গাঁজায় ফুসফুসের বেশি ক্ষতি ধূমপানের তুলনায়

গাঁজা সেবন করলে তামাকের তুলনায় ফুসফুস এবং শ্বাসনালীতে বেশি ক্ষতি হতে পারে। কানাডার অটোয়া ইউনিভার্সিটি এবং অটোয়া হাসপাতালের পরিচালিত একটি গবেষণায় এমন তথ্য জানা গেছে।

২০০৫ সাল থেকে ২০২০ সালের মধ্যে নিয়মিত ৫৬ জন গাঁজা সেবনকারী, ৫৭ জন অধূমপায়ী এবং ৩৩ জন সাধারণ ধূমপায়ীর বুকের এক্স-রে স্ক্যান করে মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) এ গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করেছে অটোয়া ইউনিভার্সিটি এবং অটোয়া হাসপাতাল।

হৃদরোগের পেছনে অন্যতম বড় কারণ হওয়া সত্ত্বেও বিশ্বব্যাপী ধূমপায়ীর সংখ্যা দিনদিন বেড়েই চলেছে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে গাঁজা সেবনকারীর সংখ্যাও। তবে সাম্প্রতিক এক গবেষণার ফলাফলের কথা জানলে ফুসফুসের স্বাস্থ্যের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে গাঁজা সেবন সম্পর্কে নতুন করে ভাবতে পারেন সেবনকারীরা।

গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের বুকের এক্স-রে স্ক্যান করে প্রাপ্ত ফলাফলে দেখা যায়, তামাক ধূমপায়ী এবং অধূমপায়ীদের তুলনায় নিয়মিত গাঁজা সেবনকারীদের মধ্যে শ্বাসনালীতে প্রদাহ এবং এম্ফিসেমা নামের দীর্ঘস্থায়ী ফুসফুসের রোগের প্রবণতা বেশি দেখা গেছে। যদিও মাদকদ্রব্যগুলোর সেবনের প্রক্রিয়ার ধরনের কারণে বিষয়টি অনেকাংশে নির্ভরশীল বলে ধারণা করছেন গবেষকরা।

অটোয়া হাসপাতালের রেডিওলজিস্ট গিসেল রেভাহ বলেন, “অনেকেই গাঁজা সেবনকে ধূমপানের তুলনায় নিরাপদ বলে মনে করেন। ফলে দিন দিন গাঁজা সেবনকারীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। কিন্তু এই গবেষণা স্পষ্টভাবে জানাচ্ছে, মানুষের এই ধারণা সঠিক না।”

তিনি বলেন, “তামাক সেবন বা ধূমপানের ক্ষেত্রে ফিল্টার ব্যবহার করা হলেও সাধারণত গাঁজা সেবন করা হয় ফিল্টার ছাড়াই। ফিল্টার ছাড়া যখন আপনি গাঁজা সেবন করবেন, তখন সেটির কণা এবং ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশগুলো আপনার শ্বাসনালীতে পৌঁছায়। পরে শ্বাসনালীতে জমা হয়ে সেগুলো প্রদাহ সৃষ্টি করে।”

এছাড়া, গাঁজা সেবনের সময়ে ব্যবহারকারীদের বড় পাফের মাধ্যমে ফুসফুসে বেশিক্ষণ ধোঁয়া ধরে রাখাকেও শ্বাসনালীতে প্রদাহ সৃষ্টির পেছনে বড় কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন অটোয়া হাসপাতালের রেডিওলজিস্ট গিসেল রেভাহ।

তবে এ গবেষণার ফলাফলকে এখনও সর্বস্বীকৃতি দিতে নারাজ অটোয়া ইউনিভার্সিটি এবং অটোয়া হাসপাতাল। কারণ, গবেষণায় অংশগ্রহণকারী গাঁজা সেবনকারীদের মধ্যে অনেকেই নিয়মিত তামাক সেবন করেছিলেন। কাজেই শ্বাসনালীতে প্রদাহ এবং এম্ফিসেমা নামের দীর্ঘস্থায়ী ফুসফুসের রোগের পেছনে এটিও বড় ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করেন গবেষকরা। তাই গবেষণার ফলাফলের যথার্থতা নিশ্চিতে আরও অধ্যয়ন প্রয়োজন।

২০১৮ সালে কানাডায় গাঁজার বিনোদনমূলক ব্যবহারকে বৈধতা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্র, উরুগুয়ে এবং মেক্সিকোসহ গুটিকয়েক দেশে গাঁজার বিনোদনমূলক ব্যবহার বৈধ এবং প্রচলিত রয়েছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //