যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়া বিশ্বের এই চার ক্ষমতাধর দেশ মিয়ানমারের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এদিকে মিয়ানমারের জান্তা সরকার জরুরি অবস্থা আরও ছয় মাস বাড়িয়েছে এবং সামরিক শাসনের মেয়াদ আরও বাড়িয়েছে।
গতকাল বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাষ্ট্রীয় টিভিতে দেশটির ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট মিন্ত সোয়ে নেতাদের এক বৈঠকে জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়ানোর ঘোষণা দেন। এদিন বিক্ষোভকারীরা নীরব ধর্মঘট পালন করেছেন।
ক্ষমতাধর চার দেশ মিয়ানমারের নির্বাচন কমিশন, খনি কোম্পানি, জ্বালানি কর্মকর্তা ও আরও কিছু প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির ওপর এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে চার পশ্চিমা দেশ।
যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব বিভাগের এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এই প্রথম মিয়ানমার অয়েল অ্যান্ড গ্যাস এন্টারপ্রাইজ (এমওজিই)-এর কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এমওজিই মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় তেল ও গ্যাস কোম্পানি। এই প্রতিষ্ঠান মিয়ানমারের সবচেয়ে বড় রাজস্ব আয়ের উৎস। কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সহব্যবস্থাপনা পরিচালকের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।’
কানাডা মিয়ানমারের ছয়জন কর্মকর্তা ও বিমানে ব্যবহৃত জ্বালানি রপ্তানি, বিক্রি ও সরবরাহের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। অস্ট্রেলিয়া সামরিক সদস্য ও সেনাবাহিনী পরিচালিত কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। যুক্তরাজ্য দুটি কোম্পানি ও দুই ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, যারা মিয়ানমারের বিমানবাহিনীর জ্বালানি সরবরাহের সঙ্গে জড়িত।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নোবেলজয়ী নেতা অং সান সুচির নেতৃত্বাধীন গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাবাহিনী।
মিয়ানমারে জরুরি অবস্থা জারি করে সামরিক জান্তা সরকার। এ বছর জানুয়ারিতেই জরুরি অবস্থা শেষ হওয়ার কথা ছিল। দেশটির সংবিধান অনুযায়ী, এরপরই নির্বাচন অনুষ্ঠান করা নিয়ম।
সামরিক জান্তা সরকার এর আগে এ বছর আগস্টে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। নির্বাচনে অংশ নিতে যোগ্য হতে রাজনৈতিক দলগুলোকে কঠোর শর্তও বেঁধে দেয় তারা। কিন্তু নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেনি।
দুবছর আগে মিয়ানমারে অভ্যুত্থানের পর থেকেই বিশৃঙ্খলা চলছে। সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করছেন বিক্ষোভকারীরা। রক্তক্ষয়ী আন্দোলন, সংঘাত, অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভ চলছেই। বিক্ষোভে ব্যাপক দমন-পীড়ন চালানো হচ্ছে।
গঠিত হয়েছে জান্তাবিরোধী সরকার এবং প্রতিরোধ বাহিনী। এর মধ্যেই জান্তা সরকারের ওপর নতুন করে এসব আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলো।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2023 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh