিষয়ক দূত জন কেরি বিদেশে কয়লাভিত্তিক প্রকল্পে অর্থ যোগান না দেয়ার ব্যাপারে চীনের নতুন এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট শি এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে এটা জেনে আমরা খুব খুশি।’

আগামী মাসে স্কটল্যান্ডে জাতিসংঘের উদ্যোগে জলবায়ুর পরিবর্তন মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক যে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে তার প্রধানও চীনের এই সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছেন। অলোক শর্মা টুইটারে বলেন, ‘আমি প্রেসিডেন্ট শিয়ের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। আমার চীন সফরের সময় যেসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে তার মধ্যে এটা একটা মুখ্য বিষয়।’ -বিবিসি 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //