দোয়া কবুলের উপযুক্ত সময়

দোয়া ও প্রার্থনা ইবাদতের মূল। কোরআনে মানুষকে আল্লাহর দরবারে বেশি বেশি দোয়া ও প্রার্থনার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। দৈনন্দিন জীবনের ছোট ছোট প্রয়োজনেও যেন মানুষ আল্লাহমুখী হয়, সে শিক্ষাই দিয়েছেন মহানবী (সা.)। 

সাধারণভাবে যেকোনো সময় দোয়া করা যায়। কেননা আল্লাহ তাআলা সময় নির্ধারণ না করেই বলেছেন, ‘আমাকে ডাকো, আমি সাড়া দেব।’(সুরা :আল গাফির, আয়াত : ৬০)

তবে একাধিক হাদিস থেকে বোঝা যায়, দিন ও রাতের কিছু বিশেষ সময় দোয়া কবুল করা হয়। এর কয়েকটি রমজান মাসের সঙ্গেও বিশেষায়িত। নিম্নে দোয়া কবুলের সময়গুলো তুলে ধরা হলো:

রাতের শেষ ভাগ

হজরত আমর ইবনে আবাসা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘রাতের শেষ ভাগে মহান প্রভু আল্লাহ বান্দার সবচেয়ে নিকটবর্তী হন। সুতরাং তুমি এই সময় আল্লাহর স্মরণ করতে পারলে তা করো।’ (বুখারি, হাদিস : ১১৪৫)

সিজদা

রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘সিজদারত বান্দা আল্লাহর সবচেয়ে নিকটবর্তী। সুতরাং সে সময় বেশি বেশি দোয়া করো।’ (মুসলিম, হাদিস : ৪৮২)

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘সিজদায় তোমরা বেশি বেশি দোয়া করো। চেষ্টা করো যেন তোমাদের সাড়া দেওয়া হয়।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৮৭৬)

আল্লাহর স্মরণে রাত্রী জাগরণের পর

হজরত মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে মুসলিম আল্লাহর জিকির বা স্মরণের সঙ্গে রাত্রী জাগরণ করবে এবং দুনিয়া-আখিরাতের কোনো কল্যাণ চাইবে, তা তাকে দেওয়া হবে।’ (মুসনাদে আহমাদ)

আজানের সময়

হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যখন মুয়াজ্জিন আজান দেয়, আসমানের দুয়ার খুলে যায় ও দোয়া কবুল হয়।’ (মাজমাউয যাওয়ায়েদ, হাদিস : ১৮৮৪)

আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়

হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময় দোয়া কবুল হয়। সুতরাং তোমরা দোয়া করো।’ (মেশকাত, হাদিস : ৬৭১)

ইকামত, সৈন্য সমাবেশ ও বৃষ্টির সময়

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা দোয়া কবুলের সুযোগ সন্ধান করো সৈন্য সমাবেশ, নামাজের ইকামত ও বৃষ্টি বর্ষণের সময়।’ (বায়হাকি)

শুক্রবার দিনের শেষ মুহূর্তে

হজরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘জুমার দিনের ১২টি মুহূর্ত। তার একটি মুহূর্ত এমন, যখন কোনো মুসলিম কিছু চাইলে আল্লাহ তা তাকে দান করেন। তোমরা আসরের পরের শেষ মুহূর্তে তা অনুসন্ধান করো।’ (বুখারি, হাদিস : ৬০৩৭)

কারো অনুপস্থিতিতে দোয়া

হজরত ইমরান বিন হোসাইন (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘এক ভাইয়ের অনুপস্থিতিতে অপর ভাইয়ের দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না।’ (বাজ্জার)

রোজাদার, মুসাফির ও সন্তানের জন্য পিতার দোয়া

মহানবী (সা.) বলেন, ‘তিন ব্যক্তির দোয়া ফিরিয়ে দেয়া হয় না। সন্তানের জন্য পিতার দোয়া, রোজাদারের দোয়া ও মুসাফিরের দোয়া।’ (বায়হাকি ৩/৩৪৫)

ফলাফলের জন্য তাড়াহুড়া না করলে

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের প্রত্যেকের দোয়া কবুল করা হয়, যদি না সে (তা কবুলের জন্য) তাড়াহুড়া করে এবং বলতে থাকে, আমার দোয়া কবুল হলো না।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৩৪০)

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //