খাবার ও চিকিৎসার অভাবে গাজায় ইসরায়েলি জিম্মির মৃত্যু

খাবার ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসার অভাবে গাজায় এক ইসরায়েলি জিম্মির মৃত্যু হয়েছে বলে ঘোষণা দিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। গতকাল শনিবার (২৩ মার্চ) টেলিগ্রামে ওই জিম্মির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে হামাসের সশস্ত্র শাখা আল–কাসাম। 

টেলিগ্রাম বার্তায় গোষ্ঠীটি বলে, ‘আমরা ওষুধ ও খাদ্যের অভাবে ইহুদিবাদী বন্দী ইয়েজিভ বুখাত্তাফের (৩৪) মৃত্যুর ঘোষণা দিচ্ছি। আমরা আগেই সতর্ক করেছিলাম যে শত্রুপক্ষের বন্দীরা আমাদের মানুষদের মতো একই পরিস্থিতিতে ভুগছে; ক্ষুধা, বঞ্চনা, খাদ্য ও ওষুধের অভাব। এখন এই অসুস্থতা তাদের অনেকের জীবনকে হুমকির মুখে ফেলেছে।’ 

তুরস্কের সংবাদমাধ্যম আনাদলুর প্রতিবেদন অনুসারে, আল-কাসামের প্রকাশিত ছোট এক ভিডিওতে ইসরায়েলি জিম্মিকে নিজের নাম বলতে শোনা যায়। 

ভিডিওর বিষয়ে আল–কাসাম বলে, ‘গাজার জনগণ অবরোধ এবং খাদ্য ও ওষুধের ঘাটতিতে যা ভোগ করছে, আপনার বন্দীরাও তা ভোগ করবে (ইসরায়েল ও বন্দীদের পরিবারকে উদ্দেশ্য করে)। তিনি ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর হামলা থেকে বেঁচে গেলেও খাবার ও ওষুধের সংকট থেকে রক্ষা পাননি।’ 

গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত আল-কাসামের এই বিবৃতির কোনো জবাব দেয়নি ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। 

মিসর, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির জন্য একটি নতুন চুক্তিতে পৌঁছাতে পরোক্ষ সব আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে। এই চুক্তির মধ্যে বন্দিবিনিময়ও রয়েছে। কাতার, মিসর ও আমেরিকার মধ্যস্থতায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এক সপ্তাহ স্থায়ী হয়েছিল। এই চুক্তির মধ্যে লড়াই বন্ধ রাখা, বন্দিবিনিময় এবং গাজায় অত্যন্ত সীমিত পরিসরে ত্রাণ প্রবেশ অন্তর্ভুক্ত ছিল। 

গত ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে আকস্মিক হামলা চালানোর পর থেকে গাজা উপত্যকায় ভয়াবহ সামরিক অভিযান চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। হামাসের ওই হামলায় ইসরায়েলের ১ হাজার ২০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। ইসরায়েলের পাল্টা হামলায় ৩২ হাজার ১০০-এরও বেশি ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে আরও ৭২ হাজার ৪০০ জন। 

গাজা উপত্যকা অবরোধ করে রাখায় দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে উত্তর গাজার কয়েক লাখ বাসিন্দা। ইসরায়েলের যুদ্ধে গাজার ৮৫ শতাংশ মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এছাড়া খাবার, ওষুধ ও খাওয়ার পানির তীব্র সংকটে ভুগছে গাজার বাসিন্দারা। জাতিসংঘ বলছে, উপত্যকার ৬০ শতাংশ অবকাঠামোই ক্ষতিগ্রস্ত এবং ধ্বংস হয়ে গেছে। 

আন্তর্জাতিক আদালতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গাজায় গণহত্যা চালানোর অভিযোগ রয়েছে। গত জানুয়ারিতে অন্তরীণ এক রায়ে তেল আবিবকে গাজায় গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ রেখে বেসামরিক নাগরিকদের মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //