যুদ্ধাপরাধের দায়ে দোষী সাব্যস্ত সেই নাৎসি টাইপিস্ট

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সাড়ে ১০ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে নাৎসিদের একটি বন্দিশিবিরের কমান্ডারের একজন সহকারীকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। জার্মানির উত্তরাঞ্চলের ইৎজেহোর শহরের একটি আদালত তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে।

আজ মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ কথা জানিয়েছে বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কমান্ডারের সহকারী হিসেবে কাজ করা ইর্মগার্ড ফুর্চনার নামের ওই টাইপিস্টের বর্তমান বয়স ৯৭ বছর। কিশোরী বয়সে টাইপিস্ট হিসেবে তিনি স্টুথফের বন্দিশিবিরে কাজ করেছিলেন। ১৯৪৩ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত সেখানে কর্মরত ছিলেন তিনি।

গত কয়েক দশক ধরে নাৎসি বাহিনীর সাথে জড়িতদের যুদ্ধাপরাধের যে বিচার চলেছে এমন অল্প কয়েকজন নারীর একজন ফুর্চনার। নাৎসিদের নারকীয় হত্যাযজ্ঞের বিচারে তাকে দুই বছরের স্থগিত কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, সেই সময় একজন বেসামরিক কর্মী হিসেবে কাজ করলেও বন্দিশিবিরে কী ঘটছে সে সম্পর্কে ফুর্চনার পুরোপুরি অবগত ছিলেন বলে বিচারকরা মতপ্রকাশ করেছেন।

স্টুথফের বন্দিশিবিরে প্রায় ৬৫ হাজার মানুষ ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে মারা গেছেন বলে ধারণা করা হয়। যাদের মধ্যে ইহুদি বন্দী, ইহুদি নন এমন পোলিশ নাগরিক ও ধরা পড়া সোভিয়েত সৈন্যরাও ছিলেন।

ফুর্চনারকে বন্দিশিবিরে ১০ হাজার ৫০৫ জনকে হত্যায় সহায়তা এবং অন্য পাঁচজনকে হত্যার চেষ্টায় জড়িত থাকার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। সেই সময় তার বয়স ১৮ বা ১৯ ছিল। এ কারণে একটি বিশেষ কিশোর আদালতে তার বিচার করা হয়েছে।

আধুনিক পোলিশ শহর গডানস্কের কাছে স্টুথফ বন্দিশিবিরের অবস্থান। সেখানে বন্দিদের হত্যা করার জন্য বিভিন্ন ধরনের পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছিল। ১৯৪৪ সালের জুনে এই বন্দিশিবিরে হাজার হাজার মানুষকে গ্যাস চেম্বারে আটকে হত্যা করা হয়েছিল।

জার্মানির উত্তরাঞ্চলের ইৎজেহোর একটি আদালতে ইর্মগার্ড ফুর্চনারের বিচার করা হয়েছে। বন্দিশিবির থেকে বেঁচে যাওয়া কয়েকজন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। যাদের মধ্যে কয়েকজন বিচার চলাকালীন মারা যান।

গত বছরের সেপ্টেম্বরে ফুর্চনারের বিচার শুরু হয়েছিল। বিচার শুরুর পরপরই জার্মানির এক বৃদ্ধাশ্রম থেকে পালিয়ে যান তিনি। পরে হামবুর্গের একটি রাস্তা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

স্টুথফ বন্দিশিবিরের কমান্ডার পল-ওয়ার্নার হোপকে ১৯৫৫ সালে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। কারাগারে যাওয়ার পাঁচ বছর পর তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।

সূত্র: বিবিসি।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //