ভারতে রেল দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৫

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে রেল দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ জনে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহতের সংখ্যা ৬০। ইতোমধ্যে পশিমবঙ্গ ও কেন্দ্রীয় সরকারের দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী উদ্ধারকাজে গ্যাস কাটার ব্যবহার করছে। অর্থাৎ ট্রেনের বগি কেটে যাত্রীদের বের করার চেষ্টা চালাচ্ছে।

পশ্চিমবঙ্গে  রেল দুর্ঘটনায় আর্থিক ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নিহতদের পরিবার পিছু ২ লক্ষ টাকা এবং আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে তার দপ্তর।

এর আগে আজ সোমবার (১৭ জুন) শিয়ালদহের দিকে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ট্রেন। একটি মালবাহী ট্রেনের ধাক্কায় কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের পেছন দিকের কয়েকটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে হতাহতের এ ঘটনা ঘটে।

এ দিন সকালে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন (এনজেপি) থেকে শিয়ালদহের উদ্দেশে রওনা করে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। ট্রেনটি স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ রাঙাপানি স্টেশনের কাছে এলে পেছন থেকে সজোরে ধাক্কা দেয় মালবাহী ট্রেনটি। এ সময় ট্রেনের তিনটি বগি লাইনচ্যুত হয়, দুমড়ে মুচড়ে উল্টে যায় একটি। আরেকটি বগি উঠে যায় মালবাহী ইঞ্জিনের ওপরে।

ভারতে বর্তমানে ঈদের ছুটি চলছে। এই মুহূর্তে বহু বাংলাদেশি কলকাতায় অবস্থান করছেন। এ সময় কলকাতা হয়ে বহু বাংলাদেশি দার্জিলিং বেড়াতে যান। মূলত, দার্জিলিং ভ্রমণের জন্য অনেক পর্যটক কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ট্রেন ব্যবহার করেন। ফলে ভারতীয়দের সঙ্গে কোনো বাংলাদেশি দুর্ঘটনার কবলে পড়েছেন কি না, সেদিকে নজর রয়েছে কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের।

কলকাতা উপহাইকমিশন জানিয়েছে, প্রতি মুহূর্তেই ভারতীয় রেলের সঙ্গে বাংলাদেশ মিশন যোগাযোগ রেখে চলেছে।

ভয়াবহ এ দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নারেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাচ্ছেন ভারতের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। বিকেলের দিকে রওনা দেবেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য সরকারের তরফে মালদা স্টেশনে হেল্পলাইন চালু করা হয়েছে।

দিল্লি থেকে রেল বোর্ডের সিইও জয়া ভার্মা সিনহা জানিয়েছেন, সিগন্যালিং ব্যবস্থা ঠিক ছিল। পণ্যবাহী ট্রেন চালকের ভুলেই এত বড় দুর্ঘটনা, প্রাথমিকভাবে এমনটাই অনুমান করা হচ্ছে। তবে পুরোটাই তদন্তসাপেক্ষ বলেও জানান তিনি।

এ রেল দুর্ঘটনা নিয়ে সোমবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে জয়া ভার্মা জানান, আপাতত দ্রুত উদ্ধারকাজ চালানো এবং ওই লাইনে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করাই রেলের প্রাথমিক লক্ষ্য। এরপরেই ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করা হবে।  

তবে ঘটনাটি ‘হিউম্যান এরর’ বলেই আখ্যায়িত করেছেন ভারতের রেলমন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে যা জানা যাচ্ছে, লাইনে সিগন্যাল ঠিক ছিল। কিন্তু চালক সম্ভবত সিগন্যাল মানেননি। এর ফলেই এই দুর্ঘটনা ঘটে। তবে এখনই নিশ্চিত করে দুর্ঘটনার কারণ বলা সম্ভব নয়। ইতোমধ্যে দুর্ঘটনায় মালবাহী গাড়ির চালক ও একজন কর্মী প্রাণ হারিয়েছেন। একই ভাবে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের পেছন যে গার্ড ছিলেন তারও মুত্যু হয়েছে।

জানা যায়, একই লাইনের প্রথমদিকে ছিল কলকাতাগামী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। ঠিক তার পেছন নির্দিষ্ট দূরত্বে ছিল মালবাহী ট্রেনটি। দূরত্ব বজায় রাখার জন্যই মালবাহী ট্রেনটিকে রেড সিগন্যাল দেখানো হয়েছিল। কোনোভাবে সেই সিগন্যাল চালকের নজর এড়িয়ে যায় এবং সজোরে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের পেছনে ধাক্কা মারে মালবাহী ট্রেনটি। রেল সূত্রে জানা গেছে, কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ১৫০০ যাত্রী নিয়ে কলকাতার উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল।

সূত্র : এনডিটিভি

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //