করোনার ওমিক্রন-ডেল্টা সুনামির আশঙ্কা, বিপর্যস্ত হতে পারে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা

করোনাভাইরাসের অতিসংক্রামক দুই ধরন ওমিক্রন ও ডেল্টার ‘সুনামি’তে ভেঙে পড়তে পারে বিশ্বের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। এমনই আশঙ্কা করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। 

ডব্লিউএইচও’র মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস সতর্ক করে বলেছেন, ডেল্টার চেয়ে দ্রুত সংক্রমিত হচ্ছে ওমিক্রন। বিভিন্ন দেশে ওমিক্রনের কারণে পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হচ্ছে। আর এই বিপুল সংক্রমণ ভয়ঙ্কর চাপ সৃষ্টি করছে, স্বাস্থ্যকর্মীদের বিপর্যস্ত করে ফেলছে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার দশা তৈরি হচ্ছে।

করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন এতটাই অতিসংক্রামক যে আপাতত এটি বিশ্বের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ওমিক্রনের কারণে ব্রিটেন, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র রীতিমতো ত্রস্ত।

গতকাল বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) তেদ্রোস আধানম হুঁশিয়ার করে বলছেন, আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন যে ওমিক্রন আরও বেশি সংক্রামক হয়ে উঠছে। ডেল্টার যে সময়ে বৃদ্ধি হয়েছিল তেমনই এক সুনামির দিকে এগিয়ে চলেছে গোটা বিশ্ব। এর ফলে স্বাস্থ্যকর্মীরা ক্লান্ত হয়ে পড়ছে। ভেঙে পড়ছে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, বাড়ছে চাপ। করোনার দুই ধরনের কারণে বিশ্বব্যাপী মৃত্যুও বেড়েছে অনেকটাই।

তিনি আরও বলেন, নতুন কোভিড রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে বিপুল সংখ্যক স্বাস্থ্যকর্মীর করোনায় অসুস্থ হয়ে পড়া স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর চাপ সৃষ্টির অন্যতম কারণ। যারা টিকা নেননি তাদের সংক্রমণের পাশাপাশি মৃত্যুর ঝুঁকিও অনেক বেশি।

ডব্লিউএইচও’র বক্তব্য, ডেল্টা ধরন এখনও চলে যায়নি। তারই মধ্যে ওমিক্রন চলে আসায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। দুইটি ভাইরাস একত্রে ছড়িয়ে পড়ছে। করোনার সুনামি আসতে চলেছে।

মাত্র এক মাস সময়ের মধ্যে বিশ্বের বহু দেশে প্রাধান্য বিস্তার করা ওমিক্রন ধরনটি আগের ভ্যারিয়েন্ট ডেল্টার চেয়ে কম গুরুতর অসুস্থতার ঝুঁকি তৈরি করে বলে প্রাথমিক গবেষণায় তথ্য এসেছে। কিন্তু দুই ডোজ টিকা এ ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দিতে পারছে না বলে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে বিদ্যুৎগতিতে, যা দিয়ে উদ্বিগ্ন বিশেষজ্ঞ ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৯৪টি সদস্য দেশের মধ্যে ৯২টিই ২০২১ সালের মধ্যে তাদের মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশকে কোভিড টিকার আওতায় আনার লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। সে কারণে আগামী জুলাই মাসের আগেই জনসংখ্যার ৭০ শতাংশকে টিকার আওতায় আনতে নতুন বছরের শুরুতে নতুন করে অঙ্গীকার নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ড. তেদ্রোস। 

তিনি বলেন, ধনী দেশগুলোর এই করোনার টিকার বুস্টার ডোজ কর্মসূচি শেষ পর্যন্ত মহামারিকে দীর্ঘায়িতই করবে। কারণ, তাদের তৃতীয় ডোজ যোগাতে গিয়ে গরিব দেশগুলো টিকাবঞ্চিত থেকে যাবে, যেখানে টিকাদানের হার এমনিতেই কম। ফলে সেসব দেশে আরও বেশি ছড়ানোর এবং নতুন নতুন মিউট্যান্ট তৈরি করার সুযোগ পাবে ভাইরাস। 

ধনী দেশগুলো তাদের নাগরিকদের কোভিড টিকার তৃতীয় ডোজ দিচ্ছে বুস্টার হিসেবে। যুক্তরাজ্য ইতিমধ্যে তাদের ১২ বছরের বেশি বয়সী নাগরিকদের ৫৭ শতাংশকে তৃতীয় ডোজ দিয়ে ফেলেছে। -বিবিসি  

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //